ইরানকে যারা চেনে, তারা এই ভাষায় কথা বলে না। বুধবার টেলিভিশন বার্তায় এমনটাই মন্তব্য করলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা খামেনেই। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে এই বার্তা দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, ইরানের উপর ‘যুদ্ধ’ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর কাছে তাঁরা মাথা নত করবেন না। কোনও ‘চাপিয়ে দেওয়া শান্তি’র কাছেও মাথা নত করবে না ইরান।
টেলিভিশন বার্তায় খামেনেই বলেন, ‘‘আরোপিত যুদ্ধের মুখে ইরান কঠোর অবস্থান নেবে। আরোপিত শান্তির বিরুদ্ধেও ইরানের অবস্থান হবে সমান। আরোপের মুখে এই দেশ কারও সামনে আত্মসমর্পণ করবে না।’’
আরও পড়ুন:
ইরানের উদ্দেশে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে খামেনেই বলেন, ‘‘বুদ্ধিমান লোকজন, যাঁরা ইরানকে চেনেন, ইরানিদের চেনেন, ইরানের ইতিহাস জানেন, তাঁরা কখনও এই ধরনের হুমকির ভাষায় কথা বলেন না। আমেরিকানদের জানা উচিত, আমেরিকার সেনাবাহিনীর যে কোনও রকমের হস্তক্ষেপ অপূরণীয় ক্ষতি ডেকে আনবে।’’
ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাতে আমেরিকার হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রশাসন। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী চান, আমেরিকা এই যুদ্ধে সামরিক হস্তক্ষেপ করুক, যাতে ইরান তাদের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়। এই আবহেই ট্রাম্পের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্যে জল্পনা তৈরি হয়েছে, তবে কি সত্যিই আমেরিকা পশ্চিম এশিয়ার ‘যুদ্ধে’ যোগ দেবে? মঙ্গলবারই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতাকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ করতে বলেছিলেন ট্রাম্প। হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, খামেনেই কোথায় লুকিয়ে আছেন তা জানেন তিনি। ট্রাম্পের কথায়, ‘‘আমরা জানি যে তথাকথিত সর্বোচ্চ নেতা কোথায় লুকিয়ে রয়েছেন। তিনি একটি সহজ লক্ষ্য, কিন্তু সেখানে নিরাপদ। আমরা তাঁকে বার করে (হত্যা!) করব না, আপাতত নয়।’’ ট্রাম্প ‘আমরা’ শব্দটিতে জোর দেওয়ার পরেই সেই জল্পনা আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়। অনেকের মতে, ট্রাম্প ইজ়রায়েলের সঙ্গে আমেরিকাকে জুড়েই ওই মন্তব্য করেছিলেন।
গত শুক্রবার থেকে ইরান এবং ইজ়রায়েলের সংঘাত চলছে। ইরানে হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েল। তাদের ক্ষেপণাস্ত্রে মৃত্যু হয়েছিল ইরানের চার শীর্ষ সেনাকর্তা এবং ন’জন পরমাণু বিজ্ঞানীর। এর পরেই ইরান প্রত্যাঘাত করে এবং নতুন করে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয় পশ্চিম এশিয়ায়। ইরান এবং ইজ়রায়েল পরস্পরকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করে চলেছে। প্রথম থেকেই আমেরিকার সমর্থন পেয়েছেন নেতানিয়াহু। ইরানের সঙ্গে আমেরিকার পরমাণুচুক্তি সংক্রান্ত বৈঠকও ভেস্তে গিয়েছে। এর মাঝেই খামেনেই মাথা নত না-করার বার্তা দিলেন। এতে ইরান-ইজ়রায়েল জট আরও বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।