Advertisement
E-Paper

সীমান্তে জামাত, উদ্বেগে ভারত 

ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে নির্বাচনে জামাতে ইসলামির প্রার্থীদের বৈধ ঘোষণা করল বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধন হারানো মৌলবাদী জামাতের প্রার্থীরা বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শিস’ নিয়ে প্রার্থী হওয়ায় কমিশনে আপত্তি জানিয়েছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৯
ভোটের প্রচারে আওয়ামি লিগের সমর্থকরা। ছবি: রয়টার্স।

ভোটের প্রচারে আওয়ামি লিগের সমর্থকরা। ছবি: রয়টার্স।

ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে নির্বাচনে জামাতে ইসলামির প্রার্থীদের বৈধ ঘোষণা করল বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধন হারানো মৌলবাদী জামাতের প্রার্থীরা বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শিস’ নিয়ে প্রার্থী হওয়ায় কমিশনে আপত্তি জানিয়েছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগ। কিন্তু রবিবার রাতে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও নিবন্ধিত দল বাইরের কাউকে প্রার্থী করলে আইনত তা নাকচ করার বিধান নেই। বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘‘কেউ জামাতের প্রার্থী নন। বিএনপি যাঁদের প্রতীক দিয়ে প্রার্থী ঘোষণা করেছে— তাঁরা সকলেই বিএনপির প্রার্থী।’’

কিন্তু ভারতের উদ্বেগ কেন বাড়ল?

বিদেশ মন্ত্রকের সূত্রের ব্যাখ্যা, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে পাকিস্তানের পক্ষ নেওয়া কট্টর মৌলবাদী দল জামাতে ইসলামি আজও পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ।

পাক গুপ্তচর সংগঠন আইএসআইয়ের সহযোগিতায় ভারতের সীমান্ত বরাবর যাবতীয় অপকর্মের হোতা এই দলের নেতারা। গরু, মাদক, সোনা ও জাল নোটের কারবারের নাটের গুরু তারা। ২০০১-২০০৬ বিএনপির শরিক হিসেবে ক্ষমতায় থেকে সীমান্তবর্তী এলাকাকে জঙ্গিদের ঘাঁটিতে পরিণত করেছিল জামাত। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরুর পরে বসিরহাট সীমান্তের উল্টো দিকে সাতক্ষীরা এবং মালদহ-মুর্শিদাবাদের সংলগ্ন রাজশাহি ও চাঁপাই নবাবগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকাকে বিচ্ছিন্ন করে ‘মিনি পাকিস্তান’ তৈরি করেছিল জামাতের সশস্ত্র কর্মীরা।

বিএনপি এ বারে যে ২৫টি আসনে জামাতের নেতাদের প্রার্থী করেছে, তাদের অধিকাংশই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের সীমান্তবর্তী এলাকা সাতক্ষীরা, খুলনা, বগুড়া, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, সিলেট এবং চট্টগ্রামে। বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র বলছেন, ক্ষমতায় আসার পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গি ও মাদকের বিরুদ্ধে ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেন। ধারাবাহিক অভিযানে সীমান্তের চোরাচালানে অনেকটাই লাগাম পরানো সম্ভব হয়। ভারতের অর্থনীতিকে দুর্বল করার জন্য পাকিস্তানে ছাপা জাল ভারতীয় নোট বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জের সীমান্ত দিয়ে যে ভাবে ঢুকতো, তাকেও অনেকটা বাগে আনা গিয়েছে। বিএনপি জামাতের নেতাদের এই সব এলাকায় প্রার্থী করায় তাদের জেতাতে ফের সক্রিয় হয়েছে চোরাচালানিরা। যা ভারতের মাথাব্যথার কারণ। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা খবর পেয়েছেন, বাংলাদেশে ধারাবাহিক অভিযানে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের নানা জায়গায় লুকিয়ে থাকা জামাতের জঙ্গি কর্মীরাও দলের নেতাদের জেতাতে সক্রিয় হয়েছে।

বাংলাদেশের গোয়েন্দারা তথ্য পেয়েছেন, আইএসআইয়ের নির্দেশেই জামাতের এই ২৫ নেতা-সহ বেশ কয়েক জনকে প্রার্থী করেছে বিএনপি। এঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই জঙ্গি-ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ রয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের কয়েক জনও এর মধ্যে রয়েছেন। পাকিস্তানের আশা, এই প্রার্থীরা জয়ী হলে ফের সীমান্তে ভারত-বিরোধী অপকর্ম জোরদার করা যাবে। এই তথ্য ভারতকেও দিয়েছে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।

এই পরিস্থিতিতে ভারতের সীমান্তরক্ষীরাও নজরদারি জোরদার করেছে। সোনা ও মাদক নিয়ে বেশ কয়েক জন চোরাচালানিকে সম্প্রতি সীমান্তে আটক করা হয়েছে। বাংলাদেশে ভোটের আগে অস্ত্র ও অর্থ যাতে সীমান্ত পেরিয়ে পড়শি দেশে যেতে না-পারে, সে বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হছে।

Bangladesh General Election Bangladesh Election Commission BNP ISIS India Bangladesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy