Advertisement
E-Paper

James Webb Space Telescope: দ্বিতীয় চমক! ভিন্‌গ্রহে মেঘ-জল দেখল ওয়েব

পৃথিবীর মতো প্রাণের অনুকূল কোনও গ্রহ যে থাকতে পারে, তেমন ইঙ্গিত আগেও মিলেছিল। কিন্তু এমন স্পষ্ট ছবি, জেমস ওয়েবের আগে কেউই দেয়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২২ ০৭:১০
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে তোলা বৃহস্পতির দু’টি নতুন ছবি প্রকাশ করল নাসা। বৃহস্পতির ৩ উপগ্রহ, ইউরোপা, থিব ও মেটিস-কে দেখা যাচ্ছে।

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে তোলা বৃহস্পতির দু’টি নতুন ছবি প্রকাশ করল নাসা। বৃহস্পতির ৩ উপগ্রহ, ইউরোপা, থিব ও মেটিস-কে দেখা যাচ্ছে।

এক হাজার আলোকবর্ষ দূরের এক জগৎ। সেখানেও আছে এক সূর্য। আর তাকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে এক দৈত্যাকার গ্যাসীয় পিণ্ড।

ঠিক যেন এই পৃথিবীরই প্রতিবিম্ব, মহাকাশের নিকশ কালো অন্ধকারে কোনও এক আয়নায় ফুটে উঠেছে। তাতে জল, মেঘ, ধোঁয়া... সবেরই চিহ্ন স্পষ্ট। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের দ্বিতীয় চমক। গত কালই প্রকাশিত হয়েছে জেমস ওয়েবের তোলা এক নির্মীয়মাণ নক্ষত্রপুঞ্জের সমাহারের ছবি।

পৃথিবীর মতো প্রাণের অনুকূল কোনও গ্রহ যে থাকতে পারে, তেমন ইঙ্গিত আগেও মিলেছিল। টেলিস্কোপের লেন্সে ধরা পড়া কোনও কোনও ভিনগ্রহের ছবি দেখে কৌতূহলও জন্মেছে। কিন্তু এমন স্পষ্ট ছবি, জেমস ওয়েবের আগে কেউই দেয়নি। নাসা জানিয়েছে, ডব্লিউএএসপি-৯৬ মিল্কি ওয়েরই এক এক্সোপ্ল্যানেট। তার মতো ৫ হাজার এক্সোপ্ল্যানেট চিহ্নিত হয়েছে। এক্সোপ্ল্যানেট হল সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনও গ্রহ, যা পৃথিবীর মতো কোনও এক নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। পৃথিবীর দক্ষিণের আকাশে আমাদের গ্রহ থেকে প্রায় ১১৫০ আলোকবর্ষ দূরে ফিনিক্স কনস্টেলেশন বা নক্ষত্রপুঞ্জে রয়েছে ডব্লিউএএসপি-৯৬ গ্রহটি। এটি একটি গ্যাসীয় পিণ্ড, কিন্তু সরাসরি এর সঙ্গে সৌরজগতের কোনও সম্পর্ক নেই। বৃহস্পতি গ্রহের অর্ধেকেরও কম ভর এর। কিন্তু ব্যাস বৃহস্পতির ১.২ গুণ বেশি। সৌরজগতের যে কোনও গ্রহের তুলনায় এটি অনেক স্ফীত। তাপমাত্রাও বসবাসের অযোগ্য, ৫৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এ ছাড়া আরও কিছু বিষয় চোখে পড়ার মতো। গ্রহটি তার নক্ষত্র থেকে খুব একটা বেশি দূরে নেই। সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ বুধ। তাদের মধ্যে যা দূরত্ব, তার ৯ ভাগের ১ ভাগ দূরত্ব রয়েছে ডব্লিউএএসপি-৯৬ ও তার সূর্যের। পৃথিবীর সাড়ে তিন দিনেই গ্রহটি তার নক্ষত্রকে এক পাক ঘুরে ফেলে। এই সামগ্রিক চরিত্র, অর্থাৎ প্রকাণ্ড আকার, ছোট প্রদক্ষিণকাল, স্ফীত পরিমণ্ডল, এগুলোর জন্যই ডব্লিউএএসপি-৯৬-কে ঘিরে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের আগ্রহ জন্মেছে। এত বিশদ তথ্য যে এর আগে কখনও পাওয়া যায়নি।

জেমস ওয়েবের পূর্বসুরি হাবল টেলিস্কোপ গত দু’দশকে অসংখ্য এক্সোপ্ল্যানেটকে নজরবন্দি করেছে, তাদের বায়ুমণ্ডল বিশ্লেষণ করেছে, ২০১৩ সালে প্রথম স্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত করেছে জলের উপস্থতি। কিন্তু জেমস ওয়েব অভিযানে নেমেই চমক লাগিয়ে দিয়েছে। আশা জাগিয়েছে, শীঘ্রই প্রাণের অনুকূল কোনও গ্রহের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।

২১ জুন জেমস ওয়েবের ‘নিয়ার-ইনফ্রারেড ইমেজার অ্যান্ড স্লিটলেস স্পেক্ট্রোগ্রাফ’ (এনআইআরআইএসএস)-এ ধরা পড়ে ডব্লিউএএসপি-৯৬। ওই দিন গ্রহটি নিজের নক্ষত্রের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময়ে নক্ষত্রের রশ্মি তার গায়ে পড়ে। তার পরে তা প্রতিফলিত হয়ে প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা দৃশ্যমান হয় এক্সোপ্ল্যানেটটি। সেই প্রতিফলিত আলোর পথ অনুসরণ করেই জানা গিয়েছে দূর-গ্রহের প্রতিটি চরিত্র।আকার, কক্ষপথ, অস্তিত্বের কথা। এত বিশদ তথ্য এই প্রথম জানা গেল।কৃতিত্ব অবশ্যই জেমস ওয়েবের। এইদূরবীক্ষণ যন্ত্রে রয়েছে বিশেষ স্পেকট্রাম। এটি জল, অক্সিজেন, মিথেনবা কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে চিহ্নিত করতে সক্ষম। এই স্পেকট্রামকে ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা জানতে পারবেন, কোনও ভিন্‌গ্রহের বায়ুমণ্ডলে কতটা জলীয় বাষ্প, কার্বন ও অক্সিজেন রয়েছে, গ্রহের বায়ুমণ্ডলের আনুমানিক তাপমাত্রা ও গভীরতা। গ্রহের জন্ম থেকে জীবন বৃত্তান্ত, জানা যাবে সব। মানুষের হাতের মুঠোয় চলে আসবে নাড়িনক্ষত্র।

James Webb Space Telescope
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy