ইরানে অস্ত্র উৎপাদন কারখানা এবং সেই সংক্রান্ত প্রকল্পের আশপাশে যে নাগরিকেরা রয়েছেন, তাঁদের সরে যেতে বলল ইজ়রায়েল। রবিবার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে এই নিয়ে পোস্ট দিয়েছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সেনা। তার পরেই প্রশ্ন উঠছে, ইরানের পরমাণু কেন্দ্রের পরে কি তাদের অস্ত্র ভাণ্ডার লক্ষ্য করে হামলা চালাতে পারে ইজ়রায়েল? নেতানিয়াহু প্রশানের একটি সূত্র বলছে, তেহরানের উপর চাপ বৃদ্ধি করতেই নাগরিকদের সরে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইজ়রায়েল।
রবিবার ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইজ়রায়েল কাটজ় বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘ইরানের স্বৈরাচারী শাসক (সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা খামেনেই) তেহরানকে বেইরুটে (সিরিয়ার রাজধানী) পরিণত করছেন। নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে তেহরানের নাগরিকদের পণবন্দিতে পরিণত করছেন।’’ তার পরেই এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট দিয়ে তেহরানের নাগরিকদের সতর্ক করে ইজ়রায়েল সেনা। তাতে জানায়, ‘‘দেশের অস্ত্র উৎপাদনকারী কারখানা এবং সেই সংক্রান্ত পরিকাঠামোর আশপাশে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের এখনই সেই জায়গা ছেড়ে দেওয়া উচিত। কর্তৃপক্ষকে সেই বিষয়টি জানানো উচিত।’’
শুক্রবার ‘চিরশত্রু’ ইরানের উপর আকাশপথে হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। ইরানে ইজ়রায়েলের হামলায় মৃত্যু হয়েছে সে দেশের চার শীর্ষ সেনাকর্তা। নিহত হয়েছেন ইরানের সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক মেজর জেনারেল মহম্মদ বাগেরি। ইজরায়েল বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ইরানের মোট ন’জন পরমাণু বিজ্ঞানী-বিশেষজ্ঞ নিহত হয়েছেন ইজ়রায়েলি হামলায়। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশের নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, ইরানের যে ন’জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত, তাঁরা হলেন— নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিশেষজ্ঞ ফেরেদুন আব্বাসি, আহমেদ রেজ়া জ়োলফাঘরি দোরিয়ানি, পদার্থবিদ্যার বিশেষজ্ঞ মহম্মদ মেহদি তেহরানচি, আমির হাসান ফাখাহি, মনসুর আসগারি, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিশেষজ্ঞ আকবর মোতালেবি জ়াদেহ, মেটেরিয়াল্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিশেষজ্ঞ সইদ বর্জি, রিয়্যাক্টর ফিজ়িক্সের বিশেষজ্ঞ আব্দুল আলহামিদ মিনৌশেহর এবং মেকানিক্সের বিশেষজ্ঞ বখৌয়েই কাতিরিমি। প্রশ্ন উঠছে, এ বার কি ইরানের অস্ত্রভাণ্ডার ধ্বংস করতে চায় ইজ়রায়েল? সে জন্যই কি নাগরিকদের সরে যেতে বলল সে দেশের সেনা, না কি চাপ বৃদ্ধি করল তেহরানের উপর।
চুপ করে বসে নেই ইরানও। ইজ়রায়েলে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে তারা। শনিবার রাত থেকে তাদের হামলায় ইজ়রায়েলে প্রাণ গিয়েছে ১০ জনের।