কাবুলে অপহৃত জুডিথ ডিসুজাকে ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ চাইল তাঁর পরিবার।
শনিবার বিকেলে জুডিথের দাদা জেরম টুইট করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। লিখেছেন, ‘‘৪৮ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। জুডিথের খোঁজ নেই। এ বার আপনার হস্তক্ষেপ চাইছি।’’
কাবুলে কর্মরত জুডিথকে অপহরণ করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার রাতে সেখানকার দূতাবাস মারফত খবর আসে কলকাতার সিআইটি রোডে তাঁর পরিবারের কাছে। কাবুলের তৈমানিতে জুডিথের অপহরণের খবর বেঙ্গালুরুতে বসে পান জেরম। এ দিন সকালেই কলকাতায় চলে এসেছেন তিনি। জেরম বলেন, ‘‘মা-বাবার অবস্থা এমন যে, কারও সঙ্গে কথাই বলতে চাইছেন না। মা কেবল ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছেন। বলছেন, জুডিথ যেন সুস্থ শরীরে বাড়ি ফিরে আসে।’’ তিনি জানান, বাড়িতে আসছেন উদ্বিগ্ন পরিজনেরা। কিন্তু যাঁর জন্য এই উদ্বেগ, তাঁর তো খবর নেই।’’
কোনও খবর, কোনও সূত্রই কি মেলেনি? বাড়ির কোলাপসিবল গেটে তালা। ও পাশে দাঁড়িয়ে জেরম জানান, বিদেশ মন্ত্রক থেকে নতুন কোনও খবর মেলেনি। তবে তাঁরা মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। মুক্তিপণ চেয়ে কোনও ফোন পেয়েছেন? জেরম বলেন, ‘‘এই ধরনের কোনও ফোন পাইনি। এখন আমরা কেবল অসীম ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি।’’
বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্রের খবর, তৈমানিতে বিদেশি অপহরণ একটা সময় খুব বেড়েছিল। ২০১৪ সালে কাবুল পুলিশ অভিযান চালিয়ে জঙ্গিদের দুই চাঁই হাবিব ইস্তালিক এবং রইস খুদাইদাদকে নিকেশ করার পরে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়। কিন্তু গত তিন মাসে তৈমানি নতুন করে অশান্ত হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের ওই সূত্রটি জানান, জুডিথকে যেখান থেকে অপহরণ করা হয়েছে, সেই কাল্লা ই কুতুল্লা রোডে গত মাসেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের গাড়িতে হামলা হয়। যদিও সে বার কিছু হয়নি।
জুড়িথদের সিআইটি রোডের ফ্ল্যাটের বাইরের সিঁড়িতে সকাল থেকেই ভিড় সাংবাদিকদের। বাড়ির ভিতরে-বাইরে সকলেই জুডিথের খবরের প্রত্যাশী। এ দিন তাঁদের হাতে হাতে টাইপ করা কাগজ ধরিয়ে দেন জেরম। কাগজে লেখা, ‘‘সাংবাদিক বন্ধুরা, জুডিথের ব্যাপারে এখনও নতুন কোনও খবর নেই। আমরা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছি। আপনারাও যে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন, তা জেনে ধন্যবাদ জানাচ্ছি— ডিসুজা পরিবার। ১১ জুন, ২০১৬।’’ বোনের খবর পেলেই টুইট করবেন বলে সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেন তিনি।
জুডিথের জন্য ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে শহরের। তাঁকে অপহরণের প্রতিবাদ করে ও সুস্থ শরীরে তাঁর ফিরে আসার কামনায় এ দিন সন্ধ্যায় পার্ক স্ট্রিটের অ্যালেন পার্কে ডিসুজা পরিবারের ঘনিষ্ঠ জনেদের সঙ্গে মোমবাতি মিছিলে যোগ দেন অনেকেই। এ দিন সন্ধ্যায় রাজ্য বিজেপির পক্ষে তিন জনের এক প্রতিনিধি দল ডিসুজা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন।