Advertisement
E-Paper

ইরান-মার্কিন সংঘাত মেটাতে দৌত্য দিল্লির

আজ আমেরিকার প্রতিরক্ষাসচিবের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৫৬
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালায়। —ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালায়। —ফাইল চিত্র।

উপসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য পুরোদস্তুর কূটনৈতিক দৌত্য শুরু করে দিয়েছে ভারত। আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার এ কথা জানিয়ে বলেছেন, ‘‘পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে আলোচনা করে উত্তেজনা কমানোর সূত্র খুঁজতে কথাবার্তাও শুরু করে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারত চায় ওই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরুক।’’ রবীশ জানিয়েছেন, আমেরিকা-ইরান সংঘাত নিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের কথা হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ওমান, কাতার, জর্ডন এবং আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে।

পাশাপাশি আজ আমেরিকার প্রতিরক্ষাসচিবের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ইরান ও আমেরিকার মধ্যে উত্তেজনা নিয়ে তাঁরাও আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লি। কী ভাবে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়, কথা হয়েছে তা নিয়েও। সকালে জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা বলেছেন রাজনাথ।

কূটনৈতিক সূত্রের দাবি, ভারতের তরফে শান্তি ফিরিয়ে আনতে আপৎকালীন ভিত্তিতে তৎপরতা শুরু করার কারণ মূলত বাণিজ্যিক এবং পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে সংযোগ রুদ্ধ হয়ে‌ যাওয়ার আশঙ্কা। পাশাপাশি এটাও বলা হচ্ছে যে, যুযুধান দুই পক্ষের সঙ্গে আলাদা করে এবং আলাদা কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চাঙ্গা রাখার চেষ্টাটা নয়াদিল্লির বিদেশনীতির অগ্রাধিকারের মধ্যে পরে। সম্প্রতি এই সংঘাত শুরু হয়ে যাওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলতে পারছে ভারত। কিন্তু পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠলে নিরপেক্ষ থাকাটা সম্ভব হবে না সাউথ ব্লকের। তাই সেই পর্যায়ে উত্তেজনার পারদ চড়ার আগেই শান্তি ফিরে এলে নয়াদিল্লির পক্ষেও তা স্বস্তির কারণ।

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ইরানের সঙ্গে নিরাপত্তা এবং শক্তিক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়টি ক্রমশ তলানিতে এসে ঠেকলেও চাবাহার বন্দর এখন দু’দেশের সম্পর্কের প্রধান এবং একমাত্র স্নায়ুকেন্দ্র। এই বন্দরের উন্নয়নে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছে ভারত। শুধু তাই-ই নয়, পাকিস্তানকে এড়িয়ে আফগানিস্তান এবং পশ্চিম এশিয়ার বাজারে পৌছানোর এটি একমাত্র চাবিকাঠিও বটে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঐতিহাসিক সম্পর্কের মোড়কে বারবার ভারত-ইরান সম্পর্ককে

তুলে ধরা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে সেই সম্পর্ক মসৃণ থাকেনি। ইরান বরাবরই ভারতীয় সংস্থাগুলিকে তেল বিক্রির প্রশ্নে রাশিয়া অথবা চিনকে সামনে নিয়ে এসে দরাদরিতে সুবিধা পেতে চেয়েছে। একই ভাবে চাবাহার বন্দর প্রকল্প রূপায়নের ক্ষেত্রেও বারবার ঠোক্কর খেতে হয়েছে ভারতকে। নয়াদিল্লির অভিযোগ, গত তিন বছরে তিন বার মৌলিক শর্ত বদল করে অযথা দেরি করিয়েছে তেহরান। আফগানিস্তান নীতি নিয়েও ভারতের সঙ্গে ইরানের ব্যবধান বিস্তর। ইরান মনে করে আফগানিস্তানে আমেরিকার সেনা থাকায় তাদের সমস্যা বাড়ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানে মার্কিন ঘাঁটি আক্রমণ করাটাও ইরানের পক্ষে অস্বাভাবিক নয়।

তবে বৃহত্তর স্বার্থে ইরান এবং আমেরিকার মধ্যে শান্তি ফেরানোর প্রয়াসে শরিক হওয়া নতুন বছরে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে মোদী সরকারের কাছে।

India PMO Delhi Iran USA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy