হংকংয়ে একটিই দুর্গাপুজো। সেই ১৯৯৯ থেকে শুরু করে আজ ২৭ বছর ধরে হয়ে আসছে। ফলে পুজোর ক’টা দিন, অনেকটা ‘অল রোড লিডস টু রোম’-এর ধাঁচে হংকংয়ের বাঙালিদের একটিই গন্তব্যস্থল। বাঙালি ছাড়াও, হংকংয়ে বসবাসকারী ভারতের অন্যান্য প্রদেশের, এমনকি পড়শি দেশ নেপাল ও বাংলাদেশের মানুষও নিয়মিত প্রতিমা দর্শন করে যান। পুজো হচ্ছে ‘ইন্ডিয়ান রিক্রিয়েশন ক্লাব’(আইআরসি)-তে। পুজোর কদিন আইআরসি-র আশপাশের রাস্তায় চিনাদের মাঝে শাড়ি-পাঞ্জাবি পরে সাজগোজ করে হাঁটতে থাকা বাঙালিদের দেখতে বেশ মজা লাগে।
পুজো হয় ক্লাবঘরে, তবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় ক্লাবের প্রাঙ্গণে, সুবিশাল তাঁবুর নীচে। আরতি, অঞ্জলি, ঢাকের বাদ্য, দু’বেলা কয়েকশো লোকের খাওয়াদাওয়া, বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের বাৎসরিক পুস্তিকা প্রকাশ, সব মিলিয়ে পাঁচটা দিন হইহই করেই কেটে যায়। সব কাজ সদস্যরাই করেন। মূল পুজোর আয়োজনকারী মহিলা ভলান্টিয়াররা তাঁদের দলের নাম রেখেছেন ‘দশভুজা’। সকাল-বিকেল পরিবার সামলে, পুজোর কাজ নিপুণ ভাবে সম্পন্ন করে, তাঁরা যেন সত্যিই দশভুজা হয়ে ওঠেন !
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বাৎসরিক পুস্তিকার কাজ আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। দু’ক্ষেত্রেই নতুন কিছু করার প্রচেষ্টা থাকে। পৃথিবী জুড়ে ক্রমবর্ধমান অশান্তির প্রেক্ষিতে, বিশ্বশান্তির বার্তা নিয়ে অনুষ্ঠানও থাকছে। পুস্তিকার জন্য জমা পড়েছে অনেক লেখা ও ছবি। সমানতালে অংশগ্রহণ করছে কচিকাঁচারাও।
হংকংয়ে এ বছর একটু বেশিই বৃষ্টিপাত হয়েছে। বেশ কয়েক বার ‘ব্ল্যাক রেন’ ও টাইফুনের জন্য স্কুল-অফিস বন্ধ হয়েছে গত তিন মাসে। আরও টাইফুনের আশঙ্কা আছে বছর শেষের আগে। তাই এখানকার কয়েকশো বাঙালির রোজ সকালে উঠে এখন একটাই প্রার্থনা— পুজোর ক’টা দিন যেন বৃষ্টি না হয়!
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)