Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
ট্রাম্প বিক্ষোভে ধৃত ৩৫০

যেন কিছু মনে কোরো না মেক্সিকো, বার্তা ফুটবলে

আগুন নেভানো যাচ্ছে না কিছুতেই! ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার তিন দিন পরেও পথে পথে অজস্র প্রতিবাদী। হাতে সেই পোস্টার— ‘ট্রাম্প ‘আমাদের প্রেসিডেন্ট নন।’ নিউ ইয়র্ক থেকে মায়ামি, আটলান্টা, সব রাস্তাতেই এক ছবি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধিতায় বিক্ষোভ মিছিল। শনিবার লস অ্যাঞ্জেলেসে। — রয়টার্স

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধিতায় বিক্ষোভ মিছিল। শনিবার লস অ্যাঞ্জেলেসে। — রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৪৯
Share: Save:

আগুন নেভানো যাচ্ছে না কিছুতেই!

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার তিন দিন পরেও পথে পথে অজস্র প্রতিবাদী। হাতে সেই পোস্টার— ‘ট্রাম্প ‘আমাদের প্রেসিডেন্ট নন।’ নিউ ইয়র্ক থেকে মায়ামি, আটলান্টা, সব রাস্তাতেই এক ছবি।

‘‘ট্রাম্প কী ভাবে আমাদের প্রেসিডেন্ট হবেন? উনি তো আমাদের সমাজের কাউকে পছন্দই করেন না। সবাই তো ওঁর চক্ষুশূল’’— প্রশ্নটা ছুড়ে দিয়ে মিছিলে পা মেলালেন বছর কুড়ির অ্যালেক্স হারিরি। জন্মসূত্রে তিনি পশ্চিম এশিয়ার। এবং সমকামী। তাই স্বাভাবিক ভাবেই ট্রাম্প-বিরোধী। একটি দৈনিক জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাড়ে তিনশোরও বেশি প্রতিবাদীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ জর্জিয়া স্টেট ক্যাপিটলের কাছে মার্কিন জাতীয় পতাকা পোড়ায় বিক্ষুব্ধ জনতা। পতাকা পোড়ানোর ঘটনাটাকে সমর্থন না করলেও মিছিলে পা মেলানো সঞ্জয় এবং আকশিতা বললেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের জন্য এবং আমাদের সন্তানদের জন্য মোটেই ভাল নয়। বড্ড অসহায় লাগছে... বড্ড অসহায়।’’

ওহায়োর কলম্বাস শহরে শুক্রবার ছিল বিশ্বকাপ ফুটবলের যোগ্যতা অর্জন পর্বে আমেরিকা বনাম মেক্সিকো ম্যাচ। ট্রাম্পের মেক্সিকো নীতির ছায়া পড়েছে সেখানেও। খেলাটা মেক্সিকো জেতে ২-১ গোলে। জয়সূচক গোল করে মেক্সিকান অধিনায়ক রাফা মার্কেজ বলেছেন, ‘‘এ এক অসহিষ্ণু সময়। আমেরিকায় যা ঘটেছে, এই জয়ের পর ওঁরা (মেক্সিকানরা) হয়তো সে সব কিছুটা ভুলতে পারবেন।’’ তবে ওই স্টেডিয়ামেই মেক্সিকানদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কুশল বিনিময় করতে দেখা গিয়েছে বহু মার্কিনকে। বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘ট্রাম্পের কথায় কিছু মনে কোরো না। আমরা দুঃখিত।’’

দেশজোড়া বিক্ষোভের বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার টুইট করেছিলেন ট্রাম্প। তবে শুক্রবারই সুর পাল্টে বলেন, এই বিক্ষোভের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকারই প্রয়োগ করছেন। ট্রাম্পের এক পরামর্শদাতা কার্ল প্যালাডিনো অবশ্য বিক্ষুব্ধদের ‘লক্ষ্যভ্রষ্ট’ বলেই মন্তব্য করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এঁরা কীসের প্রতিবাদ করছেন? এখানে তো ভিয়েতনামের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, যে যুদ্ধ হয়েছে আর সকলের সঙ্কটজনক অবস্থা! সত্যিই বুঝতে পারছি না বিক্ষোভটা কী নিয়ে!’’

প্রতিবাদীরা বলছেন, নির্বাচনের ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ট্রাম্পপন্থীরা তাঁদের কাজে-কর্মে জাতিবিদ্বেষের আবহ তৈরি করে ফেলেছেন। ফ্লোরিডার এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ওই এলাকারই দু’টি স্কুলে শিক্ষকতা করেন তাঁর দুই মুসলিম বন্ধু। অভিযোগ, ছাত্রদের হাতে হেনস্থা হতে হয়েছে তাঁদের। শুনতে হয়েছে, ‘‘আপনারা মুসলিম। বেরিয়ে যান।’’ রিপাবলিকানদের পতাকা লাগানো একটি ট্রাকের গায়ে মুসলিম-বিদ্বেষী কথা লেখা দেখে তৎক্ষণাৎ ট্রাকটার ভিডিও তুলে রেখেছিলেন ফ্লোরিডার আর এক বাসিন্দা জো গ্যাভিস। ফেসবুকে তা আপলোড করতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ‘ভিউয়ার’ সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। কমেন্ট বক্সে শুরু হয়ে যায় হিংসাত্মক কথাবার্তা। পরে ভিডিওটি সরিয়ে নেন জো।

কবে বদলে যাবে এই পরিস্থিতি? বা আদৌ পরিবর্তন হবে কি? ধন্দে আমেরিকাবাসী। যদিও নির্বাচনের পরে ঐক্যের বার্তাই দিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন, দীর্ঘ প্রচারপর্বে ট্রাম্পের ধারাবাহিক জাতিবিদ্বেষী প্রচার কি এত সহজে ভুলে যাওয়া সম্ভব?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mexico Donald Trump Presidential win
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE