সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের একটি শ্রীলঙ্কা-বিরোধী প্রস্তাবের ভোটাভুটি থেকে সরে গিয়ে কলম্বোর দিকে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে নয়াদিল্লি। আবার কলম্বোও চিনা করোনা প্রতিষেধক পরিহার করে ভারতের উপরেই প্রতিষেধকের প্রশ্নে আস্থা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দু’দেশের এই নব্যসখ্যের বাতাবরণে, এ বার ভারত-শ্রীলঙ্কা নিরাপত্তা ক্ষেত্রে নতুন গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এপ্রিল মাসের শেষের দিকে ভারত সফরে আসতে পারেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তবে এখনও সরকারি ভাবে এ ব্যাপারে মুখ খোলা হয়নি। সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর সফরে মূল লক্ষ্য থাকবে দু’দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ক্ষেত্রে নতুন চুক্তি অথবা সমঝোতাপত্র। জানা গিয়েছে, শ্রীলঙ্কায় আল কায়দা এবং আবু সইফ নেটওয়ার্ক গোপন সেল তৈরি করছে বলে জানতে পেরেছে রাজাপক্ষে সরকার। সেক্ষেত্রে শুধু ওই দ্বীপরাষ্ট্রটিই নয়, গোটা দক্ষিণ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তায় তার প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা ভারতেরও।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ভারতের সঙ্গে এই জঙ্গি নেটওয়ার্ক নিয়ে ঘনিষ্ঠ ভাবে যোগাযোগ রাখছে কলম্বো। ভারতীয় গোয়েন্দাদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে এদের সঙ্গে পশ্চিম এশিয়া এবং দক্ষিণ ও পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলির যোগাযোগ সংক্রান্ত অনুসন্ধানে। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রের মতে, শ্রীলঙ্কা গত কয়েক বছর ধরেই ইসলামি সন্ত্রাসবাদীদের ডেরা হয়ে উঠেছে। সমুদ্রপথে বিভিন্ন অপরাধ চালানোর বন্দর হিসেবে ওই দেশকে কাজে লাগানোর বিষয়টি তো ছিলই। ২০১৯ সালের এপ্রিলে ইস্টারের রবিবার শ্রীলঙ্কার একাধিক গির্জা এবং হোটেলে জঙ্গি হামলার পরে গোটা বিষয়টি নিয়ে স্পর্শকাতরতা বেড়েছে সে দেশে। শুরু হয়েছে সেখানকার মুসলিমদের উপরে নানা ধরনের নজরদারিও। ২০১৯ সালের নভেম্বরে গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরে শ্রীলঙ্কা থেকে মৌলবাদ উৎখাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে যুদ্ধের সময়ে জাতীয় সুরক্ষার নামে শ্রীলঙ্কার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে জোট গড়তে ভারতের পিছিয়ে থাকার কোনও কারণ নেই ঠিকই, এবং মোদী সরকার এ ব্যাপারে আগ্রহী। এর ফলে শুধু পাকিস্তান নয়, শ্রীলঙ্কার চিনের প্রতি অতি নির্ভরতাও কমানো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু সে দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে যখন বারবার প্রশ্ন উঠছে, তখন এই বিষয়টিকেও মাথায় রাখতে হবে সাউথ ব্লককে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy