আমেরিকায় ফের আক্রান্ত ভারতীয়।
দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ গেল বছর তিপান্নর এক ব্যক্তির। ভারতীয় বংশোদ্ভূত করুণাকর কারেঙ্গল ওহায়োর ফেয়ারফিল্ডে থাকতেন। ক্যামেলট ড্রাইভের কাছে একটি বড় দোকানে কাজ করতেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, গত সোমবার রাত দশটা নাগাদ দোকানেই কাজ করছিলেন করুণাকর। আচমকাই সেখানে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হানা দেয় দুই দুষ্কৃতী। পুলিশের বক্তব্য, তাদের উদ্দেশ্য ছিল ডাকাতি করা। করুণাকর বাধা দিতে গেলে তাঁকে গুলি করে ওই দু’জন। দমকল বিভাগে সঙ্গে সঙ্গে খবর যায়। তারাই করুণাকরকে স্থানীয় ওয়েস্ট চেস্টার হাসপাতালে ভর্তি করে। প্রায় পাঁচ দিন লড়াইয়ের পরে আজ সেখানেই মারা যান করুণাকর। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গুলির আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
প্রথমে করুণাকরের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি ফেয়ারফিল্ডের পুলিশ। ওহায়োতে তাঁর কোনও আত্মীয় থাকেন না। ভারতে যোগাযোগ করে তাঁর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশ। আক্রমণকারীদের এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। কারণ হামলার সময় মাথা ঢাকা জ্যাকেট পরে এসেছিল তারা। শুধু জানা গিয়েছে, এক জনের জ্যাকেটের রং ছিল হাল্কা, অন্য জনের গাঢ়।
ঘটনায় আতঙ্কিত ফেয়ারফিল্ডের বাসিন্দারা। করুণাকর যেখানে কাজ করতেন, তার আশপাশেই কাজ করেন কিম ক্যানন। তিনি বললেন, ‘‘ভাবাই যাচ্ছে না যে, দুষ্কৃতীরা এসে এক জনকে এ ভাবে মেরে ফেলতে পারে। ওরা যেখানে গাড়ি রেখেছিল তার কাছেই আমার অফিস। সে দিন রাতে সেখানে আমিও ছিলাম। রাস্তায় বেরোলে আমিও তো খুন হয়ে যেতে পারতাম। এটা আতঙ্কের বিষয়।’’
ভারতীয়দের উপর হামলার ঘটনা আমেরিকায় নতুন নয়। যত দিন যাচ্ছে, এই ধরনের আক্রমণ আরও বাড়ছে। চলতি মাসের গোড়াতেই শিকাগোয় তিরিশ বছরের এক ভারতীয় ছাত্রকে গুলি করে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীরা। গুরুতর আহত হন ওই ছাত্র। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে কানসাসে বর্ণবৈষম্যের শিকার হন দক্ষিণ ভারতীয় যুবক শ্রীনিবাস কুচিভোটলা। এক মার্কিন নাগরিক গুলি করে মেরে ফেলেছিল তাঁকে। এর কয়েক সপ্তাহের মাথায় ওয়াশিংটনের কেন্টে এক শিখ ব্যক্তিকে গুলি করা হয়। শ্রীনিবাসের মতো তাঁকেও দেশে ফিরে যেতে বলেছিল দুষ্কৃতীরা।
২০১৭ সালে আমেরিকায় ৫৮ হাজারেরও বেশি গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যু হয়েছে ১৪৭৬৩ জনের। আহত হয়েছেন প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বন্দুক আইনে রাশ টানার দীর্ঘ চেষ্টা করলেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওবামার ঠিক উল্টো মত প্রকাশ করেন।