Advertisement
E-Paper

কট্টরপন্থীদের হতাশ করে ইরানে আবার প্রেসিডেন্ট রুহানি

মোল্লাতন্ত্রের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শেষ হাসি হাসলেন মধ্যপন্থী হাসান রুহানি। এখনও পর্যন্ত গণনা হওয়া ৩ কোটি ৮০ লক্ষ ভোটের মধ্যে ২ কোটি ২২ লক্ষ ভোট পেয়েছেন রুহানি। মোট ভোট পড়েছিল ৪ কোটির কিছু বেশি।

রত্নাঙ্ক ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ১৪:৫১
হাসান রুহানি। ফাইল চিত্র।

হাসান রুহানি। ফাইল চিত্র।

মোল্লাতন্ত্রের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শেষ হাসি হাসলেন মধ্যপন্থী হাসান রুহানি। এখনও পর্যন্ত গণনা হওয়া ৩ কোটি ৮০ লক্ষ ভোটের মধ্যে ২ কোটি ২২ লক্ষ ভোট পেয়েছেন রুহানি। মোট ভোট পড়েছিল ৪ কোটির কিছু বেশি। ফলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় পর্বের আর কোনও প্রয়োজন হবে না। যদিও কট্টরপন্থী ইব্রাহিম রইসি এই নির্বাচনের কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, দেশের বেশ কিছু বুথে নানা ভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন রুহানির সমর্থকরা। যা ইরানের নির্বাচনী আইনে অবৈধ।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ৬৮ বছর বয়সি রুহানির বিরুদ্ধে যথেষ্ট ক্ষোভ জমা হলেও, সর্বশেষ জনমত সমীক্ষাতে প্রতিপক্ষ রইসির থেকে সামান্য হলেও এগিয়ে ছিলেন রুহানি। দু’বছর আগে প্রেসিডেন্ট রুহানির আমলেই পরমাণু কর্মসুচিতে লাগাম পরানোর সমঝোতা হয়েছে আমেরিকা, রাষ্ট্রপুঞ্জ ও ইউরোপীন ইউনিয়নের সঙ্গে। ভোটের ফলাফল বলছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরানবাসী সমঝোতার পক্ষেই রয়েছেন। রুহানির বিরোধীদের দাবি ছিল, ওই চুক্তিতে লাভের লাভ হয়নি কিছুই। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উঠলেও, মার্কিন হুমকি বন্ধ হয়নি। আসেনি লগ্নিও। ব্যবসা বা কর্মসংস্থান— কিছুই বাড়েনি। ইরানের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর যে আশ্বাস রুহানি দিয়েছিলেন, বাস্তবে তার কিছুই হয়নি। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছিলেন ইরানের নবীন প্রজন্মের অনেকেই। আট কোটি মানুষের এই দেশে ৬০ শতাংশের বয়স ৩০-এর নীচে। আর পরেও এঁদের বড় অংশ কিন্তু রুহানিকেই বেছে নিলেন।

দ্বিতীয়বার ইরানের গদিতে রুহানি। ছবি: এএফপি।

এ বার ভোট নিয়ে প্রবল সাড়া পড়ে গিয়েছিল। ভোট দানের হার ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও খুলে রাখতে হয়। কারণ, ভোটদাতাদের লম্বা লাইন। এখনও পর্যন্ত শহরাঞ্চলের ভোটের ফলাফল আসেনি। এলে রুহানির জয়ের ব্যবধান আরও বাড়বে বল আশা সমর্থকদের।
কট্টর রক্ষণশীলদের রইসি দেশের শীর্ষ চার ইসলামি বিচারপতির এক জন, যাঁরা ১৯৮৮ সালে কয়েক হাজার রাজনৈতিক বন্দির প্রাণদণ্ডের হুকুম দিয়েছিলেন। ইরানে ১৯৭৯-এর ইসলামি বিপ্লবোত্তর পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে চান তিনি। ইরানের সামরিক বাহিনী ও প্রভাবশালী দু’টি মৌলবি গোষ্ঠী ও কট্টরপন্থী মৌলবিদের সমর্থন রয়েছে তাঁর দিকে। শুধু তা-ই নয়, ইরানে সর্বোচ্চ ক্ষমতাধারী আয়াতোল্লা খামেনেই-এরও ঘনিষ্ঠ তিনি। কিন্তু তার পরেও জনসমর্থন রইসির দিকে গেল না। ইরানকে নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল ভেঙে বাকি বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত করলে লাভ হবে ইরানের তরুণদেরই। তাই তরুণদের বড় অংশ রুহানির দিকেই ঝুঁকেছেন। অন্তত ভোটের ফল তাই বলছে।

আরও পড়ুন: মার্কিন বায়ুসেনার বিমান অনুসরণ চিনের, দাবি আমেরিকার

প্রশ্ন হল এই জয়কে কী ভাবে দেখবে ট্রাম্পের আমেরিকা। কাকতালীয় ভাবে ইরানে যখন নির্বাচনের ফল প্রকাশ হচ্ছে, তখন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরবে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পরে ট্রাম্প ইজরায়েল, প্যালেস্তাইনও যাবেন। ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক সমঝোতার তীব্র বিরোধী ট্রাম্প। কিন্তু কিছু দিন আগেই, সমঝোতাটির নবীকরণে বাধা দেয়নি হোয়াইট হাউস। ইরানের থেকে সমঝোতার পক্ষে যে সদর্থক ইঙ্গিত আসছে তা কি গ্রহণ করবেন ট্রাম্প? বিশ্ব এখন এই প্রশ্নের উত্তর পেতে উন্মুখ।

Iran President Hassan Rouhani Iran Election Iran Election Result Iran
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy