পরমাণু চুক্তি নিয়ে তৃতীয় দফার বৈঠকে বসল আমেরিকা এবং ইরান। শনিবার ওমানের রাজধানী মাস্কটে দু’দেশের তৃতীয় দফার প্রতিনিধি স্তরের আলোচনা শুরু হয়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের পরমাণু বিষয়ক নজরদারি সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’ (আইএইএ)-র প্রধান রাফায়েল গ্রোসি গত সপ্তাহেই ইরানের বিরুদ্ধে বিধান ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। এই আবহে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক নতুন মাত্রা পেয়েছে।
এর আগে চলতি মাসে মাস্কট এবং ইটালির রাজধানী রোমে দু’দফায় পরমাণু চুক্তি নিয়ে বৈঠক করেছে ওয়াশিংটন এবং তেহরান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, পরমাণু চুক্তি সই না করলে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানো হতে পারে। এই আবহে শনিবারের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বা পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ। রয়েছেন, দু’পক্ষের বিশেষজ্ঞরাও।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল ছয় শক্তিধর রাষ্ট্র— ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিন এবং আমেরিকা। চুক্তির নাম ছিল ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ)। তাতে স্থির হয়, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি বন্ধ রাখলে তেহরানের উপর বসানো আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা এবং অন্য কয়েকটি দেশ। এতে উভয় পক্ষই লাভবান হয়েছিল।
কিন্তু ২০১৬ সালে প্রথম বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে ট্রাম্প জানান, এই পরমাণু চুক্তি ওবামার ভুল পদক্ষেপ। এর ফলে আমেরিকার কোনও সুবিধা হয়নি। উল্টে লাভ হয়েছে ইরানের। ২০১৮ সালে তাঁর নির্দেশে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসে আমেরিকা। কিন্তু ২০২৪ সালে আইএইএ একটি রিপোর্টে জানায়, ফের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি শুরু করেছে ইরান। তাদের কাছে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়া।