Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জঙ্গিদের ড্রোন হামলায় আগুন সৌদি-তেলভাণ্ডারে

গত চার বছর ধরে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইরান সমর্থিত হুথি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়ছে ইয়েমেন সরকার।

ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
দুবাই শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:০৩
Share: Save:

ড্রোন হামলা চালিয়ে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘আরামকো’-র একটি তেলের খনি ও বিশ্বের সব চেয়ে বড় তেল শোধনাগার কেন্দ্রে আগুন লাগিয়ে দিল ইয়েমেনের হুথি জঙ্গিরা। ইরান সমর্থিত এই জঙ্গি সংগঠনটি জানিয়েছে, হামলার জন্য ১০টি ড্রোন ব্যবহার করেছিল তারা। এর আগেও সৌদিকে নিশানা করে এই ধরনের হামলা চালিয়েছিল হুথিরা। এ বার সংগঠনের এক মুখপাত্র বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, শনিবারের হামলাটি সৌদির অভ্যন্তরে হুথি বাহিনীর সবচেয়ে বড় অভিযান। যা সম্ভব হয়েছে ‘দেশের মানুষদের সহযোগিতায়’।

আজ সৌদির অভ্যন্তরীণ মন্ত্রীও জানিয়েছেন, ‘ড্রোন হামলার’ ফলে ভোর ৪টে নাগাদ আগুন লাগে আবকাইক ও খুরাইস এই দুই কেন্দ্রে। সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আরামকোর বাণিজ্যিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। হামলায় কেউ হতাহত হয়েছে কি না জানা যায়নি।

আরামকো জানিয়েছে, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগার’ আবকাইক কেন্দ্র থেকে পরিশোধিত তেল পারস্য উপসাগর ও লোহিত সাগরের বিভিন্ন বন্দরের মাধ্যমে সারা বিশ্বে পাড়ি দেয়। প্রতি দিন গড়ে প্রায় ৭০ লক্ষ ব্যারেল তেল পরিশোধন করে এই কেন্দ্র। এর আগেও ২০০৬ সালে এটিকে নিশানা করেছিল আল কায়দার আত্মঘাতী জঙ্গিরা। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। খুরাইস খনিটি থেকে প্রতি দিন গড়ে ১০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল তোলা হয়। আরামকো-র মতে, এই খনিতে মজুত রয়েছে অন্তত দু’হাজার কোটি ব্যারল তেল।

গত চার বছর ধরে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইরান সমর্থিত হুথি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়ছে ইয়েমেন সরকার। সৌদি বাহিনীকে সামরিক সহায়তা করে আমেরিকাও। ২০১৫ সালে দেশের পশ্চিমের বেশিরভাগ অংশ দখল করে নেয় হুথিরা। রাজধানী সানা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি। বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ। যার জন্য সৌদি জোটের বিমানহানাকেই দায়ী করেছে হুথিরা। ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি জোটের হস্তক্ষেপের পর থেকেই ড্রোন ব্যবহার শুরু করে হুথি জঙ্গিরা। প্রথম দিকে সেগুলি তত উন্নত না হলেও রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা বা আরব দেশগুলির দাবি, পরের দিকে ইরানের মডেলের আদলে ড্রোন ব্যবহার শুরু করে হুথিরা। যদিও হুথিদের অস্ত্র সরবরাহ করার কথা বরাবরই অস্বীকার করেছে তেহরান।

গত মে-তেও সৌদি আরবের একটি তেলের পাইপলাইনে ড্রোন হামলা করেছিল হুথিরা। অগস্টে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ও সৌদি সীমান্তের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তেলের খনিতে ড্রোন ছুড়েছিল জঙ্গিরা। মার্কিন তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, হুথিদের ব্যবহৃত নতুন অত্যাধুনিক ইউএভি-এক্স ড্রোন ১৫০০ কিলোমিটার অতিক্রম করতে সক্ষম। অর্থাৎ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এ বার সহজেই তাদের নাগালে চলে এল। আজ সংগঠনটির এক সামরিক মুখপাত্রের কথায়, ‘‘সৌদি জোট আগ্রাসন বন্ধ না করলে তাদের স্বার্থে আরও বড় ঘা পড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Yemen Saudi Arabia Terrorism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE