E-Paper

অপরাধ প্রমাণ হলে রাজনীতি ছাড়ব: ইমরান

লাহোর হাই কোর্টের নয়া নির্দেশ আসার আগে ফের পুলিশি অভিযানের আঁচ করে ইমরানের বাড়ির চারপাশ ‘শিপিং কন্টেনার’ দিয়ে ঘিরে ফেলেন তাঁর সমর্থকেরা। তৈরি করা হয় দুর্ভেদ্য বলয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩ ০৮:১২
A Photograph of people with placards

দলীয় প্রতীক ব্যাটের আদলে তৈরি প্ল্যাকার্ড হাতে পিটিআই সমর্থক। ইমরানের বাড়ির সামনে। ছবি: রয়টার্স।

আরও ২৪ ঘণ্টার স্বস্তি! লাহোর হাই কোর্ট বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতার করা যাবে না। বিচারক জ়েবা চৌধরি এবং ইসলামাবাদ পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলাতেও স্বস্তি ইমরানের। তাতে ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত আজ জানিয়েছে, ইমরানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা ২০ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত রাখা হল। তবে তোশাখানা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানায় স্থগিতাদেশের জন্য ইমরানের আবেদন আজ খারিজ করে দিল ইসলামাবাদের নিম্ন আদালত।

লাহোর হাই কোর্টের নয়া নির্দেশ সামনে আসার পরে আজ সন্ধ্যায় টুইটারে ইমরানের একাধিক ভিডিয়ো বার্তা সামনে আসে। সেখানে ফের নিজেকে নির্দোষ দাবি করে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান বলেন, “কখনও আইন ভাঙিনি। আজ লিখে দিচ্ছি, ৮৫টি মামলা রয়েছে আমার বিরুদ্ধে। একটাও প্রমাণ করে দেখাক। কারও আসার প্রয়োজন নেই, আমিই রাজনীতি ছাড়ব।”

তাঁকে গ্রেফতারের জন্য রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন ইমরান। তাঁর কথায়, “পাকিস্তানে এক জনকে গ্রেফতারের জন্য কোনও বাহিনীর এ ধরনের মরিয়া প্রচেষ্টা আগে কখনও দেখা যায়নি। মনে হচ্ছে, আমি দেশের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবাদী। গোটা দেশ আমাকে ৫০ বছর ধরে চেনে... পুলিশ ও রেঞ্জার্স পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধানকে গ্রেফতার করতে পৌঁছে যাচ্ছে! কী আমার অপরাধ?” এর পরেই নওয়াজ় শরিফের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ইমরান বলেন, “লন্ডনে বসেও উনি ভয় পেয়ে গিয়েছেন। ওঁর পরিকল্পনা হল, ‘প্রথমে ইমরানকে জেলে ঢোকাও তার পরে আমি আসব।’ ওঁকে বলছি, আমাকে জেলে পুরলে এমন পরিস্থিতি হবে যে, (আপনার) হাল খারাপ হয়ে যাবে।” তাঁর লড়াই দেশ ও আগামী প্রজন্মের জন্য বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। আজ ফের তিনি দাবি করেছেন, পুলিশ হেফাজতে তাঁকে মেরে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে।

আজই পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ দেশের সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে রাজনৈতিক ও আর্থিক সঙ্কটের সমাধানে আলোচনায় বসার আবেদন জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, তোশাখানা মামলায় আদালতের নির্দেশে ইমরানকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ সক্রিয় হতেই প্রবল প্রতিরোধ আসে ইমরানের অনুগামীদের তরফে। মঙ্গল ও বুধবার ইসলামাবাদ পুলিশ, পঞ্জাব পুলিশ এবং রেঞ্জারদের যৌথ বাহিনী ইমরানের লাহোরের জ়ামান পার্কের বাড়ি ঘিরে ফেলে। দু’পক্ষের তীব্র সংঘাত বাধে। এর পরেই দেশের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।

গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে মিনার-এ-পাকিস্তানের চারপাশে পিটিআই সমর্থকদের মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে লাহোর হাই কোর্ট। এর পাশাপাশি বিচারপতি সালিম শেখ জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনে দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে বিশ্বের দরবারে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি ধাক্কা খাচ্ছে।

এ দিকে তাঁরই প্ররোচনায় যৌথ বাহিনীর সঙ্গে পিটিআই সমর্থকেরা খণ্ডযুদ্ধে জড়িয়েছে বলে অভিযোগ তুলে পিটিআই প্রধান ইমরানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসদমন আইনে মামলা করেছে প্রশাসন। পিটিআই সমর্থকদের বিরুদ্ধেও এফআইআর করা হয়েছে। এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে, ইমরানের নির্দেশেই সংঘর্ষ জড়িয়েছিলেন তাঁর সমর্থকেরা। এফআইআরে সশস্ত্র ব্যক্তিদের বেআইনি জমায়েত, আদালতের সমন নিতে অস্বীকার, ন্যায়বিচারে বাধা-সহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। পিটিআই সমর্থকদের আক্রমণে ইসলামাবাদ পুলিশের ডিআইজি-সহ ৬৩ জন পুলিশকর্মীর আহত হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। পঞ্জাব পুলিশের প্রধান উসমান আনোয়ার জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ মেনেই তিনি পুলিশ পাঠিয়েছিলেন ইমরানের বাড়ি।

আজ লাহোর হাই কোর্টের নয়া নির্দেশ আসার আগে ফের পুলিশি অভিযানের আঁচ করে ইমরানের বাড়ির চারপাশ ‘শিপিং কন্টেনার’ দিয়ে ঘিরে ফেলেন তাঁর সমর্থকেরা। তৈরি করা হয় দুর্ভেদ্য বলয়। দুপুর ১২টা নাগাদ ইমরানের জয়ধ্বনি দিতে দিতে লাঠি-রড নিয়ে ফের ইমরানের বাড়ির সামনে জটলা করেন পিটিআই সমর্থকেরা। পাক পঞ্জাব প্রদেশের মন্ত্রী আমির মিরের অভিযোগ, ইমরানের সমর্থকদের মধ্যে মিশে গিয়েছিল জঙ্গিরা। যদিও ইমরান ঘনিষ্ঠশফকত মেহমুদ একে মিথ্যা প্রচার বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Imran Khan Pakistan

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy