Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Europe

টিকা রফতানি আটকাল ইইউ

কয়েক দিন ধরেই ইইউ অভিযোগ করছিল, তাদের ব্লকের অন্তর্ভূক্ত দেশগুলোকে যথেষ্ট পরিমাণ ভ্যাকসিন সরবরাহ করছে না ফাইজ়ার-বায়োএনটেক, অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা-র মতো প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো।

ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৫২
Share: Save:

আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। ‘ভ্যাকসিন-জাতীয়তাবাদের’ সেই আশঙ্কা সত্যি প্রমাণ করে তুঙ্গে উঠল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বনাম
টিকাপ্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির বিবাদ। কয়েক দিন ধরেই ইইউ অভিযোগ করছিল, তাদের ব্লকের অন্তর্ভূক্ত দেশগুলোকে যথেষ্ট পরিমাণ ভ্যাকসিন সরবরাহ করছে না ফাইজ়ার-বায়োএনটেক, অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা-র মতো প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো। ক্ষোভ প্রকাশ করেই থেমে থাকেনি তারা। সংস্থাগুলির ভ্যাকসিন রফতানি আটকে দিয়েছে ইইউ। এতে ক্ষতির মুখে অনন্ত একশোটি দেশ।
ইইউ-এর ঘোষণা— টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো তাদের সঙ্গে হওয়া চুক্তি মতো ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে না-পারলে, এই ব্লকের মধ্যে তৈরি হওয়া প্রতিষেধক বাইরে রফতানি করতে দেওয়া হবে না। তাদের কথায়, ‘‘আমাদের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষাই সবার আগে। যে প্রতিবন্ধকতার সামনে আমরা পড়েছি, তাতে এই পদক্ষেপ করা ছাড়া আর উপায় ছিল না।’’
ইইউ-এর ঘোষণায় ক্ষুব্ধ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। তাদের উপ-প্রধান মারিঅ্যাঞ্জেলা সিমাও বলেন, ‘‘খুবই উদ্বেগের বিষয়।’’ হু-প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস আগেই বলেছিলেন, ‘‘ভ্যাকসিন নিয়ে জাতীয়তাবাদ শুরু হলে এই পৃথিবীর সেরে ওঠা খুব কঠিন হবে।’’ ভ্যাকসিনের সমবণ্টন নিয়ে বারবারই জোর দিয়ে আসছে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও তার অন্তর্ভুক্ত সংস্থাগুলি। তাদের বক্তব্য, ‘‘প্রতিষেধক সরবরাহ নিয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখা না-হলে অতিমারির আগুন নিভবে না। বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা এ ভাবেই মুখ থুবড়ে পড়ে থাকবে। নৈতিক ব্যর্থতা তো রয়েইছে।’’

বিশ্বে করোনা
মৃত - ২২,২১,৭৯৯
আক্রান্ত - ১০,২৮,৫৩,০৫১
সুস্থ - ৭,৪৫,১৬,৯০০

অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা ব্রিটিশ-সুইডিশ সংস্থা। সুইডেন ইইউ-এর অন্তর্ভুক্ত দেশ। ও দিকে, ফাইজ়ার-বায়োএনটেক জুটির মধ্যে বায়োএনটেক জার্মান সংস্থা। তারাও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ। তা ছাড়া, বেলজিয়ামে তৈরি হচ্ছে প্রতিষেধকটি। সেখান থেকেই ব্রিটেনে পাঠানো হচ্ছে। তবে ভ্যাকসিন সরবরাহ নিয়ে বিবাদ মূলত অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার সঙ্গে। ইইউ-এর ‘দাদাগিরিতে’ ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া-সহ অন্তত একশোটি দেশ বিপাকে পড়বে। এর মধ্যে বেশ কিছু দরিদ্র দেশও রয়েছে। ইইউ-এর দাবি, এটি একটি সাময়িক পদক্ষেপ। রফতানিতে কোনও স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাপানো হচ্ছে না। কিন্তু সাময়িক হলেও, নতুন নিয়মে ইইউ-এর বাইরে ভ্যাকসিন পাঠাতে হলে, ব্লকের অনুমতি নিয়েই প্রতিষেধক পাঠাতে পারবে সংস্থাগুলি। ২৭ দেশের গোষ্ঠীর ছাড়পত্র ছাড়া কিছু হবে না।
সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে চাপে রয়েছে ইইউ। নতুন করে লকডাউন চান না ফরাসি প্রধানমন্ত্রী জ়ঁ কাস্তেক্স। তবে ইইউ-অন্তর্ভুক্ত দেশ ছাড়া অন্য কোনও দেশ থেকে ফ্রান্সে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। একমাত্র অতি প্রয়োজনীয় পরিস্থিতিতে নিয়ম শিথিল করা হতে পারে। ব্রিটেন যেহেতু এখন ইইউ সদস্য নয়, তাই এ দেশের ক্ষেত্রেও নিয়মটি কার্যকর হবে। তবে দু’দেশের মধ্যে পণ্য-পরিবহণ বন্ধ হবে না। এ ভাবে ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে নতুন স্ট্রেন সংক্রমণ আটকানো যাবে বলে আশাবাদী ফ্রান্স। ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। একই পদক্ষেপ করেছে চেক প্রজাতন্ত্র। পর্তুগাল দু’সপ্তাহের জন্য অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বেলজিয়াম ১ মার্চ পর্যন্ত বিদেশ সফর নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ব্যতিক্রম ইটালি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও সোমবার থেকে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কড়াকড়ি শিথিল করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Europe Coronavirus Corona Vaccination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE