মধুচন্দ্রিমায় মেঘালয়ে নিয়ে গিয়ে স্বামী রাজা রঘুবংশীকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে সোনম রঘুবংশীর বিরুদ্ধে। তাঁর শাশুড়ি জানিয়েছেন, মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনা করেছিলেন সোনমই। মেঘালয়ে যাওয়ার টিকিটও কেটেছিলেন তিনিই। পুলিশ মনে করছে, আটঘাট বেঁধেই এ সব করেছিলেন সোনম। সঙ্গী ছিলেন প্রেমিক। তবে সোনম প্রথম নন, গত বছর ডিসেম্বরে গুজরাতের গান্ধীনগরে একই ভাবে স্বামী ভাবিককে খুনের অভিযোগ উঠেছিল পায়েলের বিরুদ্ধে। বিয়ের ঠিক চার দিন পরে। পায়েলের সঙ্গী ছিলেন তুতো ভাই কল্পেশ।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছিল, তুতো ভাই কল্পেশের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল পায়েলের। পরিবার সেই সম্পর্ক মেনে নেয়নি। তার পরেই তুতো ভাইয়ের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুনের ছক কষেছিলেন পায়েল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পায়েল ছিলেন গান্ধীনগরের বাসিন্দা। ভাবিক অহমদাবাদের। দুই পরিবারের সিদ্ধান্তে বিয়ে হয়েছিল দু’জনের। গত ১৪ ডিসেম্বর, বিয়ের চার দিনের মাথায় পায়েলকে বাপের বাড়ি থেকে নিতে যাওয়ার কথা ছিল ভাবিকের। দীর্ঘ ক্ষণ কেটে গেলেও ভাবিক যাননি। এর পরেই পায়েলের পরিবারের লোকজন ভাবিকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা জানতে পারেন, সঠিক সময়েই স্ত্রীকে আনতে গান্ধীনগরের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন ভাবিক। এর পরেই পায়েলের পরিবার খোঁজ শুরু করে ভাবিকের।
পায়েলের আত্মীয়েরা দেখেন, রাস্তায় ভাবিকের বাইক পড়ে রয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জানতে পারেন, বাইক আরোহীকে অপহরণ করা হয়েছে। একটি এসইউভিতে চেপে এসে তিন জন সেই কাজ করেছেন। তার পরেই থানায় অভিযোগ করে পায়েলের পরিবার। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করে। তার পরেই জিজ্ঞাসাবাদ করে পায়েলকে। তাতেই তিনি ভেঙে পড়ে সব স্বীকার করেন। সেই সূ্ত্র ধরে কল্পেশ এবং অন্য দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের জেরা করে জানতে পারে, ভাবিককে অপহরণের পরে গাড়িতে তুলে গলা টিপে খুন করা হয়। তার পরে তাঁর দেহ নর্মদার খালে ফেলে দেন অভিযুক্তেরা। সেখান থেকে দেহ উদ্ধার হয় ভাবিকের।
পুলিশ জানিয়েছে, ভাবিক যখন স্ত্রীকে আনতে তাঁর বাড়িতে যাচ্ছিলেন, তখন পায়েল তাঁকে ফোন করে তাঁর অবস্থান জেনে নেন। তার পরেই তিনি খবর দেন কল্পেশকে। সেই মতো কল্পেশ দু’জনকে নিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে ভাবিককে অপহরণ করেন বলে অভিযোগ। পায়েল, কল্পেশ-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ বার মেঘালয়-কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন সোনম এবং তাঁর প্রেমিক রাজ সিংহ কুশওয়াহা। এই ঘটনায় আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা ভাড়াটে খুনি কি না, পুলিশ স্পষ্ট করেনি।