Advertisement
০৭ অক্টোবর ২০২৪
Durga Puja 2022

আগমনীর সুর সুইডেনের এই শহরেও

২০১৮-এ প্রথম সর্বজনীন দুর্গাপুজো করা হয় গথেনবার্গে। দু’দিন ধরে ৫০০ লোক, যা আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি। সব কিছুই নিখুঁত ভাবে হয়েছিল।

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সোমদেব মজুমদার
গথেনবার্গ শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৪৫
Share: Save:

২০১৭-র শেষের দিকে। কনকনে শীত। একদিন আমরা ১৬ জন, সুইডেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গথেনবার্গে বসে আলোচনা করছিলাম দুর্গাপুজো নিয়ে। এমনিতে নববর্ষ, ২২শে শ্রাবণ, ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতিকে আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করি। কিন্তু বাঙালির প্রাণের পুজো, দুর্গাপুজো নিয়ে কিছুই করতে পারিনি, সব জল্পনা কল্পনাতেই রয়ে গিয়েছিল।

কিন্তু সে দিন আমরা সকলেই যেন জেগে উঠেছিলাম, এ বার কিছু একটা করতেই হবে। ফোনে ৩০ মিনিটের আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হল, আমরা পুজো করবই, সে যে ভাবেই হোক।

এক নিমেষে সবাই যে যার দায়িত্ব নিয়ে নিল। ঠিক করে নেওয়া হল, কে কী ভাবে সাহায্য করবে। নাচ, গান- সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খাওয়া-দাওয়া, মূর্তি অর্ডার দেওয়া, হিসাব-পত্র করা, কাজ কী আর একটা। কিন্তু সব কিছুই বেশ দ্রুত করে ফেলতে পারলাম আমরা। এর আগে আমরা নিজেরাই কোনও দিন ভাবিনি, এত দ্রুত দুর্গাপুজোর আয়োজন করে ফেলব।

২০১৮-এ প্রথম সর্বজনীন দুর্গাপুজো করা হয় গথেনবার্গে। দু’দিন ধরে ৫০০ লোক, যা আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি। সব কিছুই নিখুঁত ভাবে হয়েছিল। পরিকল্পনা থাকলেই শুধু হয় না, তাকে বাস্তবায়ন করাটাও জরুরি। তাই বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য, স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা ও প্রচেষ্টার কথা। ওঁদের সাহায্য ছাড়া আমাদের সব আয়োজন বৃথা হয়ে যেত। গথেনবার্গে এর আগে এত বড় মাপের অনুষ্ঠান কখনও হয়নি। পুজো উপলক্ষে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকেরা কাছাকাছি আসায় এক অনন্য পরিবেশ তৈরি হয়। তামিল, তেলুগু, গুজরাতি, পঞ্জাবি, অনেক সম্প্রদায়ের মানুষ এসেছিলেন। ছিলেন সুইডিশ বন্ধুরাও।

২০১৯-এ আগের পুজোর ভুলভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে আবার কিছু নতুন করার প্রচেষ্টা। সে বারও এল সাফল্য। আটশোর বেশি লোক হল সে বার। কিন্তু ২০২০তে করোনা অতিমারি এসে আমাদের সব উদ্যমে জল ঢেলে দিল। এমনিতে সুইডেনে লকডাউন কোনও দিন না হলেও ৫০ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। সহ-নাগরিকদের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে আমরাও ঠিক করলাম, সে বছর মণ্ডপে কোনও আয়োজন করা হবে না। সব ধরনের উদ্‌যাপন অনলাইনে হবে।

২০২১-এ আর পুজোই করা গেল না। সেই বছরের শেষের দিকে আমরা আবার ঠিক করলাম, পরের বছর পুজো করতেই হবে। এ বার আমাদের সদস্য অনেক বেশি। তাই প্রথম থেকেই কোমর বেঁধে নেমে পড়া হয়েছে। আমাদের পুজো সপ্তাহান্তে, ১ ও ২ অক্টোবর। এখন ভাদ্র মাস, শরৎকালের শুরু। মায়ের আগমনী ধ্বনি বেজে উঠেছে দেশে-দেশান্তরে, আর সব বাঙালির মতো আমরাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি, আশ্বিন মাসের, যখন সবাই মিলে বলে উঠব, ‘বলো দুগ্গা মাইকি, জয়’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2022 Sweden
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE