Advertisement
E-Paper

ইরানে ইজ়রায়েলি আক্রমণের নেপথ্যে কি আমেরিকার হাত? রুবিয়ো অস্বীকার করলেন, তবে ট্রাম্পের সুরে কি প্রচ্ছন্ন সমর্থন?

ইরানের পরমাণু কেন্দ্র এবং সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। তাতে নিহত হয়েছেন ইরানের শীর্ষ সেনাকর্তা। প্রাণ গিয়েছে ছ’জন পরমাণু বিজ্ঞানীরও।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫ ১৪:১৩
(বাঁ দিক থেকে) বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং আয়াতোল্লা আলি খামেনেই।

(বাঁ দিক থেকে) বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। —ফাইল চিত্র।

ইরানের পরমাণু কেন্দ্র এবং সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। তাতে নিহত হয়েছেন ইরানের শীর্ষ সেনাকর্তা। প্রাণ গিয়েছে ছ’জন পরমাণু বিজ্ঞানীরও। এর পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ইজ়রায়েলি হামলার নেপথ্যে কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত রয়েছে? ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বিবৃতির পর সেই জল্পনা আরও জোরালো হয়েছে।

ইরানে ইজ়রায়েলি হামলার পরেই আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো বলেছিলেন, ‘‘আজ ইজ়রায়েল ইরানের বিরুদ্ধে একপাক্ষিক পদক্ষেপ করেছে। এই হামলার ঘটনায় আমরা জড়িত নই। ইজ়রায়েল আমাদের জানিয়েছে যে, তারা বিশ্বাস করে আত্মরক্ষার স্বার্থে এই বিমানহানা জরুরি ছিল।’’ আবার ইরানকেও বার্তা দিয়েছিলেন রুবিয়ো। বলেছিলেন, পাল্টা আক্রমণে যেন তারা আমেরিকার স্বার্থে আঘাত না করে। পরে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন ট্রাম্পও। সংবাদমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ’কে তিনি বলেছেন, ‘‘ইরানের হাতে যেন পরমাণু বোমা না থাকে। আমরা আশাবাদী, এটা নিয়ে একটা আলোচনা সম্ভব হবে।’’ ফক্স নিউজের প্রতিবেদনে দাবি, ইজ়রায়েল যে ইরানের উপর হামলা চালাতে পারে, এ ব্যাপারে আগে থেকে জানতেন ট্রাম্প। সম্ভবত সে কারণেই পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে মার্কিন আধিকারিকদের সরিয়ে নেয় ওয়াশিংটন।

ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যে ইজ়রায়েলি হামলার প্রতি আমেরিকার প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ এবং আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে সংবাদপত্র ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ দাবি করেছে, আমেরিকার সাহায্য ছাড়া ইজ়রায়েলের পক্ষে ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে ওই ভাবে হামলা চালানো সম্ভব নয়। ইরানের কয়েকটি পরমাণু কেন্দ্র মাটির অনেক গভীরে রয়েছে। সেখানে হামলা চালানোর জন্য বিশেষ বোমার প্রয়োজন। তাতেই আমেরিকার সাহায্য দরকার। আরও এক ধাপ এগিয়ে ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর প্রতিবেদনে দাবি, ইরান পাল্টা হামলা চালালে ইজ়রায়েল আমেরিকার সাহায্য চাইতেই পারে। সে ক্ষেত্রে আমেরিকা বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশকে সাহায্য করলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ, অতীতেও এ ঘটনা ঘটেছে।

আমেরিকা অবশ্য ইরানের সঙ্গে পরমাণু সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের একটি সূত্রে দাবি, আগামী রবিবার ওমানে ইরানের আধিকারিকদের সঙ্গে আমেরিকার বৈঠক আছে। ওই বৈঠকে থাকার কথা ওয়াশিংটনের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের।

যদিও ইরান আগেই দাবি করেছে, তারা কোনও পরমাণু বোমা তৈরি করছে না। কিন্তু পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহারের অধিকার তাদের রয়েছে। যে প্রযুক্তি সাধারণ মানুষের কাজে লাগবে। ‘নিউক্লিয়ার নন-প্রলিফারেশন’ চুক্তিতে ইরানের স্বাক্ষর রয়েছে। সেই চুক্তি মেনে ইরানও ইউরেনিয়াম ব্যবহার করতে পারে। তবে অবশ্যই কম পরিমাণে।

তার পরেও ইজ়রায়েল হামলা চালানোয় প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই একটি বিবৃতি দিয়ে ইজ়রায়েলকে ‘কঠোর শাস্তি’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইজ়রায়েল যেন খারাপ পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকে। ইজ়রায়েলি হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মেজর জেনারেল মহম্মদ বাগেরি নিহত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডের প্রধান কমান্ডার জেনারেল হোসেন সালামি এবং ডেপুটি কমান্ডার জেনারেল ঘোলামালি রশিদের। প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের ছ’জন পরমাণু বিজ্ঞানীও। নিহত বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছেন ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রাক্তন প্রধান ফেরেউদুন আব্বাসি। ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘আইআরএনএ’ সকলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

ইরানও পাল্টা ড্রোন-হামলা চালিয়েছে, কিন্তু সুবিধা করে উঠতে পারেনি। তা প্রতিহত করা গিয়েছে। বস্তুত, ইরান যে হামলা চালাতে পারে, এমন আশঙ্কা করে দেশে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করেছে ইজ়রায়েল।

Iran israel Donald Trump
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy