অভিজিৎ রায়।
হুমায়ুন আজাদের পরে এ বার লেখক অভিজিৎ রায়। ফের জঙ্গিদের হামলায় রক্তাক্ত হল ঢাকার রাজপথ। একুশে বইমেলার ঠিক বাইরে ভাষা শহিদ মিনারের অদূরে টিএসসি চত্বরে সস্ত্রীক অভিজিতের ওপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে দু’জনকে কোপানো হয়। হাসপাতালে মারা যান জনপ্রিয় লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ। গুরুতর আহত হয়ে তাঁর স্ত্রী রফিদা আহমেদ বন্যা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর হাতের কয়েকটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে মার্কিন প্রবাসী অভিজিৎ পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। ‘মুক্তমনা’ নামের ব্লগের এই প্রতিষ্ঠাতা ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে কলম ধরে বেশ কয়েক বার জঙ্গিদের হুমকি পেয়েছেন। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা নয়। এ বারের বইমেলাতেও তাঁর দু’টি বই প্রকাশ পেয়েছে। মূলত বইমেলা ও একুশের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্যই ১৫ তারিখে ঢাকায় ফিরেছিলেন অভিজিৎ। এ দিন ভারতীয় সময় রাত সোয়া আটটা নাগাদ বইমেলা থেকে বেরিয়ে আসার পরই কয়েক জন দুষ্কৃতী সস্ত্রীক অভিজিতের ওপর চড়াও হয়। তাঁর মাথা ও গলায় কোপ মারা হয়। স্ত্রী বন্যা বাধা দিতে গেলে তাঁকেও এলোপাথাড়ি কোপানো হয়। তার পর অস্ত্রগুলি ফেলে রেখেই দুষ্কৃতীরা উধাও হয়ে যায়। অভিজিৎ ও তাঁর স্ত্রীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে কিছু ক্ষণের মধ্যেই মারা যান অভিজিৎ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, চাপাতির ঘায়ে তাঁর মাথা ঘাড় থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচারের তোড়জোড় করতে করতেই সব শেষ হয়ে যায়।
এর আগে ২০০৪-এর ২৭ ফেব্রুয়ারি এ ভাবেই বইমেলা থেকে বার হওয়া মাত্র আক্রান্ত হয়েছিলেন লেখক হুমায়ুন আজাদ। এ ভাবেই তাঁকে কোপানো হয়েছিল। পরে তদন্তে জানা যায়, ইসলামি জঙ্গিরাই এই হামলা চালিয়েছিল। ২০১৩-র ফেব্রুয়ারিতে শাহবাগ আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ব্লগার রাজীব আহমেদকেও কুপিয়ে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। সে কাজেও জঙ্গিদের হাত খুঁজে পেয়েছে পুলিশ।
এ দিন ঘটনাস্থল থেকে দু’টি চাপাতি উদ্ধার করেছে পুলিশ। খুনের একটি মামলাও শুরু হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, আগের হামলাগুলির সঙ্গে অভিজিতের ওপর হামলার ঘটনার খুবই মিল রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এই খুন ইসলামি জঙ্গি সংগঠনের কাজ বলেই মনে করা হচ্ছে। বইমেলার মধ্যেই দুষ্কৃতীরা অভিজিতের গতিবিধির ওপর নজর রাখছিল। তিনি বাইরে আসতেই হামলা চালানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy