Advertisement
E-Paper

অস্ত্রের মধ্যে শুয়ে হাসছে শিশু, ছবি ঘিরে বিতর্ক

একে-৪৭, কালাশনিকভ, হ্যান্ড গ্রেনেড— এমনই সব আগ্নেয়াস্ত্র ছড়িয়ে রয়েছে চার ধারে। তার মাঝে শুয়ে খিলখিল করে হাসছে এক খুদে। বয়স মেরেকেটে ছ’মাস। খেলনাই তার সঙ্গী হওয়ার কথা। কিন্তু আইএস-শাসনে সে সবের যে আর দেখা মিলবে না, তা বোঝাতে এমনই ছবি বৃহস্পতিবার টুইটারে দিল জঙ্গিরা। তাদের রাজত্বে খেলনা বলতে আগ্নেয়াস্ত্র ও লেখাপড়া মানে স্রেফ জেহাদি-দর্শন যে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৪৩
এই ছবিটিই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা।

এই ছবিটিই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা।

একে-৪৭, কালাশনিকভ, হ্যান্ড গ্রেনেড— এমনই সব আগ্নেয়াস্ত্র ছড়িয়ে রয়েছে চার ধারে। তার মাঝে শুয়ে খিলখিল করে হাসছে এক খুদে। বয়স মেরেকেটে ছ’মাস। খেলনাই তার সঙ্গী হওয়ার কথা। কিন্তু আইএস-শাসনে সে সবের যে আর দেখা মিলবে না, তা বোঝাতে এমনই ছবি বৃহস্পতিবার টুইটারে দিল জঙ্গিরা। তাদের রাজত্বে খেলনা বলতে আগ্নেয়াস্ত্র ও লেখাপড়া মানে স্রেফ জেহাদি-দর্শন যে।

টুইটারে ছবিটি দেখে আঁতকে উঠেছে গোটা দুনিয়া। তীব্র নিন্দা, জোরদার প্রতিবাদে ছয়লাপ হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট। এর আগেও কখনও আগ্নেয়াস্ত্র হাতে মুখ-ঢাকা খুদের ছবি, কখনও বা সেনার কাটা মুণ্ড হাতে কিশোরের উল্লাসের ভিডিও দেখেছে গোটা বিশ্ব। কিন্তু এ বারের ছবি যেন বীভৎসতায় সে সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে।

আইএসের পতাকায় মোড়া খুদে শরীরটা যে সেই ‘আগ্রাসন’ রুখবে, তার উপায় নেই। ঠিক যেমন রুখতে পারেননি জেমস ফোলি, স্টিভেন সটলফ। এই দুই মার্কিন সাংবাদিকের মুণ্ডচ্ছেদের ভিডিও তুলে পাঠিয়েছিল জঙ্গিরা। সঙ্গে হুমকি আমেরিকা যদি ইরাকে আকাশপথে হামলা চালানো বন্ধ না করে, তা হলে এমন চলতেই থাকবে। তবে এর পর কোনও মার্কিন নন, জঙ্গিদের ‘শিকার’ হবেন এক ব্রিটিশ। এ দিন ব্রিটেন জানিয়েছে, স্কটল্যান্ডের ওই বাসিন্দা পেশায় ত্রাণকর্মী। নাম ডেভিড হেইনস। ২০১৩ সালের মার্চে সিরিয়া থেকে নিখোঁজ হন ডেভিড। আইএস জঙ্গিরাই যে তাঁকে অপহরণ করেছে, এ কথা মোটামুটি জানত ব্রিটেন-প্রশাসন। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁর পরিবারকে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে বারণ করেছিল তারা। গত ১৯ মাস তাই চুপই ছিল ডেভিডের পরিবার। কিন্তু মঙ্গলবারের হুমকি ভিডিও দেখে আর চুপ থাকতে পারেননি তাঁরা।

এ পরিস্থিতিতে ব্রিটেন কী করছে? অপহৃতকে ছাড়াতে কোনও ধরনের পণ দেবে না ক্যামেরন-সরকার। তবে তাঁকে বাঁচাতে যে সম্ভাব্য সব রকম চেষ্টা করা হবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে প্রশাসন। কাল জরুরি বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। সূত্রের দাবি, কোথায় ওই ত্রাণকর্মীকে আটকে রাখা হয়েছে তা যে মুহূর্তে জানা যাবে, সেই মুহূর্তেই উদ্ধার অভিযান শুরু করবে ব্রিটেনের বিশেষ বাহিনী। এ দিন ওয়েলসে শুরু হওয়া ন্যাটোর বৈঠকের পর ক্যামেরনও জানান, আইএস-কে নিশ্চিহ্ন করতে যা যা করা সম্ভব, সব করবে ব্রিটেন। তবে কি এ বার ওবামার মতোই হামলার পথে হাঁটবেন ক্যামেরন? সরাসরি জবাব না দিলেও তাঁর দাবি, সব সম্ভাবনাকেই খতিয়ে দেখছে ব্রিটিশ সরকার। ক্যামেরনের বয়ানে, “...এই ভয়াবহ সংগঠনকে নিশ্চিহ্ন করতে যা যা করা দরকার, তার সব কিছুই আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে।”

ক্যামেরনের এই মন্তব্যের পর আবার সেই পুরনো প্রশ্ন ফিরে আসছে। সিরিয়া ও ইরাকের বিস্তীর্ণ অংশে ঘাঁটি গেড়েছে আইএস। এখন সে দেশের মাটিতে যুদ্ধ চালাতে গেলে দুই দেশের সরকারের অনুমতি দরকার। ইরাকের ক্ষেত্রে সেটা পাওয়া কোনও সমস্যা না। কিন্তু সিরিয়া? সে দেশের প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে পশ্চিমী দুনিয়ার সম্পর্ক যে খুবই খারাপ। এ হেন অবস্থায় অনুমতি পাবে কি ব্রিটেন? ক্যামেরনের দাবি, যদি কখনও এই আক্রমণ করতেও হয়, তা হলেও আসাদের অনুমতি নেওয়ার দরকার নেই। কারণ দেশের মানুষের উপর যে ভাবে অত্যাচার চালিয়েছেন আসাদ, তার পর তাঁকে আর বৈধ প্রেসিডেন্ট ভাবা সম্ভব নয়। সুতরাং অনুমতির প্রশ্নই ওঠে না।

ব্রিটিশ বাসিন্দাকে উদ্ধার করা নিয়ে এ হেন আলোচনার সঙ্গেই এ দিন সংবাদমাধ্যমে ঘুরেফিরে এসেছে নিহত সটলফের পরিবারের বার্তা। জঙ্গি নেতা আবু বকর আল বাগদাদির কাছে প্রশ্ন তুলেছেন সটলফের পরিবারের মুখপাত্র, “কীসের সাজা পেল সটলফ?” ইসলামে যে ক্ষমাই গুরুত্ব পেয়েছে, সে কথা মনে করিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, সটলফকে হত্যার সময়ে এ কথা কী করে ভুলে গেলেন বাগদাদি?

damascus baby Kalashnikov rifle grenades international news latest news online news latest international new
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy