—প্রতীকী চিত্র।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং ভূগাঠনিক কার্যকলাপের জেরে সমুদ্রের জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে। তার জেরে উপকূলবর্তী বহু এলাকা আগামী দিনে জলের তলায় চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমনই পরিস্থিতির মুখে ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান রাজধানী জাকার্তা। একই সঙ্গে যানবাহনের ক্রমবর্ধমান ভিড়ও জাকার্তাবাসীর সমস্যা দিন দিন বাড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নুসেনতারা শহরকে রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলায় উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। সেই শহর তৈরির কাজ শুরু হয়েছে পুরোদমে। কিন্তু নির্মাণকাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অতিবৃষ্টি। বৃষ্টির প্রকোপ রুখে শহর নির্মাণের কাজ যাতে অব্যাহত থাকে, তার সমাধানে এ বার ‘ক্লাউড সিডিং’ প্রযুক্তি অবলম্বন করছে ইন্দোনেশিয়া।
সাধারণ ভাবে কোনও খরা অধ্যুষিত অঞ্চলে কিংবা জল সরাবরাহ বাড়াতে ওই কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের আশ্রয় নেওয়া হয়। তবে নুসেনতারার ক্ষেত্রে অতিবৃষ্টি রুখতে আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে ক্লাউড সিডিংয়ের। বিষয়টা খোলসা করা যাক।
ইন্দোনেশিয়া প্রশাসনের লক্ষ্য, নুসেনতারার আশপাশের অঞ্চলে ক্লাউড সিডিং করা। যাতে ভবিষ্যতের রাজধানী থেকে বৃষ্টি সরিয়ে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে স্থানান্তর করা সম্ভব হয়। এই অভিনব পরিকল্পনার বাস্তবায়িত করতেই দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে ক্লাউড সিডিং করা হচ্ছে। যা এর আগে কখনও হয়নি।
আগামী ১৭ অগস্ট, ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা দিবসের দিন নতুন রাজধানী হিসেবে কাজ শুরু হতে চলেছে নুসেনতারায়। তার আগে নির্মাণকাজ শেষ ও শহরকে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তোলার প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। এরই মাঝে প্রবল বর্ষণে ব্যাহত নির্মাণকাজে গতি আনতেই ক্লাউড সিডিংয়ের সিদ্ধান্ত। অতিবৃষ্টি যে শহরের নির্মাণের কাজে ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে, তা জানিয়েছেন ঠিকাদারেরাও। তাঁদের আশঙ্কা এ ভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলতে থাকলে নির্মাণকাজ কোনও ভাবেই নির্ধারিত সময়ে শেষ করা সম্ভব নয়। বিষয়টি জানিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন ওই ঠিকাদারেরা। এর পরেই ‘ক্লাউড সিডিং’ প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ইন্দোনেশিয়া প্রশাসন নিয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুগত সংস্থা বিএমকেজি-র প্রবীণ আধিকারিক ট্রাই হানডোকো সেটো। ওই সংস্থার পূর্বাভাস, স্বাভাবিক হিসেবে নুসেনতারায় অগস্টের শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ার কথা।
বিজ্ঞানীরা অবশ্য জানাচ্ছেন, ক্লাউড সিডিংয়ে কৃত্রিম বৃষ্টিপাত তৈরি করা গেলেও তা জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটাতে পারে না। ইন্দোনেশিয়ায় গত সপ্তাহে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তা শেষ হতে চলেছে আগামিকাল, রবিবার। কাজ শেষ হলেই বোঝা যাবে, কতটা ফলপ্রসূ হল এই প্রক্রিয়া। আগামী দিনেও বৃষ্টি সরাতে ক্লাউড সিডিংয়ের আশ্রয় নেওয়া হবে কি না, তা-ও ঠিক হবে ওই মূল্যায়নের উপরে।
প্রশাসনের লক্ষ্য, আগামী ২০৪৫ সালের মধ্যে নুসেনতারায় ১৯ লক্ষ মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা। তবে এ ক্ষেত্রে সতর্ক করেছেন পরিবেশবিদরা। তাঁদের বক্তব্য, নতুন রাজধানী তৈরির জন্য বিপুল অরণ্যছেদনের প্রয়োজন। যা প্রকারান্তরে জলবায়ু পক্ষেই হানিকারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy