গাজ়া শহরে একটি কাফেতে ইজ়রায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হানায় প্রাণ হারালেন অন্তত ৩০ জন। স্থানীয়দের কাছে সাম্প্রতিক কালে বর্হিবিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম ঠিকানা ছিল অল-বাকা নামে ওই কাফেটি। প্রতিদিনের মতো ফোনে চার্জ দিতে, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে ক্যাফেতে জড়ো হয়েছিলেন অনেকে। বেশির ভাগই মহিলা ও শিশু। আচমকা ক্ষেপণাস্ত্র হানায় ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে এলাকা। জখম হন বহু। একই সময়ে গাজ়ার বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ নিতে যাওয়া অসহায় মানুষের উপরে ইজ়রায়েল বাহিনী গুলি চালানোয় আরও অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন ৬৭ জন। যার মধ্যে বহু শিশুও রয়েছে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যতই যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিন না কেন, ইজ়রায়েল সরকার নিরুত্তাপ। গত ২০টা মাস ধরে চলছে প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠী হামাস ও ইজ়রায়েলের যুদ্ধ। কমপক্ষে ৫৬,৫০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন গাজ়ায়। দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। রোগসংক্রমণ ঘটছে। এ অবস্থায় গোটা বিশ্ব ‘গণহত্যা’ থামানোর আর্জি জানিয়েছে ইজ়রায়েলের কাছে। এক দিন আগে ট্রাম্পও বলেছেন, এ বার যুদ্ধ থামুক। কিন্তু ইজ়রায়েলের মতিগতি স্পষ্ট নয়। শোনা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ এক কর্তা হোয়াইট হাউসে বৈঠকে বসবেন। শুধু গাজ়া নয়, ইরান ও পশ্চিম এশিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।
গাজ়া সিটির বাসিন্দা সালেহ বলেন, ‘‘বিস্ফোরণ বন্ধই হচ্ছে না। স্কুল, বাড়ি সর্বত্র বোমা ফেলছে ওরা। মাটি কেঁপে উঠছে। মনে হচ্ছে ভূমিকম্প।’’ পাঁচ ছেলেমেয়ের বাবা সালেহ জানান, তাঁরা শুধু খবরের চ্যানেলেই যা যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার কথা শুনতে পাচ্ছেন, বাস্তবে চারপাশে শুধু মৃত্যু দেখছেন। ইজ়রায়েলি ট্যাঙ্ক গাজ়া সিটির পূর্বে জ়েতুন শহরতলিতে ঢুকেছে। উত্তরে বহু জায়গায় গোলাবর্ষণ চলছে। ইজ়রায়েলি সেনার বিমান অন্তত চারটি স্কুলে বোমা ফেলেছে। তার আগে অবশ্য, ওই স্কুলগুলোতে আশ্রয় নেওয়া সাধারণ মানুষকে পালানোর নির্দেশ দিয়েছিল ওরা। কিন্তু কোথায় পালাবে, তা বলে দেয়নি কেউ। আজ ২৫ জনের মৃত্যুর খবর মেলে গোড়ায়। এর মধ্যে ১০ জন মারা গিয়েছে জ়েতুনে। খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল অবশ্য জানিয়েছে, আরও ১৩ জন নিহত হয়েছেন গাজ়া সিটির দক্ষিণ-পশ্চিমে। সব মিলিয়ে মোট ৬৭ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ইজ়রায়েল দাবি করেছে, তারা শুধু সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি নিশানা করেছিল।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)