জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে ইজ়রায়েল থেকে বার করে দিল বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার। মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক। সোমবার ভোররাতে গ্রেটাদের নৌকা ‘মাদলীন’কে গাজ়ায় প্রবেশের আগে আটকায় ইজ়রায়েলি বাহিনী। গ্রেফতার করা হয় নৌকায় সওয়ার সকলকে। তার পর থেকে গ্রেটাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। মঙ্গলবার ইজ়রায়েলের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, গ্রেটাকে ইজ়রায়েল থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার ইজ়রায়েলের বিদেশ মন্ত্রক এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে, ফ্রান্সের বিমানে চেপেছেন গ্রেটা। সেখান থেকেই যাবেন নিজের দেশ সুইডেনে। বিমানে সওয়ার গ্রেটার একটি ছবিও পোস্ট করা হয়েছে মন্ত্রকের তরফে।
ইজ়রায়েলে গ্রেটাদের হয়ে আইনি লড়াই করছিল আদালাহ নামে একটি গোষ্ঠী। তারা জানিয়েছে, গ্রেটা, দুই সমাজকর্মী এবং এক সাংবাদিক ইজ়রায়েল থেকে তাঁদের বিতাড়নে রাজি হয়ে গিয়েছেন। তাই তাঁরা ইজ়রায়েল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। নৌকায় থাকা বাকি আট জন তাতে রাজি হননি। সে কারণে ওই আট জনকে এখনও আটক করে রাখা হয়েছে। তাঁদের মঙ্গলবার বিকেলের দিকে আদালতে হাজির করানো হতে পারে। ইজ়রায়েলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র সাবিন হাদ্দাদ জানান, মঙ্গলবার যে চার জনকে দেশ থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা আদালতে বিচারকের সামনে হাজিরা দেওয়া অধিকার ত্যাগ করেছেন। যাঁরা তা করেননি, তাঁদের ৯৬ ঘণ্টা আটক করা হবে। তার পরে দেশ থেকে বার করে দেওয়া হবে।
গ্রেটাদের দলে ছিলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ফরাসি সদস্য রিমা হাসান। তিনি প্যালেস্টাইন বংশোদ্ভূত। সে কারণে তাঁকে ইজ়রায়েলে প্রবেশই করতে দেয়নি নেতানিয়াহু সরকার। তাঁকে আটক করে রাখা হয়েছে, না কি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এপি।
আরও পড়ুন:
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়াবাসীর জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ‘মাদলীন’ নামে এক নৌকায় চেপে প্যালেস্টাইনের দিকে এগোচ্ছিল থুনবার্গ-সহ মোট ১২ জনের প্রতিনিধিদল। গত ৬ জুন ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ সিসিলি থেকে নৌকাটি রওনা দেয়। সোমবার সন্ধ্যায় নৌকাটি গাজ়ায় পৌঁছোনোর কথা ছিল। নেপথ্যে ছিল ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ নামে একটি সংগঠন। সেই সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, গাজ়ায় ইজ়রায়েল যে আগ্রাসন চালাচ্ছে, তার প্রতিবাদেই এই যাত্রা করেছে তারা। গাজ়ায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য। গাজ়া উপকূলের ২০০ কিলোমিটার দূরে নৌকাটিকে আটক করে ইজ়রায়েল সেনা। ওই সংগঠন অভিযোগ করে যে, এ ভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে ইজ়রায়েল। নেতানিয়াহু সরকার যদিও সেই অভিযোগ মানেনি। তাদের দাবি, গাজ়ায় আইন মোতাবেক যে ব্লকেড দিয়েছে তারা, তা লঙ্ঘন করতে চলেছিল নৌকাটি।
ইজ়রায়েলের বিদেশ মন্ত্রক জানায়, নৌকাটিকে সোমবার সন্ধ্যায় সে দেশের আশদোদ বন্দরে নিয়ে গিয়ে নোঙর করানো হয়েছে। ইজ়রায়েলের নৌবাহিনীই সেটিকে সেখানে নিয়ে গিয়ে রেখেছে। মানবাধিকার সংগঠন আদালাহ জানিয়েছে, ইজ়রায়েলের এমন করার কোনও অধিকার নেই। কারণ, নৌকাটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় ছিল। ইজ়রায়েলের দিকেও যাচ্ছিল না।