যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টাইনের সঙ্গে সম্পর্কিত ফাইলের আরও কিছু অংশ প্রকাশিত হল শুক্রবার (আমেরিকার স্থানীয় সময় অনুসারে)। একাধিক ছবিতে দেখা যাচ্ছে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনকে। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে সুইমিং পুলে সাঁতার কাটছেন তিনি। তাঁর দু’পাশে রয়েছেন দুই রহস্যময়ী। তবে তাঁদের মুখ দেখা যাচ্ছে না। ক্লিন্টনের ডান দিকে থাকা স্বল্পবসনা নারীর মুখ অন্য দিকে ঘোরানো। আর অপর জনের মুখ আয়তাকার কালো বাক্স দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
কেন এই ভাবে মুখ ঢেকে ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও বিতর্কের মুখে আমেরিকার বিচার বিভাগের ব্যাখ্যা, এপস্টাইন-কাণ্ডে যাঁরা অত্যাচারের শিকার, তাঁদের পরিচয় প্রকাশ না করার জন্যই কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই যে ছবিগুলি প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলির কোনওটিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নেই। তবে একটি ‘কনট্যাক্ট বুক’-এর ট্রাম্পের নামমাত্র উল্লেখ রয়েছে। ওই ‘কনট্যাক্ট বুক’টি কার, তা অবশ্য জানা যায়নি। ইতিমধ্যেই যে ছবিগুলি প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি হিসাবে ক্লিন্টন ছাড়াও বিখ্যাত পপ গায়ক মাইকেল জ্যাকসনকে দেখা গিয়েছে। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, জ্যাকসনের কাঁধে হাত রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ক্লিন্টন। তাঁদের পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন গায়িকা ডায়ানা রস। ওই ছবিতেও দু’টি জায়গা কালো করে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ফাইল প্রকাশের পর হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন স্বচ্ছতার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে। আর ক্লিন্টন নিজে এই বিষয়ে মুখ না-খুললেও তাঁর টিম এই বিষয়ে মুখ খুলেছে। তারা জানিয়েছে, ক্লিন্টনের কম বয়সের একাধিক ছবি প্রকাশ করা যেতেই পারে। কিন্তু তদন্তটা যে এপস্টাইনকে নিয়ে হচ্ছে, ক্লিন্টনকে নিয়ে নয়, তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে তাঁর টিম।
মার্কিন সংবাদসংস্থা সিবিএস নিউজ় জানিয়েছে, শুক্রবার প্রথম দফায় এপস্টাইন সংক্রান্ত ৩৯৬৫টি ফাইল প্রকাশ করা হয়েছে। পরের দফায় আরও কিছু ফাইল প্রকাশ করা হবে। বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং নিজের দল রিপাবলিকান পার্টির দাবি মেনে গত ১৯ নভেম্বর ‘এপস্টিন ফাইলস ট্রান্সপারেন্সি অ্যাক্ট’ বিলে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। গত ফেব্রুয়ারিতে বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু ফাইল প্রকাশ্যে এলেও পুরো ফাইল প্রকাশের দাবি উঠছিল আমেরিকায়। ট্রাম্প অবশ্য প্রথম দিকে এই ব্যাপারে অনীহাই দেখাচ্ছিলেন।
এপস্টিনের সঙ্গে একসময় ট্রাম্পের বন্ধুত্ব ছিল। দু’জনের একাধিক ছবি রয়েছে একসঙ্গে। যদিও ট্রাম্প বারবার দাবি করে এসেছেন, এপস্টিনের সঙ্গে একসময় বন্ধুত্ব থাকলেও তাঁর যৌন অপরাধের সঙ্গে কোনও যোগ নেই। নভেম্বরে এপস্টিনের বিরুদ্ধে তদন্ত সংক্রান্ত নথির একাংশ প্রকাশ্যে এসেছিল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’-র প্রতিবেদন অনুসারে, ২০ হাজার পাতারও বেশি ওই নথিতে বেশ কিছু জায়গায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের নামোল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে এক জায়গায় নাকি এপস্টিন নিজের মুখেই বলেছেন, “আমি জানি ডোনাল্ড (ট্রাম্প) কতটা নোংরা।”