জামাল খাসোগি।
নিখোঁজ সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার ইস্তানবুলের সৌদি দূতাবাসে ঢোকার পর থেকে আর খোঁজ মিলছে না খাশোগির। একটি প্রথম সারির মার্কিন দৈনিকে কর্মরত খাশোগিকে সৌদি আরব সরকারের লোক খুন করেছে বলে অভিযোগ করেছিল তুরস্ক সরকার। কিন্তু খাশোগিকে যে খুন করা হয়েছে, তার কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত মেলেনি। যদিও নিখোঁজ ওই সাংবাদিকের এক বন্ধু এ বার দাবি করেছেন, সৌদি দূতাবাসে ঢোকার পর পরই কিছু ক্ষণের জন্য বেরিয়েছিলেন খাশোগি। আর সেই সময় তাঁর প্রেমিকার কাছে নিজের মোবাইল ফোনটি রেখে যান ওই সাংবাদিক। এবং প্রেমিকাকে এ-ও বলে যান, তিনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না-ফিরলে প্রেমিকা যেন অবিলম্বে দূতাবাস কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি কোনও অঘটনের আঁচ আগে থেকেই পেয়েছিলেন খাশোগি? তাঁর প্রেমিকা, হাটিস সেনগিজ় অবশ্য সেই দিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তুরস্কের নাগরিক হাটিসকে বিয়ে উপলক্ষেই ইস্তানবুল গিয়েছিলেন খাশোগি। তিনি যে বিবাহ বিচ্ছিন্ন, তা প্রমাণের জন্য তাঁকে কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হত ইস্তানবুলের সৌদি দূতাবাসে। সে জন্যই গত সপ্তাহে তুরস্কে যান তিনি।
খাশোগির ওই বন্ধু তুরস্কের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিয়ে নিয়ে খুবই উত্তেজিত ছিলেন খাশোগি। সৌদি সরকার যে আদৌ তাঁর কোনও ক্ষতি করতে পারে, তুরস্কে আসার আগে তা সম্ভবত আঁচ করতে পারেননি তিনি। কিন্তু সৌদি দূতাবাস ছাড়ার আগে তিনি প্রেমিকাকে কেন নিজের ফোনটা দিয়ে গিয়েছিলেন, সেই রহস্যের সমাধান এখনও হয়নি।
তুরস্ক আসার আগে লন্ডনে এক সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলেন খাশোগি। ইজ়রায়েল-প্যালেস্তাইন সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সেখানে সৌদি সরকারের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন খাশোগি। সেই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সৌদি সরকার তাঁর কোনও ক্ষতি করল কি না, খাশোগির বন্ধু সেই প্রশ্ন তুলেছেন। এমনিতে সৌদি রাজপরিবারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত খাশোগির জীবনের ঝুঁকি আগে থেকেই ছিল। সে জন্য স্বেচ্ছা নির্বাসন নিয়ে আমেরিকায় থাকা শুরু করেন তিনি।
সাংবাদিকের এই অন্তর্ধান পর্বে আমেরিকার সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। সৌদি সরকার অবশ্য প্রথম থেকেই গোটা বিষয় থেকে নিজেদের দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করে চলেছে। তারা জানিয়েছে, খাশোগি কোথায়, তারা কিছু জানে না। আমেরিকা বিষয়টি নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ না খুললেও মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো ঘনিষ্ঠ মহলে যথেষ্ট বিরক্তি প্রকাশ করেছেন বলে হোয়াইট হাউসের একটি সূত্রের খবর। সৌদি সরকার খাশোগিকে খুঁজতে ঠিক কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা এখন জানতে চায় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy