ছবি: সংগৃহীত।
রবিবার সকাল থেকেই পরিস্থিতির উপর নজর রাখছিলাম। প্রশাসন জানিয়েছিল, যাঁদের বাড়ি ‘বায়ু’র কাছে, তাঁদের দ্রুত বাড়ি ছাড়তে হবে। এই ‘বায়ু’ হল ছোট ছোট খাল, যা নদী বা হ্রদ থেকে মেক্সিকো উপসাগরে গিয়ে মেশে।
আমাদের বাড়ির কিছু দূরেই বাফেলো বায়ু। রবিবার রাতে দেখি, বাগানে পায়ের পাতা ডোবা জল। কিন্তু অত রাতে আর কী করি! পরের দিন সকালে ড্রাইভ ওয়ে আর বাগানে জল থইথই। ভয় হচ্ছিল, সাপ বা অ্যালিগেটর চলে আসতে পারে! বাড়ির সামনে ফুট দুয়েক উঁচু একটা কল। সেটাও প্রায় ডুবে গিয়েছে। বুঝলাম, ঘরে যে কোনও সময় জল ঢুকবে! ভাগ্যিস আগের দিন রাতেই আমি আর আমার স্বামী ছোট ছোট আসবাব, দামি জিনিস দোতলায় তুলে রেখেছিলাম। একতলার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের লাইন বন্ধ করলাম। কিন্তু এক সময়ে বুঝি বাড়ি ছাড়তেই হবে। তাই সকাল এগারোটা নাগাদ ফেসবুকে পোস্ট করলাম, বাড়ি ছাড়তে হচ্ছে। কেউ সাহায্য করবেন।
হোয়াটসঅ্যাপে কিছু ফোন নম্বর ছড়িয়ে পড়েছিল, যাঁরা নিজস্ব নৌকো নিয়ে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। কিন্তু সবাই তো এঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। ফলে পৌঁছনো গেল না তাঁদের কাছেও। বারোটা নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম। সঙ্গী শুধু ব্যাকপ্যাক আর ছোট্ট স্যুটকেস। আমি, আমার স্বামী ও আমাদের ন’বছরের মেয়ে হাঁটু জল ঠেলে বড় রাস্তায় এসে উঠলাম। কিন্তু সেখানেও প্রায় এক কোমর জল! দেখলাম, অনেকেই ছোট ছোট নৌকো নিয়ে সাহায্য করছেন। আমি, মেয়ে আর মালপত্র উঠতেই বোঝাই হয়ে গেল সেই নৌকো। আমার স্বামীকে তাই এগোতে হল জল ঠেলেই।
চারিদিকে শুধু জল আর জল। সঙ্গে অঝোরে বৃষ্টি। এলাকার এক স্কুলে গিয়ে উঠলাম। আমাদের মতো আরও অনেকেই সেখানে উঠেছেন। তার পর দু’টো পিকআপ ট্রাকে চেপে আমার বন্ধুর বাড়ি পৌঁছলাম। খবর এল, আমাদের এলাকায় সকাল ৭টা থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত কার্ফু জারি হয়েছে। এমনকী পাশের এলাকাও নৌসেনার দখলে! জানি না, কবে সব ঠিক হবে। ইন্টারনেটে দেখলাম, বৃহস্পতিবার রাত থেকে স্বাভাবিক হতে পারে আবহাওয়া। এই ক’দিন কী ভাবে চলবে, কে জানে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy