পহেলগাঁও কাণ্ডের প্রতিবাদের আঁচ পৌঁছেছে লন্ডনেও। সেখানে পাকিস্তানি হাই কমিশনের বাইরে শুক্রবার বিক্ষোভ দেখান প্রবাসী ভারতীয়দের একাংশ। তাঁদের হুমকির ইঙ্গিত দিয়ে বিতর্কে পাকিস্তানের এক সেনাকর্তা। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, প্রতিবাদীদের লক্ষ্য করে প্রকাশ্যে ‘গলা কেটে দেওয়ার’ ভঙ্গি করছেন কর্নেল তৈমুর রাহত (আনন্দবাজার ডট কম সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি)। আর তাতেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। রাহত লন্ডনে পাকিস্তান হাই কমিশনের সেনা এবং বায়ুসেনা উপদেষ্টা।
গত মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। তার প্রতিবাদে শুক্রবার লন্ডনে পাকিস্তান হাই কমিশনের সামনে বিক্ষোভ দেখান সেখানকার প্রবাসী ভারতীয়েরা। দলে ছিলেন মূলত হিন্দুরাই। তাঁদের হাতে ছিল ভারতের পতাকা, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড। সেই সব ব্যানার, প্ল্যাকার্ডে জঙ্গি হামলাকে ধিক্কার জানান তাঁরা। প্রতিবাদীদের মুখে ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্লোগান। হামলাকারী জঙ্গিদের মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। সেই নিয়েই পাকিস্তানি হাই কমিশনের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন প্রবাসী ভারতীয়েরা। তখনই পাকিস্তানের এই সেনা উপদেষ্টাকে হুমকির ইঙ্গিত করতে দেখা গিয়েছে। তাঁর হাতে ছিল ভারতীয় বায়ুসেনার জওয়ান অভিনন্দন বর্তমানের একটি ছবি। পাশে পাকিস্তানের পতাকা বালাকোট কাণ্ডের পরে এক পাক বিমানকে তাড়া করে ধাওয়া করার সময়ে সীমান্তের ওপারে পাকিস্তান ভূখণ্ডে ভেঙে পড়েছিল অভিনন্দনের বিমান। তাঁকে আটক করেছিল পাক সেনা। পরে ভারতের হাতে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর ছবি নিয়ে ওই পাক সেনা উপদেষ্টা কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়।
প্রবাসী ভারতীয় প্রতিবাদীদের অভিযোগ, তাঁরা যখন লন্ডনে পাকিস্তান দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তখন ভিতরে জোরে জোরে গান বাজানো হচ্ছিল। কর্মসূচির আয়োজকেরা বলেন, ‘‘ন্যায়বিচারের দাবিতে আমরা আজ প্রতিবাদ করছি। কিন্তু লজ্জাজনক ঘটনা হল এই যে, এই প্রতিবাদের মাঝেই পাকিস্তান হাই কমিশনের কর্মীরা ভিতরে জোরে জোরে উদ্যাপনের গান বাজাচ্ছেন। আমাদের ক্ষততে আরও বেশি করে অবমাননার আঘাত হানছেন। সারা বিশ্ব যখন শোকপ্রকাশ করেছে, তখন পাকিস্তান হাই কমিশনের এই আচরণ তাদের সহানুভূতি এবং মানবিক শিষ্টাচারের অভাবকেই প্রকট করে। তাদের এই অসংবেদনশীল আচরণকে ধিক্কার জানাই।’’ প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজকদের আরও অভিযোগ, এই হামলার সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে পাকিস্তানের।
প্রতিবাদীদের মধ্যে ছিলেন কয়েক জন ভারতীয়-ইহুদি। তাঁদের দাবি, পাকিস্তান আসলে সন্ত্রাসবাদে মদত দেয়। তাঁরা এ-ও জানিয়েছেন, এই লড়াইয়ে ভারতের পাশে রয়েছেন তাঁরা। কারণ, ইহুদিদেরও শত্রু হল ‘ইসলামিক সন্ত্রাসবাদ’।