মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘পিপল্স লিবারেশন আর্মি’ বা পিএলএ (ঘটনাচক্রে, চিনা সেনাবাহিনীও একই নামে পরিচিত) সে দেশের ক্ষমতাসীন সামরিক জুন্টা সরকারের একটি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি করল। মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চির সমর্থক স্বঘোষিত ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাওয়াদি’ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সাগিয়াং প্রদেশে ওই চিনা যুদ্ধবিমান ভূপতিত করেছে পিএলএ।
পিএলএ-র মুখপাত্র ডিএনএন কায়াও ‘দ্য ইরাওয়াদি’-কে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার পালে শহরের অদূরে কান ডাওকে পুলিশ ও আধাসেনার ঘাঁটিতে তাঁরা হানা দিয়েছিলেন। সে সময় নিরাপত্তাবাহিনীকে ‘এয়ার সাপোর্ট’ দিতে উড়ে আগে জুন্টার বিমানবহর। পিএলএ-র গেরিলাবাহিনীর উপর হামলা চালানোর সময় এম-২ ব্রাউনিং ভারী মেশিনগানের পাল্টা গুলিতে ওই চিনা যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মায়ানমারের (তৎকালীন বর্মা) ব্রিটিশ-আমেরিকার বাহিনী ওই ১২.৭ এমএম (০.৫০ ক্যালিবার) মেশিনগান ব্যবহার করত জাপান সেনা ও আজাদ হিন্দ বাহিনীর বিরুদ্ধে। সেই মান্ধাতার আমলের অস্ত্রেই চিনা যুদ্ধবিমান ঘায়েল করল ‘কমিউনিস্ট পার্টি অফ বর্মা’র সশস্ত্র শাখা পিএলএ।
আরও পড়ুন:
চিনা যুদ্ধবিমানটি কোন মডেলের সে বিষয়ে পিএলএ বা জুন্টাফৌজ কিছু জানায়নি। তবে সেগুলি পাকিস্তানে নির্মিত চিনা যুদ্ধবিমান ‘জেএফ-১৭ ব্লক-২’ হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পাকিস্তান-মায়ানমার প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী জুন্টা বিমানবাহিনীকে মোট ১৩টি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান দিয়েছিল ইসলামাবাদ। ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে পাকিস্তানের কারখানায় চিনা সহযোগিতায় নির্মিত ওই যুদ্ধবিমানগুলি সরবরাহ করা হয়েছিল। সাম্প্রতিক গৃহযুদ্ধ পর্বে বিদ্রোহী দমনে পাক-চিনা যুদ্ধবিমানগুলি ঢালাও ব্যবহার করেছে জুন্টা ফৌজ। প্রসঙ্গত, গত মাসে মায়ানমারের আর এক বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্মি (কেআইএ) জুন্টা বায়ুসেনার একটি হেলিকপ্টার ধ্বংস করেছিল।