সোমবার রাতে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার। আপাতত রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে রেখে তাঁর চিকিৎসা চলছে। সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে গিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, “তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক। তবে তিনি ভেন্টিলেশনে আছেন। লাইফ সাপোর্টে আছেন, এটা ঠিক নয়।”
সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো সূত্রে জানা গিয়েছে, খালেদার চিকিৎসা সহায়তার জন্য চিন থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল ইতিমধ্যেই এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছে। তারা সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ মেডিক্যাল বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে খালেদার চিকিৎসা এবং শারীরিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করে।
খালেদার চিকিৎসক আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সহায়তার জন্য চিনের পাঁচ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছেছে। মূল চিকিৎসক দল মঙ্গলবার পৌঁছাবে। দেশের একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, আমেরিকার জনস হপকিনস হাসপাতালের চিকিৎসক এবং লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের অধীন খালেদার চিকিৎসা চলছে। এতে সহায়তা দিতে চিনের চিকিৎসকেরাও যুক্ত হয়েছেন।”
সোমবার দুপুরে বিএনপি-র ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান জানান হাসপাতালের সিসিইউ-এ (করোনারি কেয়ার ইউনিট) চিকিৎসাধীন খালেদার শারীরিক পরিস্থিতির রবিবার রাত থেকে অবনতি হয়েছে। তিনি বলেন, “খালেদা জিয়া এখনও লড়াই করছেন আমাদের মাঝে ফিরে আসার জন্য। এখনও অবস্থা সঙ্কটজনক আছে। বলবার মতো কোনও অবস্থায় এখনও তিনি আসেননি। সারা জাতির কাছে দোয়া চাওয়া ছাড়া আর কিছু বলার নেই।”
আরও পড়ুন:
হাসপাতালের সূত্র উদ্ধৃত করে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি, কিডনির সমস্যা ঠিক না-হলে খালেদার শারীরিক অবস্থার উন্নতির সম্ভাবনা কম। তাঁর কিডনির সমস্যা অনেক পুরনো। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্টের কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরীক্ষার পর ফুসফুসে সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। সূত্রের খবর, বয়সজনিত কারণে পরিস্থিতি অনেক জটিল হয়ে উঠেছে। কারণ, তাঁর শরীরে আগে থেকেই একাধিক সমস্যা রয়েছে। একটির চিকিৎসা করতে গেলে অন্য রোগের উপর তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে। কিডনির কার্যকারিতা অনেকটা কমে গিয়েছে খালেদার। ফলে টানা চার দিন তাঁর ডায়ালিসিস করাতে হয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে খালেদার জ্যেষ্ঠপুত্র তথা বিএনপি-র কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে রয়েছেন। শনিবার সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে তিনি জানান, মাকে দেখার ইচ্ছা থাকলেও এই মুহূর্তে ‘কিছু রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে’ তিনি বাংলাদেশে ফিরতে পারছেন না।
৮০ বছর বয়সি বিএনপি নেত্রীকে দেখতে রবিবার সকাল থেকে ঢাকার হাসপাতালের বাইরে ভিড় জমেছে দলের নেতা-কর্মীদের। দলের কোনও কোনও নেতা হাসপাতালে ঢুকলেও খালেদার কাছাকাছি কেউ যেতে পারেননি। যেহেতু তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ রয়েছে এবং নিউমোনিয়া ধরা পড়েছে, তাই চিকিৎসকেরা বাড়তি সতর্ক। কাউকেই তাঁর কেবিনের কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।