কিম জং উন।
ক’দিন আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার ইঙ্গিত না পেলে তিনি কিম জং উনের সঙ্গে কথা চালাবেন না। কিম তার আগেই আপাত ভাবে নরম হওয়ার দিকে এগোলেন। যে কিমকে ‘লিটল রকেটম্যান’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন ট্রাম্প, বিশ্বকে চমকে দিয়ে সেই কিম-ই ঘোষণা করলেন, পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় ইতি টানবে উত্তর কোরিয়া।
শনিবার বিবৃতি দিয়ে পিয়ংইয়ং জানিয়েছে, আর কোনও ক্ষেপণাস্ত্র এবং পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করবে না তারা। দেশের পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
কিমের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আমেরিকা, জাপান, চিন, দক্ষিণ কোরিয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করেছেন, ‘‘উত্তর কোরিয়া পরমাণু পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা শুধু উত্তর কোরিয়া নয়, গোটা বিশ্বের জন্য ভাল খবর। কিমের সঙ্গে বৈঠকের জন্য মুখিয়ে রয়েছি।’’ কিমের এই সিদ্ধান্তকে ‘সদর্থক পদক্ষেপ’ আখ্যা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
তবে কিম কথা রাখবেন কি না, তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে যেমন বলেছেন, ‘‘ঘোষণা ফলপ্রসূ হচ্ছে কি না দেখতে কড়া নজর রাখা প্রয়োজন।’’ কিমও ঘোষণায় নিজের অস্ত্রভাণ্ডার কমানোর ইঙ্গিত দেননি। বিপুল অস্ত্রভাঁড়ার ত্যাগ করার কথাও বলেননি। উল্টে বলেছেন, ‘‘উত্তর কোরিয়া এখন পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। তাই পরমাণু বা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার আর প্রয়োজন নেই।’’
সম্প্রতি কিমের উপস্থিতিতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেছিল উত্তর কোরিয়ার শাসক দল ওয়ার্কাস পার্টি অব কোরিয়া। সেখানেই কিম জানান, আর ক্ষেপণাস্ত্র বা পরমাণু অস্ত্রের হুঙ্কার নয়, এ বার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জোর দিতে চান তিনি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে তোলা এবং দেশের মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নে জোর দেওয়া হবে। কেন কিমের এই বদল? কূটনীতিকদের মতে, আন্তর্জাতিক চাপ আর নিজের ‘একনায়ক’ ভাবমূর্তি বদলানোর তাগিদ। যার জন্য রাষ্ট্রনায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন কিম। মে-জুন নাগাদ ট্রাম্পের সঙ্গেও তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা। তার আগে আগামী শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের সঙ্গে বৈঠক বসতে চলেছেন কিম। গত মাসেই গিয়েছিলেন সস্ত্রীক চিন সফরে। এ বার কিমের পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র বৈরাগ্য!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy