মুখে কথা নেই। হঠাৎ এসে জড়িয়ে ধরলেন ফিদেল কাস্ত্রো। কেউ কিচ্ছুটি টের পাওয়ার আগেই। প্রথমটায় তাই খানিক হকচকিয়ে গিয়েছিলেন ইন্দিরা গাঁধী। পরে হুঁশ ফেরে একটানা ক্যামেরার ফ্ল্যাশ আর হল-ফাটানো হাততালিতে। ফিদেল কিন্তু তখনও মিটিমিটি হাসছেন! আর লজ্জায় রাঙা ইন্দিরা ‘প্রিয়দর্শিনী’।
সময়টা ১৯৮৩-র মার্চ। ইন্দিরাই তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী। আর কিউবা বিপ্লবের শীর্ষ নেতা ও তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফিদেল এসেছিলেন সপ্তম জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে। আয়োজক দেশ ভারত। নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান তখন প্রায় শেষের মুখে। কথা ছিল, ষষ্ঠ সম্মেলনের আয়োজক দেশের প্রধান হিসেবে কাস্ত্রোই ব্যাটন তুলে দেবেন উত্তরসূরি ইন্দিরার হাতে। হাত মেলাবে দুই ‘বন্ধু’ দেশ।
কিন্তু এ কী! সাংবাদিক, আমলা, মন্ত্রী আর তাবড় রাষ্ট্রনেতার ভিড়ে ঠাসা বিজ্ঞান ভবন। অনুষ্ঠান শেষে সৌজন্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ইন্দিরা। কিন্তু ফিদেলের যেন তা চোখেই পড়ল না। ফের করমর্দনে এগিয়ে গেলেন ইন্দিরা। আবারও গা নেই ফিদেলের। মিটিমিটি শুধু হেসেই চলেছেন। পাল্টা হাসলেন ইন্দিরা। হাত বাড়ালেন তৃতীয় বার। এ বারও কি হাত বাড়াবেন না কাস্ত্রো? বিস্ময়ের ঘোরে চিত্রসাংবাদিকরাও যেন তখন ক্যামেরার শাটার টিপতে ভুলে গিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ চমকে দিলেন ফিদেল। হাত না মিলিয়ে ইন্দিরাকে কাছে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরেছিলেন। আর সে দিনই ইন্দিরাকে ‘বোন’ সম্বোধন করে কাস্ত্রো জানিয়েছিলেন, সম্মেলনের দায়ভার ইন্দিরার হাতে তুলে দিতে পেরে তিনি গর্বিত৷
ইন্দিরা জমানাতেই শেষ বার ভারত সফরে এসেছিলেন ফিদেল। শনিবার তাঁর মৃত্যুর খবরে নয়াদিল্লির অন্দরে তাই ফের স্মৃতির ভিড়। যার কিছুটা কিউবা, আর বেশির ভাগটাই ফিদেলকে নিয়ে।
ছবি টুইটারের সৌজন্যে
আরও খবর...
সিঁড়ি ভাঙতে স্বপ্ন ‘মেক ইন আমেরিকা’-ই
‘তোমাকে ভুল বুঝেছিলাম!’ ফিদেলকে লিখেছিলেন চে
সাম্রাজ্যবাদী হিংসার বিরুদ্ধে নীল আকাশের নাম
৬৩৪ বার খুন করার চেষ্টা হয়েছে ফিদেলকে?
আমেরিকার নাকের ডগায় ছোট্ট দ্বীপের স্পর্ধার নাম ফিদেল কাস্ত্রো
‘বিয়ার হাগ’ দিয়ে ইন্দিরাকে চমকে দিয়েছিলেন কাস্ত্রো
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি ফিদেলের ছিল গভীর শ্রদ্ধা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy