বিদেশে অস্ত্র কারখানা তৈরি করছে ইরান! এমনটাই দাবি করলেন ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজ়িজ় নাসিরজ়াদা। শুক্রবার রাতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিয়ো বার্তায় আজ়িজ় বলেন, “আমরা বেশ কিছু দেশে অস্ত্র কারখানা তৈরি করেছি। কোন কোন দেশে, তা আমরা এখনই প্রকাশ্যে আনছি না।” গত জুন মাসে ইরান এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে ১২ দিন ধরে সংঘর্ষ চলেছিল। আমেরিকাও জড়িয়ে পড়েছিল সেই সংঘর্ষে। পরবর্তী সময়ে যুদ্ধবিরতি হলেও চাপা উত্তেজনা রয়েই গিয়েছে। এ অবস্থায় ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
ইরান-ইজ়রায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হলেও আমেরিকা এবং ইজ়রায়েল উভয়েই ইরানের উপর চাপ দিয়ে আসছে। ইরান পরমাণু শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা করলে আবার ইরানে হামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে দুই দেশই। পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে তেহরানও। সম্প্রতি ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজ়া আরিফ ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, ইজ়রায়েলের সঙ্গে আবার যে কোনও সময়ে সংঘর্ষ শুরু হতে পারে। আরিফের কথায়, ১২ দিনের রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষে যে থেমেছে, তা শুধুই একটি সাময়িক বিরতি। যে কোনও ধরনের সংঘর্ষের জন্য তেহরানের তৈরি থাকা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
এরই মধ্যে সামরিক মহড়াও চালিয়েছে ইরান। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার ওমান উপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের উত্তরাংশে ‘ইঘতেদার ১৪০৪’ নামে এক নৌযুদ্ধের মহড়া হয়েছে। সেখানে মূলত ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধের মহড়া দিয়েছে ইরানের নৌসেনা। যুদ্ধ মহড়ায় অংশ নিয়েছিল ‘গাইডেড মিসাইল ক্রুজার’ জেনেভেহ এবং ‘ডেস্ট্রয়ার’ গোত্রের যুদ্ধজাহাজ সাবালান। ওই মহড়ায় ‘নাসির’, ‘গাদির’, ‘কাদের’ নামের বিভিন্ন পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা হয়েছে বলে দাবি ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলির। এই চাপা উত্তেজনার মাঝেই ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, অন্য দেশেও অস্ত্র কারখানা তৈরি করছে তেহরান। যদিও সেখানে কী ধরনের অস্ত্র তৈরি হচ্ছে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।
আরও পড়ুন:
বস্তুত, জুন মাসে পশ্চিম এশিয়ার সংঘর্ষের সময়ে ইরানের ফোরডো, নাতান্জ় এবং ইসফাহান পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল আমেরিকার সামরিক বাহিনী। তবে ওই হামলায় ভূগর্ভস্থ পরমাণুকেন্দ্রের কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন এখনও রয়েছে। অনেকেরই দাবি, ওই হামলায় ইরানের পরমাণু গবেষণা হোঁচট খেলেও তা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া যায়নি।