সম্প্রতি ইরাকের ফালুজার দখল নিয়েছে ইরাকি সেনা। প্রায় আড়াই বছর এই শহর ইসলামিক স্টেট-এর (আইএস) দখলে ছিল। বেশ কয়েক মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে ফালুজার নিয়ন্ত্রণ পায় ইরাকি সেনা।
ফালুজার জয় ইরাকি সেনার মনোবল বাড়াতে সাহায্য করেছে। ইরাকে ক্রমেই আইএস নিয়ন্ত্রণ শিথিল হচ্ছে। সামনের লক্ষ্য মসুল শহর। ইরাকে মসুল শহরটি প্রথমে দখল নেয় আইএস। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, মসুলের আরও বেশি রক্তক্ষয়ের আশঙ্কা রয়েছে। ফালুজায় ইরাকি সেনা প্রবেশ করে যে চিত্র দেখেছে তাতে সেই আশঙ্কা আরও দৃঢ় হয়েছে।
গোটা ফালুজাই প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আইএস-কে হঠাতে ফালুজায় বোমাবর্ষণ হয়েছে। আছড়ে পড়েছে কামানের গোলাও। প্রায় একটি বাড়িও আস্ত নেই। শুধু পড়ে আছে ভাঙা স্তম্ভ, সিঁড়ি, ঘরদোর। ইরাকি সেনাকে খুব সাবধানে ফালুজায় প্রবেশ করতে হয়েছিল। তাদের আশঙ্কা ছিল আইএস নানা জায়গায় বুবিট্র্যাপ বিছিয়ে রেখেছে। আশঙ্কা সত্যই ছিল। কয়েকটি জায়গায় বুবিট্র্যাপ সরাতে গিয়ে সেনার মৃত্যু হয়েছে। বুবিট্র্যাপ সরাতে গিয়ে কয়েকটি বাড়ি ধ্বংসও করতে হয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি ফুটে উঠেছে আইএস-এর অত্যাচারে ছবিও।
আরও পড়ুন:এক রাতেই পরমাণু অস্ত্র বানাতে পারে জাপান, মার্কিন হুঁশিয়ারি চিনকে
ফালুজা দখল নেওয়ার পরে আইএস কঠোর ইসলামি শাসন বলবৎ করে। কোনও শিথিলতা পেলেই নেমে এসেছে অত্যাচারে খাঁড়া। চুরি থেকে মাদক সেবন— সব কিছুর জন্যই কঠোর শাস্তির বিধান ছিল। এর জন্য বেশ কিছু বন্দিশিবিরও তৈরি করেছিল আইএস। ছোট ছোট ঘরের ভিতরে গাদাগাদি করে বন্দিদের রাখা হত। সেই ঘরে আলো যাতে না ঢোকে তাই জানলাগুলি লোহার পাত দিয়ে বন্ধ করা থাকত। ছিল একা বন্দি থাকার ঘরও। ইরাকি সেনা জানিয়েছে, ঘরগুলি এখনও মনুষ্যবর্জ্যের গন্ধে ভরা। অনেক সময়ে বন্দিদের উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হত। ছিল হত্যা করার আলাদা অঞ্চল। এমন একটি স্কুলের সন্ধান পেয়েছে ইরাকি সেনা যেখানে বন্দিদের নিয়মিত হত্যা করা হত।
ফালুজার কয়েকটি জায়গায় বেশ কিছু গর্তের সন্ধান পেয়েছে ইরাকি সেনা। সেখানেও বন্দিদের রাখা হত। নিয়মিত বন্দিদের উপরে অত্যাচার চলত। ইরাকি সেনা বেশ কিছু মৃতদেহের সন্ধান পেয়েছে যাঁদের উপরে বীভৎস অত্যাচার করা হয়েছে। ফালুজার এই ছবি মসুলের অবস্থা সম্পর্কে আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলেছে বলে জানিয়েছে ইরাকি সেনা।
শুধু অত্যাচারই নয়, ফালুজা থেকে নানা আক্রমণের ছক কষেছিল আইএস। ফালুজা থেকে পাওয়া কাগজপত্র থেকে দেখা গিয়েছে, বাগদাদের নানা জায়গায় গাড়িবোমা বিস্ফোরণ, আত্মঘাতী হানার মতো নানা নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল আইএস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy