ভোট দেওয়ার পর ইমরান খান। ফাইল ছবি
ভারতীয় ক্রিকেটের কথা উঠলেই এক নিঃশ্বাসে দু’টো নাম বলেন তিনি। ধরে ধরে বুঝিয়েও দেন, ওই নাম দু’টো কী অপরিসীম অবদান রেখে গিয়েছে তাঁর প্রতিবেশী দেশের ক্রিকেটে। বিশ্বকাপ জেতা বাদ দিলে নিজের জীবনের সম্ভবত সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সেই দুই কিংবদন্তিকেই পাশে ডেকে নিলেন ইমরান খান।
১১ অগস্ট পাক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরানের শপথ অনুষ্ঠানে হাজির থাকার আমন্ত্রণ পেলেন সুনীল গাওস্কর এবং কপিল দেব। ডাক পেয়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার, বর্তমানে রাজনীতিক নভজ্যোৎ সিধু।
এবং আমির খান। পাঁচ বছর আগে ইমরান যখন ভারতে যান, এক অনুষ্ঠানে বলিউডের নায়ক তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘পাকিস্তান নিয়ে আপনার স্বপ্নটা আমার ভাল লেগেছে। প্রার্থনা করছি, তা সফল হোক। আপনি ভোটে জিতলে আপনার জয় সেলিব্রেট করতে নিশ্চয়ই আসব পাকিস্তানে।’’
ইমরান বুঝিয়ে দিলেন, ‘লগান’-এর ‘ভুবন’-এর সে দিনের কথাগুলো ভোলেননি তিনি। পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ (পিটিআই)-এর মুখপাত্র ফওয়াদ চৌধরি আজ পাক সুপ্রিম কোর্টের বাইরে সংবাদমাধ্যমকে খবরটা দেন। দলের তরফে গাওস্কর, কপিল, সিধু এবং আমিরকে শপথে আমন্ত্রণের কথা জানান তিনি।
আর নরেন্দ্র মোদী? কাল শোনা গিয়েছিল, ভারতের প্রধানমন্ত্রী-সহ সার্ক রাষ্ট্রপ্রধানদের শপথে ডাকতে পারেন ইমরান। কিন্তু বিশেষ সূত্র উদ্ধৃত করে এ দেশের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে পাক বিদেশ মন্ত্রকের মতামত চেয়েছে পিটিআই।
দলের দুই বরিষ্ঠ নেতা আজ পাক বিদেশসচিব তেহমিনা জানজুয়ার সঙ্গে দেখা করে জানতে চান, এই অল্প সময়ের মধ্যে মোদী-সহ এত জন রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো সম্ভব কি না। বিদেশ মন্ত্রক জানায়, বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং এ ক্ষেত্রে পরিপ্রেক্ষিত বিচার করে দেখতে হবে। তবে সূত্রের দাবি, মোদী আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করলে ইমরান যে বড়সড় বিড়ম্বনায় পড়বেন, বিদেশ মন্ত্রক তা বুঝিয়ে দিয়েছে পিটিআই নেতাদের। মুখপাত্র জানান, তাঁরা বিদেশ মন্ত্রকের উত্তরের অপেক্ষা করছেন।
বুধবারের সন্ধেয় অবশ্য ঝড় তুলল তিনটে নামই। গাওস্কর-কপিল-আমির। উঠে এল অনেক দিন আগেকার একটা ভিডিয়ো। কমেন্ট্রি বক্সে রামিজ রাজা বলছেন, মাঠেই ইমরান তাঁর বোলিংয়ের বিরুদ্ধে গাওস্করের ব্যাটিং দেখে শিখতে বলতেন সতীর্থদের। বলতেন, ‘‘দেখো ইয়ে ক্যায়সে খেলতা হ্যায়।’’ রামিজ ‘কাপ্তান’-এর গলা নকল করতেই গাওস্কর বলে উঠলেন, ‘‘সাবধান র্যাম্বো! তুমি যাকে নকল করছ, সে কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হতে পারে!’’
গাওস্করকে যেমন তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত, গোছানো ইনিংস, জোরে বোলিংয়ের বিরুদ্ধে একা কুম্ভ হয়ে লড়ে যাওয়ার জন্য কুর্নিশ করে এসেছেন ইমরান, তেমনই কপিলকে এক বার নিজের থেকেও বড় অলরাউন্ডার বলেছিলেন। বলেছিলেন, পেস বোলিংয়ে ভারতের প্রত্যাঘাতের মুখ কপিল ব্যাট হাতেও ম্যাচের রং বদলে দিতেন বারবার। পাক ভোটের ফল বেরোনোর পরে উচ্ছ্বাস লুকোননি কপিলও। আর সিধু বলেছিলেন, ‘‘ডুবন্ত নৌকাকে বাঁচাতে এমন একটা সাচ্চা লোকেরই দরকার, যে নেতৃত্ব দেয় সামনে থেকে।’’
সকলেই কি যাবেন শপথ অনুষ্ঠানে? আজ রাত পর্যন্ত শুধু সিধুই জানিয়েছেন, আমন্ত্রণ গ্রহণ করছেন তিনি। সন্দেহ নেই, দুর্লভ ফ্রেমের অপেক্ষায় ইসলামাবাদ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy