Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
G7 Meet

Russia: রাশিয়ার বিরুদ্ধে তৎপর জি-৭, ভারসাম্যে দিল্লি

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, এই পরিস্থিতিতে নিজেদের রাশিয়া-নীতি নিয়ে ফের এক বার ভাবার সময় এসেছে ভারতের।

ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২২ ০৫:৫২
Share: Save:

মিউনিখে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কার্যত একঘরে করার প্রশ্নে সহমত হল বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর এবং ধনী সাত রাষ্ট্রের সংগঠন জি-৭। ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াল তারা। সম্মেলনে ভিডিয়ো মাধ্যমে যুক্ত হলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি। সম্মেলনের বার্তা, যুদ্ধ চলবে আরও দীর্ঘদিন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাই এ বার কোমর বেঁধে নামার সময় এসেছে।

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, এই পরিস্থিতিতে নিজেদের রাশিয়া-নীতি নিয়ে ফের এক বার ভাবার সময় এসেছে ভারতের। এখনও পর্যন্ত ভারসাম্যের নীতি নিয়ে চলে, আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নয়াদিল্লি সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে এটা ঠিকই। রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জে কোনও নিন্দামূলক প্রস্তাব না নিয়ে এবং তার পরিণামে মস্কোর কাছ থেকে অনেক কম দামে গত বছরের তুলনায় পাঁচগুণ অশোধিত তেল আমদানি করেছে ভারত। জ্বালানির এই প্রবল চাহিদার বাজারে এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে সরকারকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, সব চেয়ে বড় কথা পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞাকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে এই আমদানির জন্য কোনও চড়া দাম এখনও দিতে হয়নি ভারতকে। এখনও পর্যন্ত, প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সহযোগিতার কেন্দ্রে ভারতকেই রেখে এগোচ্ছে আমেরিকা। ভারতের রাশিয়া থেকে আমদানি (তা সে এস ৪০০ ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরোধী সরঞ্জামই হোক বা অশোধিত তেল) প্রসঙ্গে এক রকম চোখ বন্ধই করে রেখেছে বাইডেন প্রশাসন। চিনকে প্রশমিত করতে ওয়াশিংটনের ভারতকে এখন প্রয়োজন। গত মাসে টোকিওতে বাইডেন বলেওছিলেন, ‘ভারত এবং আমেরিকার সহযোগিতাকে বিশ্বের সব চেয়ে ঘনিষ্ঠ করার প্রশ্নে দু’দেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

ভারত যে এই ভারসাম্যের নীতি নিয়ে চলে, পশ্চিম বিশ্ব এবং রাশিয়া উভয় পক্ষের কাছেই এখনও পর্যন্ত নিজের চাহিদা ধরে রেখেছে, তা সদ্যসমাপ্ত জি-৭ বৈঠক থেকেও স্পষ্ট। কানাডা থেকে আমেরিকা— বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আগ্রহ দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে মোদীকে ঘিরে। ভারতের প্রতি সদর্থক বার্তা দিয়ে বাইডেন নিজে কয়েক কদম হেঁটে চলে এসেছেন মোদীর কাছে।

তবুও সামনের রাস্তা দীর্ঘ। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধ যত এগোবে, রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক, প্রযুক্তি এবং পরিষেবাগত চাপ তত বাড়বে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলির। আর তখন মস্কোর আরও বেশি করে চিনের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকা ভিন্ন গতি নেই। রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক রাখার কিছু কারণের মধ্যে এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে, চিনের সঙ্গে সংঘাতমূলক পরিস্থিতিতে মস্কোকে দর কষাকষির জন্য কাজে লাগানো। কিন্তু চিন-নির্ভরতা রাশিয়ার যত বাড়বে, ভারতের সেই সুযোগ কমবে। চিনকে চাপে রাখতে মস্কোকে পাশে পাওয়া দুরস্থান, তখন দায়ে পড়ে মস্কোই যে কৌশলগত প্রশ্নে ভারতের দিক থেকে মুখ সরিয়ে নিতে বাধ্য হতে পারে— এমন আশঙ্কা বাড়ছে। আর তাই ‘ভারসাম্যের নীতি’ নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

G7 Meet Russia India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE