লিও বরডকর। সংগৃহীত ছবি।
খবরটা পৌঁছেছিল বেশ রাতেই। গ্রামের ছেলে সূদূর আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছে। মহারাষ্ট্রের সিন্ধুদুর্গ জেলার বরডে তাই উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে কাল রাত থেকেই।
লিও বরডকর। ৩৮ বছরের ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই সমকামী যুবককেই গত কাল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছে আয়ারল্যান্ড। ‘ঘরের ছেলে’র এই সাফল্যে তাই মেতে উঠেছে বরডও। ষাটের দশকে লিওর বাবা অশোক বরডকর ভারত ছেড়ে পাকাপাকি ভাবে আয়ারল্যান্ডে চলে এসেছিলেন। বিয়ে করেন স্থানীয় এক মহিলাকেই। কিন্তু শেকড়কে কোনও দিনও ভোলেনি বরডকর পরিবার। বছর দুই আগেও লিওর বাবা-মা ঘুরে গিয়েছেন বরড গ্রামে। বই কিনে দিয়েছেন স্থানীয় স্কুলের জন্য। এ হেন বর়ডকর পরিবারের ছেলের সাফল্যে তাই গর্বিত গোটা গ্রামই। বছর বাহান্নর ভিক্টর দান্তে বললেন, ‘‘আমাদের কাছে এর অনুভূতিই আলাদা। ’’
বাবার মতো ডাক্তারি পড়েছেন লিও। ২০০৪ সালে প্রত্যক্ষ ভাবে রাজনীতিতে পদার্পণ। এর আগেও দেশের স্বাস্থ্য আর সামাজিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্বভার সামলেছেন। গত মাসে ইস্তফা দেন প্রধানমন্ত্রী এন্ডা কেনি। সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, এই জয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত।
তবে কাল যখন লিও-র নাম ঘোষিত হয়, সারা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমের নজর ছিল তাঁর সমকামিতা নিয়েই। তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার গৌণ হয়ে গিয়েছে অনেক সাংবাদিকের কাছেই। ২০১৫ সালে গণভোটের মাধ্যমে সমকামী বিয়ে বৈধতা পায় আয়ারল্যান্ডে। এত রক্ষণশীল দেশে এই জয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে বড় ধাপ বলে মনে করেন অনেকে। ওই বছরই নিজের সমকামিতার কথা প্রকাশ্যে এনেছিলেন লিও। তাঁর বাবা খোলা মনে মেনে নেন ছেলের সিদ্ধান্ত। আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা অবশ্য সেই গোঁড়ামি কাটিয়ে লিও-র রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়েই খবর করেছে। লিও এক দিকে দেশের প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী। অন্য দিকে, এই প্রথম কোনও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মুখ দেশের নেতা হিসেবে নির্বাচিত হলেন। আয়ারল্যান্ডকে তিনি কত দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন, তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে বিরোধীদের। তবে কেনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে লিও-র প্রতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy