Advertisement
E-Paper

মাহশার সমাধিতে জমায়েতে গুলি আর কাঁদানে গ্যাস

ইরানের ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কোর দ্বারা পরিচালিত সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুসারে, দু’হাজার জন মানুষ এ দিন জমায়েত হয়েছিলেন মাহশার সমাধিতে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৫১
মাহশার সমাধিতে জমায়েত।

মাহশার সমাধিতে জমায়েত। ছবি টুইটার।

ইরানের মাহশা আমিনির মৃত্যুর ৪০ দিন উপলক্ষে বুধবার তাঁর জন্মস্থান সাকেজ় শহরে জমা হয়েছিলেন বহু মানুষ। মিছিল করে মাহশার সমাধিতে গিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোই ছিল তাঁদের মূল লক্ষ্য। তাঁরা যেন মাহশাকে জানাতে চেয়েছিলেন, তাঁর মৃত্যুতে যে আন্দোলনের সূচনা তা থামবে না সহজে। সেই মিছিলের উপর নির্বিচারে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে। নরওয়ের একটি মানবাধিকার সংক্রান্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও বিষয়টি নিয়ে টুইট করেছে। তার পরে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন নেট-নাগরিকেরাও। সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, মাহশার সমাধি ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন প্রতিবাদীরা, স্লোগান দিচ্ছেন নারীমুক্তি ও ব্যক্তিস্বাধীনতা নিয়ে। তাঁদের পাশ দিয়ে ছুটে যাচ্ছে বাহিনীর গুলি। কাঁদানে গ্যাসও ছোড়া হয়েছে এই অভিযোগও উঠেছে। তবে, এই ঘটনায় এখনও কেউ নিহত হয়েছেন কি না, তা জানা যায়নি। ঘটনার পরেই এলাকার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের তরফে।

ইরানের ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কোর দ্বারা পরিচালিত সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুসারে, দু’হাজার জন মানুষ এ দিন জমায়েত হয়েছিলেন মাহশার সমাধিতে। যদিও বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের দাবি, মাহশার সমাধিতে প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ জমা হয়েছিলেন। প্রশাসনের কাছে আগে থেকেই খবর ছিল এ ধরনের মিছিল হতে পারে। সমাজমাধ্যমে ও সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োগুলিতেও দেখা গিয়েছে বহু মানুষ গাড়িতে এবং পায়ে হেঁটে সাকেজ় শহরে প্রবেশ করছেন। তাঁদের মুখে স্লোগান, চোখে নির্ভীক দৃষ্টি। এ বিষয়ে প্রশাসন পাল্টা দাবি করেছে, প্রথমে প্রতিবাদীদের বলা হয়েছিল কোনও ধরনের জমায়েত না করতে। কিন্তু তাতে তারা কর্ণপাত না করায় পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই বাহিনীকে নামাতে হয়েছিল।

এ দিকে বুধবারই আমেরিকা দাবি করেছে, রাশিয়ার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সেই অনুসারে প্রতিবাদীদের উপর বলপ্রয়োগ করছে ইরান। এই বিষয়টি প্রতিবাদীদের পাশাপাশি পশ্চিমের দেশগুলোর ক্ষেত্রেও বিপজ্জনক। সেই সঙ্গে ইরানের উপর নতুন করে বেশ কয়েকটি নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে ওয়াশিংটনের তরফে। এর আগে, বিশেষ করে ইরানের নীতি পুলিশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ব্রিটেন, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডা। পাশাপাশি, রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞেরা বুধবারই প্রতিবাদীদের উপর ইরানের বলপ্রয়োগের কড়া সমালোচনা করেছেন। তাঁদের দাবি, প্রতিবাদীদের উপর প্রশাসনের নির্যাতনের যথাযথ তদন্ত ও সঠিক বিচার হওয়া প্রয়োজন।

‘যথাযথ’ ভাবে হিজাব না পরার কারণে প্রাণ গিয়েছে মাহশার। অভিযোগের তির নীতি পুলিশের দিকে। তাঁর মৃত্যুর পরে পার হয়ে গিয়েছে ৪০ দিন। সেই মৃত্যু যেন ইরানবাসীর বহুদিনের জমে থাকা পুঞ্জীভূত বারুদের স্তূপে আগুন লাগিয়ে দিয়ে গিয়েছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে সেই আগুনের আঁচ দেখছে ইরান। যদিও ইরান প্রশাসন জানিয়েছে, শারীরিক অসুস্থতাতেই মৃত্যু হয়েছে ওই তরুণীর, কিন্তু তা মানতে নারাজ প্রতিবাদীরা। সঠিক বিচার ও নিজেদের অধিকারের আশায় এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ইরানের সাধারণ মানুষ।

Tehran Mahsa Amini
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy