Advertisement
E-Paper

‘অভিবাসী’ মহিলাকে পিছমোড়া করে মার পুলিশের! নিউ ইয়র্ক থেকে শিকাগো ক্ষোভ-বিক্ষোভ বাড়ছে ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ ঘিরে

ম্যাসাচুসেটসের অভিবাসী-পন্থী গোষ্ঠী ‘লা কোলাবোরাটিভা’র এক কর্মী তথা আইনজীবী মিলাগ্রোস ব্যারেটোর দাবি, তিনি শুক্রবার এক গুয়াতেমালান মহিলাকে মাটিতে ফেলে দিতে দেখেছেন। ছেলের সামনে মারধর করা হয় মহিলাকে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:১৩
আদালতে যাওয়ার পথে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হল মহিলাকে। পাশে কান্না ছেলের।

আদালতে যাওয়ার পথে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হল মহিলাকে। পাশে কান্না ছেলের। ছবি: রয়টার্স।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি নিয়ে উত্তাল আমেরিকা। অভিবাসী অভিযোগে নিউ ইয়র্ক সিটির আদালতের বাইরে এক মহিলাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল মার্কিন অভিবাসন দফতরের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে। পরে তাঁদের সন্দেহ ভুল প্রমাণিত হওয়ায় মহিলাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতত কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ওই আধিকারিককে।

শুক্রবার শিকাগোর অস্থায়ী বন্দিশালা (ডিটেনশন সেন্টার)-য় বিক্ষোভকারীদের প্রতিহত করতে ফাটানো হল কাঁদানো গ্যাসের শেল। এখনও চলছে ধরপাকড় এবং গ্রেফতারি। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, সেই সময়ে জখম হন হিলডা নামে এক মহিলা। তাঁর চোট এতটাই গুরুতর যে, হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আক্রমণাত্মক’ অভিবাসন নীতি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে উত্তাল আমেরিকার শহরগুলি। এক জন বন্দির মৃত্যু এবং দু’জনের আহত হওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে আরও। অন্য দিকে, অভিবাসন ইস্যুতে খোদ রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং পশ্চিমি বিশ্বকে তোপ দেগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর অবস্থানে অটল। সম্প্রতি তিনি রাষ্ট্রপুঞ্জকে কটাক্ষ করে করে বলেছেন, “আপনারা সকলে নরকে যাবেন।” ট্রাম্পের দাবি, রাষ্ট্রপুঞ্জের মদতে পশ্চিমের দেশগুলিতে অনুপ্রবেশ চলছে। অভিবাসীদের তীব্র বিরোধী হিসাবে পরিচিত ট্রাম্প দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হয়েই অনুপ্রবেশ এবং অভিবাসন রুখতে কড়া নীতি গ্রহণ করেছেন।

এই প্রেক্ষিতে গত কয়েক দিন ধরে আমেরিকার শহরগুলিতে অবৈধ ভাবে বসবাসের অভিযোগে প্রচুর মানুষকে আটক এবং গ্রেফতার করা হচ্ছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে দাবি, নিউ ইয়র্ক থেকে শিকাগো এমনকি, ওয়াশিংটনে অপরাধের রেকর্ড ছাড়াই গ্রেফতার করা হচ্ছে মানুষকে। অন্য দিকে, এই মাসের শুরুতেই আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের একটি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। যাতে আইসিই (মার্কিন অভিবাসন)-কে লস অ্যাঞ্জেলেস এলাকায় শুধুমাত্র জাতিগত, ভাষা বা অন্যান্য বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কোনও ব্যক্তিকে আটকাতে বাধা দেওয়া হয়েছে।

ম্যাসাচুসেটসের চেলসির অভিবাসী-পন্থী গোষ্ঠী ‘লা কোলাবোরাটিভা’র এক কর্মী তথা আইনজীবী মিলাগ্রোস ব্যারেটোর দাবি, তিনি শুক্রবার এক গুয়াতেমালান মহিলাকে মাটিতে ফেলে দিতে দেখেছেন। ওই মহিলা স্থায়ী বাসিন্দা। তার পরেও তাঁকে আক্রমণ করেছেন অভিবাসন কর্তারা। এক জন তাঁকে ঠেলে মাটিতে ফেলে দেন। আর এক জন পিছমোড়া করে ধরে থাকেন। কাঁদতে থাকে মহিলার নাবালিকা পুত্র। শুক্রবার রয়টার্স মাটিতে পড়ে থাকা এক মহিলার ছবি তুলেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, তাঁর হাত পিছনে চেপে ধরে রাখা হয়েছে। মহিলার ছেলে পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। ব্যারেটোর দাবি, ওই মহিলা তাঁর পরিবারের এক সদস্যের সঙ্গে আদালতের শুনানিতে যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই আইসিই আধিকারিকেরা তাঁদের গাড়ি থামান। গাড়ির দু’টি জানালা ভেঙে দেন এবং পরিবারের এক সদস্যকে হেফাজতে নেন। তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই মহিলার নাম হিলডা। তাঁর কাঁধে আঁচড় লেগেছে। পিঠে আঘাত লেগেছে। ফলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে তাঁকে।’’ তাঁর দাবি, দেখতে মার্কিনিদের মতো না-হলেই বাইরের লোক বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বন্দিশালায় রাখা হচ্ছে। অত্যাচার করা হচ্ছে। পুয়ের্তো রিকোর বাসিন্দা ওই মার্কিন নাগরিক বলেন, ‘‘আপনি কোথা থেকে এসেছেন, তা বিবেচ্য নয়। যদি আপনি দেখতে ল্যাটিনোর মতো হন, তা-হলেই আপনার উপর অত্যাচার হবে।’’

অন্য দিকে, মার্কিন অভিবাসন দফতর এই অভিযোগ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির অন্যতম প্রধান সমালোচক ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম। গত সপ্তাহে তিনি একটি আইনে স্বাক্ষর করেছেন। এতে আইসিই আধিকারিকেরা তাঁদের পরিচয় গোপন করার জন্য মুখে মাস্ক পরতে পারবেন না। যদিও ট্রাম্পের প্রশাসন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আধিকারিকদের মাস্ক পরতেই হবে। না-হলে তাঁদের লক্ষ্য করে আক্রমণ করার আশঙ্কা থাকছে।

Donald Trump Immigration Rules US Immigration Rules
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy