টানা ১২ দিনের সংঘাতের পর ইজ়রায়েল এবং ইরান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু ‘শত্রু’কে বিশ্বাস করছে না তেহরান। যে কোনও মুহূর্তে এই যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে বলে মনে করছে তারা। যদি তা হয়, তবে কঠোর জবাব দিতে দু’বার ভাববে না ইরান রেভলিউশনারি গার্ড। এমনটাই মন্তব্য করলেন ইরানের সেনার চিফ অফ স্টাফ আবদোলরহিম মৌসাভি। দেশটির আধা সরকারি সংবাদ সংস্থা ফার্স এই তথ্য জানিয়েছে। রবিবার সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিদ বিন সলমনের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে মৌসাভির। সেখানেই ইজ়রায়েলের যুদ্ধবিরতি নিয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
সৌদির মন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে ইরান এবং ইজ়রায়েলের সাম্প্রতিক সংঘাত এবং যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গ উঠলে মৌসাভি বলেন, ‘‘যুদ্ধবিরতি-সহ নিজেদের বিভিন্ন অঙ্গীকারের প্রতি শত্রু কতটা দায়বদ্ধ, আমাদের তা নিয়ে গুরুতর সন্দেহ আছে।’’ যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইজ়রায়েল যদি আবার আক্রমণ শুরু করে? মৌসাভির জবাব, ‘‘যদি আবার হামলা হয়, কঠোর জবাব দিতে আমরা একেবারে প্রস্তুত।’’
আরও পড়ুন:
গত ১৩ জুন থেকে ইজ়রায়েল এবং ইরানের সংঘাত শুরু হয়েছিল। আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে ইরানের আলোচনার মাঝেই সে দেশে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বাহিনী। তাদের হামলায় ইরানের চার শীর্ষ সেনাকর্তা এবং ন’জন পরমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়েছিল। এর পরেই প্রত্যাঘাত শুরু করে তেহরান। মুহুর্মুহু ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হতে থাকে জেরুসালেম, তেল আভিভ লক্ষ্য করে। কিছু ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই আটকে দেয় ইজ়রায়েলের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ইজ়রায়েলের মাটিতে গিয়ে পড়েছে। পাল্টা ইজ়রায়েলও টানা হামলা চালিয়েছে। সংঘাত চলেছে ২৪ জুন পর্যন্ত। ইজ়রায়েলের সঙ্গে যোগ দিয়ে ইরানে হামলা চালিয়েছে আমেরিকার সেনাবাহিনীও। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইরানের তিনটি প্রধান পরমাণুঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এর পর ২৪ জুন ট্রাম্প আচমকাই ঘোষণা করেন, ইজ়রায়েল এবং ইরান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আর যুদ্ধ হবে না। তার পরেও অবশ্য উভয়পক্ষ বিক্ষিপ্ত ভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের দাবি করেছিল। তবে আপাতত হামলা বন্ধ রয়েছে। ইজ়রায়েলের হামলায় ইরানে ৬২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সে দেশের সরকার। ইজ়রায়েলের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, জখম হাজারের বেশি।