Advertisement
E-Paper

‘আমেরিকা দেউলিয়া হয়ে যাবে, বাতিল করুন ট্রাম্পের সুন্দর বিল’! দেশবাসীকে ডাক মাস্কের, ডনের সঙ্গে বিরোধ কি আরও বাড়ল

হোয়াইট হাউস জানিয়ে দিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর সিদ্ধান্ত বদল করবেন না। ইলন মাস্কের এই ধরনের কথায় তাঁর মত বদলাবে না।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৫ ১১:৪৮
(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইলন মাস্ক (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইলন মাস্ক (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইলন মাস্কের দূরত্ব ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এ বার তা আরও প্রকট হয়ে উঠল। ট্রাম্পের ব্যয় সংক্রান্ত বিল ‘বাতিল’ করার জন্য আমেরিকার সাধারণ নাগরিককেই ডাক দিলেন টেসলা কর্তা মাস্ক। তাঁদের আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই বিল বাতিল করানোর কথা বললেন তিনি।

ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে দ্বিতীয় বার ফেরার পর থেকে তাঁর প্রায় ‘ছায়াসঙ্গী’ হিসাবে দেখা যাচ্ছিল মাস্ককে। কিন্তু সেই সময় বদলেছে। ট্রাম্পের এই ব্যয় সংক্রান্ত বিল নিয়ে প্রথম থেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মাস্ক। ট্রাম্প যেখানে বিলটিকে ‘বড় সুন্দর’ বলে ব্যাখ্যা করে চলেছেন, তখন মাস্কের দাবি, এই বিল আইনে পরিণত হলে আমেরিকার দেনা বৃদ্ধি পাবে। বৃহস্পতিবার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে সংস্থার কর্তা নিজেই লেখেন, ‘‘নিজের সেনেটরকে বলুন, কংগ্রেস সদস্যদের বলুন, আমেরিকাকে দেউলিয়া করে তোলা ঠিক নয়! বিলটা বাতিল করুন।’’ এর পরে আরও একটি পোস্ট দিয়ে বিলটিকে ‘ঋণের দাসত্ব’ করার বিল বলেছেন মাস্ক। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমেরিকার ইতিহাসে এই বিল সর্বাধিক ঋণ বৃদ্ধি করবে। এটা আসলে ঋণের দাসত্বের বিল।’’

ট্রাম্প যখন নিজে এই বিলের হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন, তখন মাস্কের এ হেন সমালোচনা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে। টেসলা কর্তা সরাসরি ট্রাম্পের সমালোচনা করেননি। বিলের বিরোধিতা করেছেন। ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত মাস্কের বিল নিয়ে এই বিরোধিতা করার সুযোগ নিচ্ছে বিরোধীরা। বিরোধী ডেমোক্র্যাটরাও সরব হয়েছে। প্রশাসনের একটি সূত্র মনে করছে, মাস্কের এই সমালোচনার কারণে সরকারের বিল পাশ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। হোয়াইট হাউসের আধিকারিকেরা ব্যক্তিগত পরিসরে মাস্কের এই সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, মাস্ক নিজের স্বার্থের জন্যই এ সব বলছেন। সূত্রের খবর, এই বিলে বৈদ্যুতিন গাড়ি উৎপাদন সংস্থাকে কর ছাড় দেওয়ার বিষয়টি প্রত্যাহার করা হয়েছে। মাস্কের টেসলা বিশ্বের অন্যতম বড় বৈদ্যুতিন গাড়ি উৎপাদন সংস্থা। সে কারণে তিনি সরকারের এই সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে এ সব প্রচার করছেন বলে জানিয়েছে প্রশাসনের একটি সূত্র।

মাস্ক যদিও এ সবে কান দিচ্ছেন না। আমেরিকার সরকারি দফতরের দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকেই তিনি ট্রাম্পের এই ব্যয় বিলের সমালোচনা করেছেন। একটি সাক্ষাৎকারে একে ‘হতাশাজনক’ বলেও জানিয়েছেন। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস যদিও জানিয়ে দিয়েছে, প্রেসিডেন্ট তাঁর সিদ্ধান্ত বদল করবেন না। প্রেসসচিব ক্যারোলিন লিভিট বলেন, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানেন এই বিলের ব্যাপারে ইলন মাস্কের অবস্থান কী। তাই এই ধরনের কথায় প্রেসিডেন্টের মত বদলাবে না। তিনি এই বিলের ব্যাপারে অটল।’’

আমেরিকার সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দফতর (ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বা ডিওজিই)-এর গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে ইস্তফা দেন মাস্ক। তার পরেই এই বিল নিয়ে সুর চড়াতে থাকেন তিনি। তাঁর দাবি, তিনি এবং তাঁর সহকারীরা ট্রাম্প প্রশাসনের অন্দরে থেকে এত দিন যে কাজ করে এসেছেন, সেগুলি ব্যর্থ হয়ে যাবে এই একটি বিলের কারণে। উল্লেখ্য, আমেরিকার সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দফতরের কাজই ছিল প্রশাসনের ‘অপ্রয়োজনীয় ব্যয়’ কাটছাঁট এবং অর্থনৈতিক সাশ্রয়। অনেকেই মনে করছেন, এই বিলের কারণেই সরকারি দায়িত্ব ছেড়েছেন তিনি।

কী রয়েছে ট্রাম্পের এই ‘বড় সুন্দর বিলে’? ১,১১৬ পাতার এই বিলে জোর দেওয়া হয়েছে কর কাঠামোর উপর। আমেরিকায় যাঁরা এইচ-১বি এবং গ্রিনকার্ড নিয়ে বসবাস করেন, তাঁরাই বেশি সমস্যায় পড়বেন। আমেরিকার নাগরিক নন, অথচ কর্ম বা ব্যবসা সূত্রে সেই দেশে থাকেন, তাঁরা নয়া কর কাঠামোর আওতায় পড়বেন। বিলে প্রস্তাব করা হয়েছে, মার্কিন নাগরিক নন, এমন ব্যক্তিরা যদি আমেরিকায় উপার্জিত টাকা নিজের দেশে পাঠাতে চান, তবে তার উপর পাঁচ শতাংশ কর চাপানো হবে। করের ব্যাপারে কোনও ছাড়সীমার কথা উল্লেখ করা হয়নি। অর্থাৎ যে কোনও পরিমাণ মূল্য পাঠালেই তাঁকে কর দিতে হবে! তবে কেউ যদি আমেরিকার নাগরিক হন, তবে তাঁর ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য হবে না।

Elon Musk Donald Trump
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy