উপচে পড়ছে ত্রাণশিবির। অগত্যা খোলা রাস্তাতেই তাঁবু খাটিয়ে দিন গুজরান করতে হচ্ছে কয়েক লক্ষ পরিবারকে! দু’বছর আগেও যেখানে সার সার বাড়ি, দোকানপাট, কারখানা আর খেজুর-আঙুরের বাগান ছিল, সেখানে এখন শুধু কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপ এবং ঊষর প্রান্তর! গাজ়ার ঠিকানাহারা প্যালেস্টাইনিদের থেকে এ বার সেটুকুও কেড়ে নিতে সক্রিয় হল ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার।
বুধবার নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রকাশিত একটি খবরে দাবি করা হয়েছে, গাজ়ার বাসিন্দা প্রায় ২০ লক্ষ প্যালেস্টাইনিকে পাকাপাকি ভাবে আফ্রিকার দেশ দক্ষিণ সুদানে স্থানান্তরিত করতে সক্রিয় হয়েছে ইজ়রায়েল সরকার। যদিও বলপ্রয়োগ করে প্যালেস্টাইনিদের উৎখাতের অভিযোগ এড়াতে এই পরিকল্পনাকে ‘স্বেচ্ছায় অভিবাসন’ বলে চিহ্নিত করেছে তেল আভিভ। প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে গাজ়া দখলের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানিয়েছিলেন, সেখানকার প্যালেস্টাইনদের স্থায়ী ভাবে প্রতিবেশী দেশগুলিতে পুনর্বাসন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এ বার সেই ঘোষণাই কার্যকর করতে উদ্যোগী হয়েছে নেতানিয়াহু সরকার।
ঘটনাচক্রে, চলতি মাসেই নেতানিয়াহু জানিয়েছিলেন যে তিনি গাজ়ায় সামরিক নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে চান। সেই সঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য ছিল, ‘‘প্যালেস্টাইনিদের স্বেচ্ছায় ওই অঞ্চল ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত।’’ প্রকাশিত খবরে দাবি, পরিকল্পনা কার্যকর করতে ইতিমধ্যেই আমেরিকা-সহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে নেতানিয়াহু সরকারের আলোচনা চলছে। কিন্তু প্যালেস্টাইনি মুসলিমদের দক্ষিণ সুদানে স্থানান্তরিত করা হলে নতুন করে অশান্তি দানা বাঁধার আশঙ্কা রয়েছে। ‘ধর্মভিত্তিক জনবিন্যাসের বদল’ সংক্রান্ত অভিযোগ এবং তাকে ঘিরে রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের কারণে ২০১১ সালে মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র সুদান ভেঙে অমুসলিম রাষ্ট্র দক্ষিণ সুদান গড়া হয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই প্যালেস্টাইনি মুসলিমদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ ঘিরে আফ্রিকার ওই খ্রিস্টান প্রধান দেশটিতে অশান্তি মাথাচাড়া দিতে পারে।