Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Covid 19

Pandemic treaty: ভবিষ্যৎ অতিমারি মোকাবিলায় চুক্তির পথে বিশ্ব? ওমিক্রন-হানা উস্কে দিল সম্ভাবনা

বিগত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সকলকে টিকা দেওয়া না যাচ্ছে, ততক্ষণ কেউ সুরক্ষিত নয়।

‘‘যতক্ষণ পর্যন্ত সকলকে টিকা দেওয়া না যাচ্ছে, ততক্ষণ কেউ সুরক্ষিত নয়।’’

‘‘যতক্ষণ পর্যন্ত সকলকে টিকা দেওয়া না যাচ্ছে, ততক্ষণ কেউ সুরক্ষিত নয়।’’ ছবি— এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২১ ১৭:২০
Share: Save:

করোনাভাইরাসের নবতম রূপ ওমিক্রন-এর আবির্ভাব, নতুন করে প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে বিশ্বব্যাপী অতিমারি-চুক্তির সম্ভাবনাকে। বিশেষত যে সব দেশে টিকাকরণের হার কম, সেখানে নয়া রূপ ওমিক্রন-এর দাপট রুখতে আগ্রাসী টিকাকরণ অভিযানের প্রয়োজনীয়তার কথা নতুন করে উঠে আসছে।

দক্ষিণ আফ্রিকা কোভিডের নয়া রূপ ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে জানানোর পরই, সোমবার নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেন বিশ্ব নেতারা। সেখানে ভবিষ্যৎ অতিমারির প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় নতুন আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা চলছে। যাকে কেউ কেউ অতিমারি-চুক্তি হিসেবেও অভিহিত করছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র প্রধানের বক্তৃতা দিয়ে শুরু হয় বৈঠক। হু প্রধান, টেড্রস আধানম বলেন, ‘‘ওমিক্রন রূপের আবির্ভাব বুঝিয়ে দিচ্ছে কতটা বিপজ্জনক ও অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলেছি আমরা।’’

অস্বাভাবিক দ্রুততায় ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের নবতম রূপের আবির্ভাব যদি কোনও কম টিকাকরণ হয়েছে এমন দেশে হয়, তা হলে স্বভাবতই সেই দেশ আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় আসতে চাইবে। কারণ, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশেষজ্ঞদের মত, ‘‘যতক্ষণ পর্যন্ত সকলকে টিকা দেওয়া না যাচ্ছে, ততক্ষণ কেউ সুরক্ষিত নয়।’’ মাত্র ৬ শতাংশ টিকাকরণের হার সম্পন্ন মহাদেশে (আফ্রিকা) ওমিক্রন-হানায় সেই উদ্বেগ বেড়েছে পাল্লা দিয়ে।

আন্তর্জাতিক চুক্তির সমর্থকদের মতে, অতিমারি-চুক্তি বা এমন কোনও আন্তর্জাতিক আইনি বোঝাপড়া, অতিমারির সময়ে করা একাধিক ভুলকে চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে। তাতে বোঝা সম্ভব হবে ঠিক কী কী ভুলের কারণে এই পরিস্থিতিতে পৌঁছলাম। যাতে ভবিষ্যতে কোনও অতিমারি পরিস্থিতিতে ভুলের পুনরাবৃত্তি এড়ানো সম্ভব হয়। তাঁদের আরও দাবি, এর ফলে বিশ্বব্যাপী একটি কাঠামো তৈরি করা সম্ভব হবে, যা আগেভাগেই আসন্ন বিপদ সম্পর্কে সচেতন করতে সক্ষম এবং অতি অবশ্যই টিকার উৎপাদন-সহ তার চাহিদা ও বণ্টনের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষায় সাহায্য করবে। এর একটি মানবিক দিকও আছে। অতিমারির প্রাদুর্ভাবের পরেই দেখা গিয়েছিল, চিনকে ব্রাত্য তালিকায় ঠেলে দেওয়ার প্রবণতা। ওমিক্রন রূপের প্রাদুর্ভাবে একই প্রবণতার পুনরাবৃত্তি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশের ক্ষেত্রে। আন্তর্জাতিক অতিমারি-চুক্তি থাকলে তার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ।

কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সংশয়ে রয়েছেন, বিশ্বব্যাপী চুক্তি প্রস্তাবে চিন ও রাশিয়া কী অবস্থান নেবে, তা নিয়ে। বস্তুত, করোনা অতিমারিতে স্পষ্ট হয়েছে বিশ্বব্যাপী টিকা বণ্টনে ভয়াবহ বৈষম্যের চিত্র। এ দিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রত্যেককে টিকাকরণের আওতায় না আনা পর্যন্ত, কেউ নিরাপদ নয়। এর মধ্যেই দুনিয়া জুড়ে নতুন করে ত্রাস ছড়িয়েছে ওমিক্রন নিয়ে। আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকা, বৎসোয়ানা থেকে ওমিক্রন প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া গেলেও, সেই মহাদেশে টিকাকরণের হার মাত্র ৬ শতাংশ। এ দিকে প্রাথমিক গবেষণা বলছে, ডেল্টা রূপের তুলনায় নয়া রূপ ওমিক্রন-এ মিউটেশনের হার ঢের বেশি। ফলে ভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচার এই মুহূর্তে স্রেফ একটিই রাস্তা— আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকাকরণের আওতায় আনা। সে জন্য প্রয়োজন একটি বিশ্বব্যাপী বোঝাপড়ার। ওমিক্রন-হানার প্রেক্ষিতে সেই বোঝাপড়া কি এ বার দিনের আলো দেখবে? প্রশ্ন এখন সেটাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Covid 19 Omicron Pandemic Treaty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE