ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধারকাজ চলছে তুরস্কে। ছবি: রয়টার্স।
দিশাহারা হয়ে এক বার এ দিক, এক বার ও দিক ছোটাছুটি করছিলেন কেভসার। সামনে এক উদ্ধারকারী দলকে দেখেই তাঁর কাতর আর্তি, “এক বার ক্রেনটা নিয়ে চলুন না! ওরা যে মরে যাবে।” কিন্তু সেই দলটি নাকি সটান জানিয়ে দিয়েছিল, ও দিকটার দায়িত্বে তারা নেই। আরও একটি দলের দিকে এগোতে তারাও একই কথা জানিয়ে দিয়েছিল কেভসারকে।
যত সময় গড়াচ্ছিল, কেভসারের হৃদ্স্পন্দন আরও দ্রুত বাড়ছিল। আরও একটি উদ্ধারকারী দলের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে গিয়ে কাতর স্বরে তিনি বলেন, “একটা ক্রেনের ব্যবস্থা করে দিন। কংক্রিটের চাঁইগুলি তোলার ব্যবস্থা করুন। আর সময় নেই।” কিন্তু বার বার একই কথা শুনে ক্লান্ত হয়ে শেষমেশ হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেছিলেন কেভসার। আর চিৎকার করে একই কথা আউড়ে যাচ্ছিলেন তিনি, “ওরা মরে যাবে।”
তুরস্কের আন্তাকায়া শহরের বাসিন্দা কেভসার। এই শহরের একটি বহুতলে থাকতেন কেভসার এবং তাঁর পরিবার। ভূমিকম্পের কারণে এই শহরের বহু বাড়ি ভেঙে তার নীচে চাপা পড়ে গিয়েছিলেন বহু মানুষ। তাঁদের মধ্যেই ছিল কেভসারের দুই ছেলে। ভূমিকম্পের পরে প্রায় ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছিল। কেভসারের দাবি, কোনও উদ্ধারকারী দলের দেখা মিলছিল না। যদিও দেখা পাওয়া গিয়েছিল, এই দল বলে ওটা আমাদের এলাকা নয়, ওই দল এটা আমাদের এলাকা নয়। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “আমি প্রত্যেকের কাছে আমার ছেলেদের প্রাণভিক্ষা চাইছিলাম। তাঁদের বার বার অনুরোধ করেছিলাম একটা ক্রেনের ব্যবস্থা করে কংক্রিটের চাঙড়গুলি তোলা হোক। প্রত্যেকেই বলল, তারা এই দায়িত্বে নেই। খুঁজে পেলাম না ঠিক কে বা কারা এই দায়িত্বে ছিলেন।”
তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ইতিমধ্যেই ৩৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই কম্পনকে এই শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ানক প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy