কখনও হাতে দামি মদ নিয়ে বসে রয়েছেন বিলাসবহুল রিসর্টে। কখনও বিদেশি গাড়িতে হাতে দামি চুরুট নিয়ে। সমাজমাধ্যমে এ হেন ছবি পোস্ট করেই সমালোচনার মুখে স্যান্দ্রো কাস্ত্রো। সম্পর্কে তিনি কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর নাতি। সেই ফিদেল, যে দেশবাসীকে ব্যায়সঙ্কোচের পথে হাঁটার পরামর্শ দিতেন।
সংবাদমাধ্যম এল পাইয়ের রিপোর্ট বলছে, সমাজমাধ্যমে ৩৩ বছরের স্যান্দ্রোর অনুগামীর সংখ্যা প্রায় ১.২ লক্ষ। তিনি প্রায়ই সমাজমাধ্যমে নিজের ছবি পোস্ট করেন। কোনও ছবিতে দেখা যায়, তিনি প্রমোদতরীতে মদ্যপান করছেন। কোনও ছবিতে আবার দেখা গিয়েছে, তিনি কোনও ক্লাব বা পানশালায় পার্টির আয়োজন করেছেন। সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে কিউবার রাজধানী হাভানায় লোডশেডিংয়ের সমালোচনা করেছেন। একটি ভিডিয়োতে আবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিবাসীদের বাঁচার ‘সুযোগ’ দিতে বলেছেন। অন্য একটি ভিডিয়োতে কিউবার বিয়ারকে ‘ওষুধ’ বলেছেন। কিউবার রিসর্টে ‘এল প্যাট্রন’-এ সময় কাটানোর ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি। সেখানে প্রতি রাতের ভাড়া ১০০ আমেরিকান ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে আট হাজার টাকার কাছাকাছি। বর্তমান কিউবায় বহু নাগরিক ওই টাকা কয়েক মাসে রোজগার করেন।
স্যান্দ্রোর এই জীবনযাপন দেখেই চটেছেন কিউবার সাধারণ মানুষ। কারণ, সে দেশে এখন অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। বহু মানুষের মাসিক গড় বেতন দেড় হাজার টাকার আশপাশে। মুদ্রাস্ফীতি চরমে। দিনে ১৬ থেকে ২০ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের রিপোর্ট বলছে, কিউবার সঙ্কট কটার কোনও লক্ষণই নেই। গত কয়েক বছরে বিদেশি মুদ্রার রাজস্ব কমেছে ৩০ শতাংশ। তার জেরে খাবার, জ্বালানি, ওষুধের অভাব দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্যান্দ্রোর এই বিলাবহুল জীবনযাত্রা ভাল চোখে দেখছেন না দেশবাসী। অভিযোগ, স্যান্দ্রো পার্টিতে প্রবেশের খরচ প্রায় ৪০ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় তিন হাজার টাকা। কিউবার বহু মানুষ তার দশ ভাগের এক ভাগও রোজগার করেন না মাসে।
ফিদেল এবং তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর পাঁচ পুত্র রয়েছেন। তাঁদের মধ্যেই এক জন হলেন স্যান্দ্রোর বাবা অ্যালেক্সিস কাস্ত্রো সোটো ডেল ভাল। ১৯৫৯ সালে কিউবায় যে বিপ্লব হয়েছিল, তার নেতা ছিলেন ফিদেল। তিনি সর্বদা দেশবাসীকে ব্যয়সঙ্কোচের পথে হাঁটতে বলতেন। আত্মত্যাগ করতেও বলতেন।