Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Afghanistan Crisis

Afghanistan Crisis: আফগানিস্তানের মানবিক বিপর্যয় সামলাতে প্রয়োজন অন্তত ৬০ কোটি ডলার, সাহায্য করবে ভারতও

আফগানিস্তানের নয়া তালিবান সরকারকে মান্যতা দেয়নি বহু দেশই। ফলে যে মোটা অঙ্কের অর্থসাহায্য আসত বিভিন্ন দেশ থেকে, তা বন্ধ হওয়ার মুখে।

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

সংবাদ সংস্থা
জেনিভা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:২২
Share: Save:

তালিবান শাসনে আফগানিস্তানের মানবাধিকার ভয়ানক ভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে জানিয়ে বারবার সতর্ক করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। আজ জেনিভায় একটি বৈঠকে তারা জানাল, আফগানিস্তানের মানবিক বিপর্যয় সামলাতে অন্তত ৬০ কোটি ডলার অর্থসাহায্য প্রয়োজন। গোটা বিশ্বের কাছে তারা সাহায্যপ্রার্থী। জবাবে ভারত জানিয়েছে, তারা আগেও সাহায্য করেছে, এখনও করবে।
রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, আফগানিস্তান তালিবানের দখলে যাওয়ার আগে থেকেই দেশটির অর্ধেক জনসংখ্যা, অন্তত ১ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ বিশ্বের অর্থসাহায্যের উপরে নির্ভরশীল ছিলেন। আন্তর্জাতিক সংস্থাটির আশঙ্কা, এই সংখ্যা আরও বাড়বে। এর অন্যতম কারণ দু’টি— খরা ও অর্থাভাব।

আফগানিস্তানের নয়া তালিবান সরকারকে মান্যতা দেয়নি বহু দেশই। ফলে যে মোটা অঙ্কের অর্থসাহায্য আসত বিভিন্ন দেশ থেকে, তা বন্ধ হওয়ার মুখে। রাষ্ট্রপুঞ্জও বিপাকে। তালিবান অভ্যুত্থানে আফগানিস্তানে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন প্রকল্প বিপর্যস্ত। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস আজ জানিয়েছেন, আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে তাঁর সংস্থা। তিনি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জ এতটাই সঙ্কটে রয়েছে যে নিজের কর্মীদের বেতন পর্যন্ত দিতে পারছে না।’’

আন্তর্জাতিক সংস্থাটি জানিয়েছে, যে ৬০ কোটি ৬০ লক্ষ ডলার অর্থসাহায্য চাওয়া হচ্ছে তার এক-তৃতীয়াংশ ব্যবহার করা হবে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম’ (ডব্লিউএফপি)-এ। এই প্রকল্পের পর্যবেক্ষণ: অগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে যে ১৬০০ আফগানকে নিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছিল, তাঁদের ৯৩% খাদ্যাভাবে রয়েছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কারণ, অর্থাভাব।

ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের এই বৈঠক অত্যন্ত জরুরি ছিল। ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্ক সব সময়ই বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। এই ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব বজায় থাকবে। ডব্লিউএফপি-র অংশ হিসেবে বেশ কয়েক বছর ধরে আফগানিস্তানে প্রোটিন বিস্কুট পাঠায় ভারত। গত বছর ৭৫ হাজার মেট্রিক টন গম পাঠানো হয়েছিল। অন্তত ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে আফগানিস্তানে। অতীতের মতোই এখনও আফগানদের পাশে থাকতে চায় ভারত।’’

ডব্লিউএফপি-র উপ-আঞ্চলিক প্রধান আন্থিয়া ওয়েব বলেন, ‘‘এখন সময়ের সঙ্গে লড়াই। আফগানিস্তানের বাসিন্দাদের প্রাণ বাঁচাতে এগিয়ে আসতে হবে। মজুত খাদ্য যাতে কোনও ভাবে ফুরিয়ে না যায়, তার জন্য আমরা কার্যত ভিক্ষা চাইছি।’’ এ দিকে, গুতেরেস আজ বলেছেন, এই মুহূর্তে তালিবানকে সঙ্গে না নিলে আফগানিস্তানের মানুষকে সাহায্য করার কাজ এগোতে পারবে না। কাবুলের আর্থিক পরিস্থিতি ভেঙে পড়ার আগে অন্য দেশগুলির সাহায্য চেয়েছেন তিনি। আর্থিক বিপর্যয়ের আফগানিস্তানকে কী ভাবে রক্ষা করা যায়, তার পথ বিশ্বকে খুঁজে দেখতে হবে বলেই মনে করছেন মহাসচিব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-ও জানিয়েছে, অর্থের অভাবে আফগানিস্তানের কয়েকশো হু-পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার মুখে।

আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক বিপর্যয় সামলাতে আজ আমেরিকা ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলিকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছে চিনও। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে তারা। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান আজ বলেন, ‘‘তালিবানেরও উচিত নিজেদের প্রতিজ্ঞার কথা মনে রাখা এবং যাবতীয় সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম থেকে নিজেদের মুক্ত করা। বিশ্বের সকলের জন্যই ‘সন্ত্রাস’ আশঙ্কার, ভয়ের। আফগানিস্তান যাতে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর না হয়ে ওঠে, তার জন্য সন্ত্রাস-দমনে সব দেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী চিন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Afghanistan Crisis Taliban 2.0
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE