Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
China

চিনকে বার্তা দিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে ভারত

প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একাধিপত্য নিয়ে সরব বিশ্বের অনেক দেশই।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:০৭
Share: Save:

গত কাল থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে দু’বছরের মেয়াদ শুরু করল ভারত। আর শুরুতেই চিনের উদ্দেশে বার্তা দেওয়া হল নাম না-করে। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি নিউইয়র্ক থেকে জানালেন, “আইনের শাসন এবং উন্মুক্ত, উদার, ন্যায্য এবং সমবণ্টনের নীতির প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে কোনও দ্বিধা নেই। বাংলাদেশের সঙ্গে জলসীমান্ত ভাগ করে নেওয়ার কারণে আমরা রাষ্ট্রপুঞ্জের ট্রাইবুনালের দ্বারা পুরস্কৃতও হয়েছি।” তাঁর বক্তব্য, “সদস্য হিসেবে এর আগের মেয়াদেও ভারত এই নীতিগুলি থেকে পিছু হটেনি। এ বারেও হটবে না। সমস্ত উন্নয়নশীল দেশের সাধারণ স্বার্থের জন্য গলা তুলব আমরা।”

প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একাধিপত্য নিয়ে সরব বিশ্বের অনেক দেশই। এই বিষয়ে গত এক বছরে ভারত অনেকটাই সক্রিয়তা বাড়িয়েছে দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক ভাবে। বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত ভাবে চিন, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এবং দক্ষিণ চিন সাগরে অন্য অনেক দেশেরই স্বার্থে আঘাত করছে, আন্তর্জাতিক আইন মানছে না— এই অভিযোগ আসিয়ানের সদস্যদেশগুলি ছাড়া আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ফ্রান্সের। পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলে চিনের সঙ্গে সংঘাত চলাকালীন ভারত এই নিয়ে প্রকাশ্যে সরব হচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু আজ তিরুমূর্তির মন্তব্য থেকে স্পষ্ট, রাষ্ট্রপুঞ্জে চিনের সঙ্গে কূটনৈতিক পাঞ্জা কষার জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়েছে সাউথ ব্লকে।

চিন নিয়ে প্রছন্ন হলেও আজ পাকিস্তান নিয়ে প্রখর ভাবেই রাষ্ট্রপুঞ্জে সরব হয়েছেন ভারতীয় এই কূটনীতিক। তাঁর কথায়, “কোভিডের মধ্যে পাকিস্তান কেবলমাত্র আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বাড়ানোয় সহায়তা করে গিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সেক্রেটারি জেনারেলের আন্তর্জাতিক সংঘর্ষবিরতির ধারটুকুও ধারেনি তারা। পাশাপাশি নিজেরাই যেন সন্ত্রাসবাদের শিকার এমন একটা ভাব দেখিয়েছে।” আগামী দিনে ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চকে কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সরব হবে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার জন্যও কাঠখড় পোড়ানো হবে। তিরুমূর্তির কথায়, “জঙ্গিরা ক্রমশ নাশকতার জন্য চতুরতর পন্থা নিচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে মৌলবাদ ছড়ানো হচ্ছে। ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’, ড্রোন-এর মতো প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে। সন্ত্রাসবাদে পুঁজির জোগান আজও একটি বড় সমস্যা। গণতন্ত্রের উদারতার সুযোগ নিচ্ছে জঙ্গি সংগঠনগুলি। এমনকি এই অতিমারির মধ্যেও যা বহাল তবিয়তে বজায় থেকেছে।” আফগানিস্তনে তালিবানদের বাড়বাড়ন্তের প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।

এখনও পর্যন্ত, ভারত মোট ৭ বার নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যপদ পেয়েছে। শেষ বার পেয়েছিল ১০ বছর আগে। তবে অতিমারির মধ্যে ভূকৌশল এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতি যখন নতুন অবয়বে দেখা দিচ্ছে, তখন এই পদকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় স্বার্থে কতটা ফায়দা কাজে তুলতে পারে নয়াদিল্লি এখন সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

China India Security
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE