Advertisement
E-Paper

Taliban: দানিশের পরে হত্যা জনপ্রিয় কৌতুকশিল্পীকে, তালিবান আতঙ্কে কন্দহর ছাড়ছেন হাজারো

স্পিন বোল্দাকের জনপ্রিয় বাজার এলাকায় ১৬ জুলাই ভোররাতে আফগান-তালিবান সংঘর্ষে নিহত হন তরুণ ভারতীয় সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২১ ০৬:১৫
কৌতুকশিল্পী নজ়র মহম্মদকে হত্যা করার আগে তাঁকে এ ভাবেই গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিল জঙ্গিরা। কন্দহরে।

কৌতুকশিল্পী নজ়র মহম্মদকে হত্যা করার আগে তাঁকে এ ভাবেই গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিল জঙ্গিরা। কন্দহরে। ছবি: টুইটার।

গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময়েই প্রচণ্ড মারধর করা হচ্ছিল তাঁকে। তার পরে গাড়ি থেকে নামিয়ে, গাছে বেঁধে লোকটির গলা কেটে ফেলল জঙ্গিরা। জনপ্রিয় আফগান কৌতুকশিল্পী নজ়র মহম্মদ ওরফে খাসা জ়ওয়ানের মৃত্যুর এই ভয়াবহ ভিডিয়ো টুইটারে পোস্ট করে আফগানিস্তানে কর্মরত এক বিদেশি টিভি-সাংবাদিক দাবি করেছেন, এই হত্যাকাণ্ড তালিবানের কাজ। তাজুদেন সারুশ নামে সাংবাদিকের পোস্ট করা ভিডিয়োটি ভাইরাল হওয়ার পরে তালিবান অবশ্য বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে— নজ়রের হত্যার পিছনে তাদের কোনও হাত নেই।

তবে আন্তর্জাতিক দুনিয়া এ কথা মানতে নারাজ। তার অন্যতম কারণ, যে কন্দহরে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানে বেশ কিছু দিন ধরেই তাণ্ডব চালাচ্ছে তালিবান। সেখানকার স্পিন বোল্দাকের জনপ্রিয় বাজার এলাকায় ১৬ জুলাই ভোররাতে আফগান-তালিবান সংঘর্ষে নিহত হন তরুণ ভারতীয় সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি। আফগান সেনাবাহিনী সূত্রে জানানো হয়েছিল, দানিশের দেহ নিজেদের হেফাজতে নিয়ে বিকৃত করেছিল তালিবান। লুটপাট চালানো, তোলা আদায় করা, কমবয়সি ছেলেদের নিজেদের বাহিনীতে জোর করে যোগ দেওয়ানো— কন্দহর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় তালিবানের অত্যাচার বেড়েই চলেছে। আজই আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে এক আফগান সংবাদপত্রে দাবি করা হয়েছে যে, গত কয়েক দিনে কম পক্ষে একশো জন সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে তালিবান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্রের কথায়, ‘‘পাকিস্তানি নেতাদের নির্দেশে তালিবান কন্দহরের নিরীহ মানুষের উপরে ভয়ঙ্কর অত্যাচার চালাচ্ছে।’’ আতঙ্কে হাজার হাজার মানুষ কন্দহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন। আশরাফ গনি প্রশাসন কাবুলের চারপাশে অনেক শরণার্থী শিবির তৈরি করেছে। কন্দহর ও অন্যান্য তালিবান অধ্যুষিত এলাকা ছেড়ে সাধারণ মানুষ এই সব শরণার্থী শিবিরেই আশ্রয় নিচ্ছেন। আমেরিকা ও ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার পরে দেশ যদি পুরোপুরি তালিবানের হাতে চলে যায়, তা হলে অচিরেই আফগানিস্তান ‘একঘরে’ হয়ে যাবে বলে আজ নয়াদিল্লিতে মন্তব্য করেছেন আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তালিবানকে মদত দেওয়ার অভিযোগ এনে বারবার পাকিস্তানকে দুষছে কাবুল। আজ পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাল্টা বলেন, ‘‘আফগানিস্তানের পরিস্থিতি এতটা খারাপ যে হল, তার জন্য দায়ী আমেরিকা। রাজনৈতিক সমাধান ছাড়া দেশটিতে শান্তি ফেরানো সম্ভব নয়।’’

এ দিকে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল থেকে সমর্থন পাওয়ার আশায় বেজিংয়ে গিয়েছেন তালিবানের শীর্ষনেতারা। লক্ষ্য, আফগান রাজনীতিতে তালিবানের প্রত্যক্ষ উপস্থিতি মেনে নিতে কাবুলকে চাপ দেওয়া। দলে রয়েছেন তালিবানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গনি বরাদর। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠক করেছেন তাঁরা। চিনের তরফ থেকেও তালিবানের সঙ্গে এই বৈঠকে যথেষ্ট আগ্রহ ছিল। চিন আফগানিস্তানের প্রতিবেশী রাষ্ট্র, যদিও দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত মাত্র ৭৬ কিলোমিটারের। তবু, বেজিংয়ের চিন্তা, পার্বত্যসঙ্কুল এই সীমান্ত পেরিয়ে চিনের উইঘুর বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আফগানিস্তানে ঢুকে পড়তে পারে। তালিবান প্রতিনিধিরা বেজিংকে আশ্বাস দিয়েছেন— আফগানিস্তানে তারা কোনও বিদেশি জঙ্গি সংগঠনকে ঘাঁটি গাড়তে দেবেন না। তালিবানের চিনের সঙ্গে এই কূটনৈতিক দৌত্য চালানোর প্রেক্ষিতে আজ আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বলেন, ‘‘তালিবানের কথা শুনে বিভিন্ন দেশ যদি মনে করে, ২০০০ সালের তালিবানের থেকে ২০২১-এর এই তালিবান আলাদা, তা হলে তারা ভুল ভাববে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি চক্র ও বিভিন্ন অপরাধমূলক সংগঠনের সঙ্গে জোট বেঁধে কাজ করে যাচ্ছে
তালিবান।’’

Afghanistan taliban kandahar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy