Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বেজিংয়ে বৈঠক সুষমার, চিনের সন্ত্রাস-বিরোধী বিবৃতি আদায় দিল্লির

রাশিয়া-চিন-ভারত এই ত্রিপাক্ষিক অক্ষের (রিক) বৈঠকের পর যে ত্রিদেশীয় বিবৃতিতে ‘সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘর’কে ধুলিস্যাৎ করার জন্য নীতিগত সমন্বয় আরও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

ত্রিপাক্ষিক: চিনে সুষমা। ছবি: পিটিআই।

ত্রিপাক্ষিক: চিনে সুষমা। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৩
Share: Save:

কূটনৈতিক ভাবে পাকিস্তানের ওপর চাপ তৈরি করার প্রশ্নে আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ এগোলো নয়াদিল্লি। রাশিয়া-চিন-ভারত এই ত্রিপাক্ষিক অক্ষের (রিক) বৈঠকের পর যে ত্রিদেশীয় বিবৃতিতে ‘সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘর’কে ধুলিস্যাৎ করার জন্য নীতিগত সমন্বয় আরও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। পুলওয়ামা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের জঙ্গি ভূমিকা বৈঠকে গুরুত্ব পেয়েছে। হামলার নিন্দাও করা হয়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্রের খবর। কূটনৈতিক শিবিরের মতে— যে চিন সব বিষয়ে পাকিস্তানের পাশে থাকে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাক ভূমিকার সমালোচনায় তাকেও সামিল করা সাউথ ব্লকের কাছে স্বস্তির। ভবিষ্যতে ভারত-পাকিস্তানের দ্বৈরথ কোন দিকে এগোবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু যে দিকেই এগোক, চিনের এই সন্ত্রাস-বিরোধী বিবৃতি ভারতের হাতে কূটনৈতিক অস্ত্র তুলে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।

মস্কোয় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুধবার বিবৃতিতে বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক যে দিকে এগোচ্ছে তাতে তাঁরা ঘোর উদ্বিগ্ন। তাঁর কথায়, ‘রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ভাবে সমস্যা মিটিয়ে ফেলার উদ্যোগ শুরু করতে হবে। এ কাজে সহযোগিতা করার জন্য আমরা তৈরি।’ সংযত আচরণ করার জন্য ভারত ও পাকিস্তানকে পরামর্শ দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জও।

রিক-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সমস্ত রকম সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় নীতিগত সহযোগিতা আরও ঘনিষ্ঠ করা এবং বাস্তবসম্মত সমন্বয়ের ব্যাপারে আমরা সহমত হয়েছি। সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সন্ত্রাসবাদ এবং মৌলবাদের আঁতুড়ঘরকে ধ্বংস করা।’ পুলওয়ামা হামলা নিয়ে আজকের বৈঠকে রাশিয়ার পাশাপাশি চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গেও দীর্ঘ আলোচনা করেন সুষমা স্বরাজ। সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর শব্দটিতে চিন সিলমোহর দেওয়ার ফলে নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে পড়েছে ইমরান সরকার। বিবৃতিটিতে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস-বিরোধী উদ্যোগে প্রত্যেকটি দেশ এবং তাদের গোয়েন্দা সংস্থা মূল ভূমিকা পালন করে। জঙ্গি সংগঠনকে কোনও ভাবেই সমর্থন করা যায় না। রাজনৈতিক অথবা ভূকৌশলগত কারণে কোনও দেশ জঙ্গিদের ব্যবহার করবে, সেটাও মানা যায় না।’ বলা হয়েছে— যে দেশ বা ব্যক্তি সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী কানুন অনুসারে তাদের শাস্তি বিধান করতে হবে।

আরও পড়ুন: সেনার পাশে দাঁড়িয়েই দেশের শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব হলেন রাহুলেরা

চিনের পাশাপাশি আমেরিকাও পাকিস্তানের সন্ত্রাস-বিরোধী ভূমিকা নিয়ে আজ স্বর তুলেছে। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী মাইক পম্পেও বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ আহমেদ কুরেশির সঙ্গে কথা বলেছি। পাকিস্তানের মাটিতে জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমি তাঁকে পরামর্শ দিয়েছি।’’ পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গেও কথা হয়েছে। গোটা অঞ্চলে শান্তি এবং নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য আমাদের নিরাপত্তা সমন্বয় বাড়ানোর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: জেনিভা সম্মেলনের শর্ত লঙ্ঘন, বায়ুসেনার পাইলটকে ফেরত দিক পাকিস্তান, দাবি ভারতের

দু’দেশকে সতর্ক করে দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইইউ কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিবৃতিতে বলেছে, ‘পুলওয়ামা হামলার পরে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তাতে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। দু’পক্ষকেই সংযত হতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে ফেলার দিকে এগোতে হবে।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE