পাকিস্তানের শাহবাজ় শরিফ সরকার সংবিধান সংশোধন করতে উদ্যোগী হয়েছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রাদেশিক সরকারের ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা। প্রাদেশিক সরকারের হাত থেকে কে়ড়ে নেওয়া হতে পারে অন্তত দু’টি মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণ। মঙ্গলবার সে দেশের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার সংবিধান সংশোধনের কথা ঘোষণা করার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলি এ নিয়ে সোচ্চার। কিন্তু সংবিধান সংশোধন করতে কোন প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হবে শরিফ সরকারকে? পর্যাপ্ত সমর্থন কি তাঁর দল পাবে?
কিছু দিন আগে বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারি সংবিধানের ২৭তম সংশোধন করা হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন। সেই থেকে জল্পনার জন্ম। মঙ্গলবার উপপ্রধানমন্ত্রী দার পাক পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সেনেটে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘সরকার সংবিধানের ২৭তম সংশোধন আনছে। শীঘ্রই তা আসবে। আমরা চেষ্টা করব যাতে আইন, সংবিধান মেনে এই সংশোধনের প্রস্তাব টেবিলে আনা হয়।’’ পাকিস্তানের বিরোধী দল পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) জানিয়েছিল, বেআইনি ভাবে সমস্ত প্রক্রিয়া না মেনেই সংবিধান পাল্টে দিতে পারে শরিফের দল। দার সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘সব নিয়ম মানা হবে। সংশোধনের প্রস্তাব টেবিলে আনা হল আর কোনও ভোটাভুটি হল না, সেটা সম্ভব নয়। সেটা হবেও না।’’
আরও পড়ুন:
পাকিস্তানে জল্পনা, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে প্রাদেশিক সরকারগুলির হাত থেকে কিছু ক্ষমতা কে়ড়ে নিতে চলেছে শরিফ সরকার। যুক্তরাষ্ট্রীয় সম্পদে প্রদেশগুলির অধিকার তাতে কিছুটা কমবে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্র উল্লেখ করে জানিয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রক এবং জনসংখ্যাকল্যাণ মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণও প্রাদেশিক সরকারের হাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের হাতে স্থানান্তর করে দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া, একটি নতুন সাংবিধানিক আদালত স্থাপন, দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিবর্তন এবং সংবিধানের ২৪৩ নম্বর ধারায় সশস্ত্র বাহিনী সংক্রান্ত যে বিষয় রয়েছে, তাতে কিছু বদল আনার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে ২৭তম সংবিধান সংশোধনে।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টে দু’টি কক্ষ। উচ্চকক্ষ সেনেটে ৯৬ জন সদস্য রয়েছেন। এ ছাড়া, নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে (এনএ) রয়েছেন ৩৩৬ জন সদস্য। সংবিধানে যে কোনও সংশোধনের জন্য এই দুই কক্ষ থেকে দুই তৃতীয়াংশ বা তার বেশি সমর্থন শাসকদলের প্রয়োজন। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে কাঙ্ক্ষিত সংশোধনের জন্য সমর্থন পেতে সমস্যা হবে না শরিফের দলের। কারণ, সেখানে ২৩৩ সদস্যের সমর্থন তাঁর পক্ষে রয়েছে, যা দুই তৃতীয়াংশের বেশি। তবে বাদ সাধতে পারে উচ্চকক্ষ। ৯৬ সদস্যের সেনেটে দুই তৃতীয়াংশের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য অন্তত ৬৪ জনের সমর্থন লাগে। শরিফের দলের রয়েছে কেবল ৬১টি সমর্থন। ফলে সংবিধান পাল্টাতে গেলে বিরোধী শিবির থেকেও অন্তত তিন জনের সমর্থন শরিফের প্রয়োজন হবে। বিরোধীরা ইতিমধ্যেই সরকারের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে।