এ এক অন্য ইমরান খান। পুরনো, পরিচিত প্রথম ইমরান পাল্টে গিয়েছেন দ্বিতীয় ইমরানে।
ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা? সে তো পুরনো কাহিনি| ভোটে লড়তে নেমে প্রথমে যাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল, আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন তিনিই। ভারতীয় কূটনীতিকদের একাংশের মতে, এই সাফল্যের প্রধান মন্ত্র—ভারত বিরোধিতার তাস| ভারতে জনপ্রিয় ইমরান প্রথমে ছিলেন ভারত-বন্ধু, আমেরিকার ঘনিষ্ঠ।
প্রথম বিয়েও ব্রিটেনের ধনপতি পরিবারের কন্যা জেমাইমা গোল্ডস্মিথের সঙ্গে। তখন তিনি ছিলেন উদার, মৌলবাদীদের ‘দুশমন’ বলেই পরিচিত। কিন্তু এখন অনেকের কাছেই তিনি স্রেফ ‘সেনাবাহিনীর রোবট’।
ভারতের বিদেশমন্ত্রকের সূত্রের ব্যাখ্যা, ইমরান গত তিন বছর ধরে কৌশল বদলে ফেলেছিলেন। এমনকি, এক আধ্যাত্মিক গুরুকে তাঁর তৃতীয় বিয়েও নাকি পাকিস্তানের মানুষের কাছে নিজের নতুন ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য। সে বিয়েও টিকছে না বলেই যদিও ইঙ্গিত। তবু অনেকেই বলেন, তৃতীয় স্ত্রীয়ের বোরখা পরা ছবি প্রকাশ করিয়ে যা বার্তা দেওয়ার তিনি দিয়েছেন। উদার ভাবমূর্তি গিয়েছে মুছে। সেই সঙ্গে সুবক্তা, সুপুরুষটি একের পর এক ভারত-বিরোধী বিবৃতি দিয়েছেন ‘সেনাবাহিনীর চিত্রনাট্য’ অনুযায়ী। অথচ কয়েকবছর আগেই কলকাতায় এক আলোচনা সভায় ভারত-পাক দোস্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রচুর হাততালি কুড়িয়েছিলেন ইমরান।
উল্লাস: পিটিআই-এর জয়ের আনন্দ করাচির রাস্তায়। রয়টার্স
বিদেশ মন্ত্রকের ওই সূত্রের মতে, একদিকে তালিবানি জিহাদি-মোল্লাতন্ত্র, অন্যদিকে সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ ইমরানের নবলব্ধ শক্তির উৎস। নওয়াজ শরিফ ক্ষমতায় থাকার সময় সরকার বিরোধী অবস্থানে ইসলামাবাদ অচল করে দিয়েছিলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রধান। তাঁর সমর্থনে নেমেছিল ইসলামি সংগঠনগুলি, আর পিছনে ছিল রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদর। ফলে দেড় দশক আগে রাজনৈতিক দল গঠন করে যে সাফল্য ইমরান পান নি, আজ তা পেলেন।
প্রশ্ন একটাই, ক্ষমতাসীন ইমরান কি ভারত-বিরোধিতা বজায় রাখবেন? নাকি সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার পথে যাবেন? যে আলোচনার ইঙ্গিত তিনি দিয়েছেন আজ।
অতএব তৃতীয় ইমরান খানকে কি দেখা যাবে এ বার?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy